ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঈদ আনন্দ কোরবানি দিলো পুলিশ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৫
নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঈদ আনন্দ কোরবানি দিলো পুলিশ! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: পবিত্র ঈদ-উল আজহা বা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সাধারণ মানুষের বিশেষ নিরাপত্তায় বাংলাদেশ পুলিশের ৮০ শতাংশ সদস্য নিজেদের ঈদের আনন্দ কোরবানি দিয়েছেন।

সংঘাত প্রতিরোধ, মানুষের দুর্দশা লাঘবেই কেটেছে তাদের ঈদ।

খবর ছিল, ঈদের নানা ইস্যু নিয়ে দেশের কয়েকটি গ্রামে সংঘাত হবে। কিন্তু পুলিশের নজরদারিতে সেটা হয়নি। সারাদেশে এ ধরনের অন্তত ১১টি স্থানে হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ। এড়িয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা।

ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত, রাস্তা-ঘাট, ঈদগাহ, ঘর-বাড়ি, ব্যাংক-বিমা আর বিনোদন কেন্দ্রের নিশ্চয়তা দিতেই সার্বক্ষণিক ব্যস্ত থেকেছে পুলিশ। পুলিশ সদর দফতর সূত্র অনুযায়ী, সাধারণ মানুষের আনন্দ নিশ্চিত করতেই কোরবানির ঈদে ঘরে ফেরেননি সোয়া লাখ পুলিশ সদস্য।

মানুষের নিরাপদ চলাচল এবং ঈদ উদযাপনে যথাযথ ভূমিকা রাখার জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভারপ্রাপ্ত আইজিপিকে পাঠানো এক বার্তায় এমন ধন্যবাদ জানানো হয়।

ঈদে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমান বলেছেন, মানুষের কষ্ট লাঘব করে মুখে হাসি ফোটানোর চেয়ে বড় ঈদ আর নেই। মানুষের আনন্দ দেখে আমরা নিজেদের স্বজনহীন ঈদ কাটানোর ব্যথা ভুলে যাই।

পুলিশ সদর দফতরের এমঅ্যান্ডপিআর শাখার এআইজি নজরুল ইসলাম বলেছেন, ঈদের আগের রাত পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটেছেন নাড়ির টানে বাড়ির পানে। প্রিয়জনের সঙ্গে মিলিত হবার আনন্দে সবাই থেকেছেন বিভোর। ব্যতিক্রম ছিল পুলিশ। দিন-রাত রাস্তা, রেল, নৌ-পথ, বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মানুষের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করেছেন তারা।

ঈদের তিনদিনে প্রায় দেড় কোটি মানুষ ঢাকা এবং আশপাশ থেকে চলাফেরা করেছেন সারাদেশে। রাস্তাঘাট, যানবাহনের সীমাবদ্ধতা নিরসনে পুলিশ থেকেছে নিরলস। কনস্টেবল থেকে শুরু করে পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও রাস্তায় নেমেছেন যাত্রী চলাচল নির্বিঘ্ন করতে। দায়িত্ব পালন করেছেন ভোররাত পর্যন্ত। আবার ঈদের সকালেই ঈদগাহে মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিফরম পরে বেরিয়ে গেছেন তারা।

তিনি আরো বলেন, ঈদে বিশেষভাবে নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে আগেই গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করেছিলো পুলিশ। কোনো ঈদগাহ বা মসজিদে নামাজ বা অন্য কোনো ইস্যু নিয়ে কারো মধ্যে কোনো সমস্যা আছে কি? আগের বছরগুলোতে কোনো গ্রাম বা মহল্লায় কোনো সমস্যা হয়েছিল কি? এসব প্রেক্ষিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছিলো।

পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম আরো জানান, কোরবানির পশুর হাটে ছিনতাই, চাঁদাবাজি রোধ, অজ্ঞান পার্টি, মলমপার্টিকে প্রতিহত করতে পুলিশের তৎপরতা চোখ এড়ায়নি কারো। পুলিশের বাড়তি তৎপরতায় ওই দুস্কৃতকারীরা ধরা পড়েছে।

এ বাড়তি চাপ নিতে নিজের ঘরে ফিরতে পারেননি পুলিশের ৮০ শতাংশ সদস্য। এক লাখ ছাপান্ন হাজার সদস্যের মধ্যে সোয়া লাখই থেকেছেন কর্মক্ষেত্রে। ব্যারাক এবং অস্থায়ী আবাসেই কেটেছে তাদের ঈদ। বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে থেকেছেন অনেক দূরে।

ঈদের ছুটি শেষে আবার মানুষের কর্মস্থলে ফেরার পথ নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন রাখতে বাড়তি দায়িত্ব পালনের জন্য সকল পুলিশ সদস্যের প্রতি আহবান জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মোখলেছুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৫
এনএইচএফ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ