ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু জ্বর সেরে যাওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা বিপদজ্জনক: বিএসএমএমইউ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
ডেঙ্গু জ্বর সেরে যাওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা বিপদজ্জনক: বিএসএমএমইউ

ঢাকা: ডেঙ্গু জ্বর সেরে যাওয়ার পর প্রথম তিনদিন বিপজ্জনক সময় বলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক সেমিনারে জানানো হয়েছে।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক মিলনায়তনে ‘ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট ডিলেমা’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বিএসএমএমইউয়ের ভাইরোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেসা ‘ডাইনামেকিস অব ডেঙ্গু ভাইরাস ইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ডেঙ্গু ভ্যাকসিন আপডেটস, শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাহবুব মোতানাব্বি ‘ক্লিনিক্যাল প্রেজেন্টেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অব ডেঙ্গু: প্যাডিয়াট্রিক অ্যাসপেক্ট’ ও ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী ‘ম্যানেজমেন্ট অব ডেঙ্গু ইনফেকশন: টিপস অ্যান্ড ট্যাকটিস’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ করাই উত্তম। ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ডেঙ্গু, এডিস মশা নিধনে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, এনজিও কর্মী এবং রাজনৈতিক কর্মীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কর্মসূচি পালন করা উচিত।

সেমিনার জানানো হয়, ডেঙ্গু জ্বরের গুরুত্বপূর্ণ সময় যখন রোগীর জ্বর ছেড়ে যায়। জ্বর ছেড়ে যাবার পরবর্তী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা ডেঙ্গুরোগীর ক্রিটিক্যাল সময়। এটি ডেঙ্গু জ্বরের গুরুত্বপূর্ণ কারণ এ সময় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ডেঙ্গু জ্বরের বিপজ্জনক উপসর্গ হলো অনবরত বমি হওয়া, রক্তক্ষরণ হওয়া, তীব্র দুর্বলতা অনুভব করা, তীব্র পেট ব্যথা, ফুসফুসে পানি জমা, তীব্র শ্বাসকষ্ট। গর্ববতী মা, ক্যানসার রোগী, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে দ্রুত ভর্তি করতে হবে। ডেঙ্গুরোগীদের প্লাটিলেট ১০ হাজারের নিচে নামলেও রক্ত পরিসঞ্চালনের কোনো প্রয়োজন নেই, সঞ্চালন করলে রক্ত (হোল ব্লাড) সঞ্চালন করাই শ্রেয়, প্লাটিলেট নয়।

সেমিনার থেকে আরও বলা হয়, ডেঙ্গু জ্বরের রোগীর রক্তচাপ কমে গেলে, রেফার করা ঠিক নয়। ডেঙ্গু শক ৪-৬ ঘণ্টার মধ্যে ম্যানেজ করতে হয়। রক্তচাপ কমের রোগীকে রেফার করলে পথেই রোগী খারাপ হতে পারে। সুতরাং ডেঙ্গু শকের রোগীকে রেফার না করে ওই হাসপাতালেই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।  

‘ডেঙ্গু জ্বরে আলাদা করে ডাব, পেঁপে পাতা, পেঁপে জুস, ড্রাগন ফল বেদানা ইত্যাদি খাওয়ার আলাদা কোনো প্রয়োজন নাই। ডেঙ্গুরোগী ব্যবস্থাপনায় অনেক বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন নেই। সিবিসি টেস্টই যথেষ্ট। সিবিসি টেস্টের মধ্যে ডব্লিউবিসি নিপ কাউন্ট এবং হেমাটোক্রিট টেস্ট কাউন্ট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের প্রতি বেশি যত্ন শীল হতে হয়। কারণ শিশুদের শরীরে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা স্পষ্ট করে বলতে পারে না। ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের বাইরে থেকে স্বাভাবিক মনে হলেও যেকোনো সময় শিশুরা ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে চলে যেতে পারে। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের যথাযথ মনিটরিং করতে হবে। যাতে কোনো সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থাপনা করা যায়। ডেঙ্গু ভ্যাকসিন তিন ধরনের আছে। এটি ভ্রমণকারীদের জন্য অনুমোদিত। জনসাধারণের জন্য ভ্যাকসিন ব্যবহারের পূর্বে আর গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউয়ের উপ-উপাচার্য (অ্যাকাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রেসপিরিটোরি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সম্প্রীতি ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
আরকেআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।