রাজশাহী: বছরে একবার লাগলেও প্রায় প্রতিবারই কিনতে হয় পশু জবেহ করার বিভিন্ন উপকরণ। ছুরি, চাপ্পর, দা, বটি, গাছের গুঁড়ি ছাড়া কী আর গরুর মাংস কাটা যায়।
রাজশাহী মহানগরীর শালবাগান এলাকায় কাঠের গুঁড়ি আর ছুরি-চাপ্পর কিনতে এসে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন আসাম কালোনি এলাকার আফতাব হোসেন। কেবল আফতাবই নন পশু কোরবানিকে সামনে রেখে মহানগরীর এমন অনেক মানুষই বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভিড় করছেন ফুটপাতের ছুরি-চাপ্পর ও গাছের গুঁড়ির দোকানে।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঈদ। নামাজ শেষে ব্যস্ততার শেষ থাকে না। তাই কেনাকাটার ঝামেলা বৃহস্পতিবারই সেরে রাখছেন সবাই। কোরবানির পশু জবেহ করা ও মাংস কাটতে প্রয়োজন এসবের। তাই মহানগরীর শালবাগান ছাড়াও, রেলস্টেশন বাজার, রেলগেট, মাস্টারপাড়া, বহরমপুর বাইপাস, নওদাপাড়া, কোর্ট এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গার ফুটপাতে বসেছে কোরবানির কাজে লাগা এসব পণ্যের দোকান।
কোরবানির মাংস কাটার জন্য বর্তমানে এসব দোকানে বিভিন্ন দাম ও আকারের কাঠের গুঁড়ি কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ছোট সাইজের কাঠের গুঁড়ি পাওয়া যাচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। আর মাঝারি সাইজের ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। এছাড়া বড় সাইজের কাঠের গুঁড়ি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মহানগরীর শালবাগান বাজার এলাকায় কাঠের গুঁড়ি ব্যবসায়ী বাবু বাংলানিউজকে জানান, তিনি মূলত অন্য কাজ করেন। ঈদ মৌসুম বলে স’মিল থেকে গাছের গুঁড়ি কেটে নিয়ে এসে ফুটপাতে বসে ব্যবসা করছেন। বছরের এ সময়টা লাভ করার জন্য গুঁড়ির ব্যবসা মন্দ নয় বলে জানান তিনি।
এদিকে, কোরবানিকে সামনে রেখে আজও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামার শিল্পীরা। কামারশালা থেকে প্রতিনিয়ত ভেসে আসছে হ্যামার, হাতুরি ও যোগানের টুং-টাং শব্দ। হরদমই চলছে হপার। শেষ মুহূর্তে দা, বটি, ছুরি তৈরির অর্ডার নেওয়া সামগ্রী ডেলিভারি নিয়ে যেন দম ফেরার ফুরসত নেই কারও। চাঁদ রাত, তাই ভোর পর্যন্ত কাজ চলবে। তারপর সপ্তাহের টানা ছুটি বলে জানালেন কারিগররা।
মহানগরীর মাস্টারপাড়া এলাকা কামার শিল্পী উত্তম কুমার বাংলানিউজকে জানান, বছরের এই এক মাসই তাদের কাজ বেশি থাকে। এর পরে আবার পরের বছরের অপেক্ষা। অন্য সময় কাজ-কর্ম চলে ঠিকই, কিন্তু চাপ থাকে না। কোরবানির পশু জবেহ ও মাংস টুকরো করতে ধারালো অস্ত্রই একমাত্র ভরসা। তাই কামারশালার কারিগরদের চাঁদ রাতের শেষ পর্যন্ত কাজ করতে হয় বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, আরও দশদিন আগে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কেবল অর্ডার নেওয়া চাপাতি, দা, বটি, ছুরি-চাকু তৈরির পর শান দিয়ে ডেলিভারি দেওয়া হচ্ছে। সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকার মধ্যেই এসব প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান উত্তম।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫
এসএস/এএসআর