ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জলমগ্ন দক্ষিণখানে মধ্যরাতের জনদুর্ভোগ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৯ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৫
জলমগ্ন দক্ষিণখানে মধ্যরাতের জনদুর্ভোগ ছবি: জি এম মুজিবুর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: রাজধানী ঢাকার হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের খুব কাছের এলাকা দক্ষিণখান। অথচ শুক্রবারের (১৫ মে) বৃষ্টিতে হাঁটু পানিতে তলিয়ে ছিলো ওই এলাকার বেশিরভাগ রাস্তা।



কসাই বাজার এলাকার কয়েকটি বাড়ি ও মার্কেটের নিচতলায় পর্যন্ত ঢুকে পড়েছে বৃষ্টির পানি। হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে বেসরকারি একটি ব্যাংকের এটিএম বুথও।
 
শুক্রবার (১৫ মে) দিনগত মধ্যরাতে বাংলানিউজের স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট জিএম মুজিবুর রহমানকে নিয়ে জলমগ্ন দক্ষিণখান এলাকার চিত্র দেখতে বের হন এই প্রতিবেদক। উদ্দেশ্যে এ এলাকার জলাবদ্ধতার চিত্র বাংলানিউজের পাঠকের সামনে তুলে ধরা।

রেললাইন পাড় হয়ে কসাইবাজারে ঢুকতেই হাঁটু পরিমাণ পানি। গাড়ি থেকে নেমে ক্যামেরায় ছবি তুলতে গেলে একটি পাজেরো জিপ থেকে হুট করে নেমে বাধা দিতে দিতে কিছু যুবক বললো, এই তোরা কে? ছবি তুললি কেন?

জিএম মুজিবুর যেই বললো, আমরা সাংবাদিক। আপনাদের দুর্ভোগের ছবি তুলবো। তারা দ্রুত গতিতে আবার গাড়িতে উঠে বিমানবন্দরের দিকে সটকে পরলো।
 
এরপর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় নিয়ে এগিয়ে কসাইবাজারের শহীদ লতিফ রোডের মজিদ ভবনের দিকে যেতে থাকি। রাত তখন দেড়টা পেরিয়ে। কয়েকজন দোকানদার তখনও জেগে আছেন। মজিদ ভবনের দারোয়ান গেটে তালা দিয়ে একটি ভ্যানের ওপর বসে পাহারা দিচ্ছিলেন।

সামনের রাস্তায় এদিক সেদিক ঘোরাফেরা করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মাহমুদুল আলমসহ কয়েকজন। সাংবাদিক শুনে জানালেন দুর্ভোগের কথা। মাহমুদুল আলম জানালেন, ১০টির বেশি বাড়ির নিচতলায় পানি উঠেছে। একটি খাটের উপর বউ-বাচ্চাকে রেখে তিনি বাইরে ঘোরাফেরা করছেন।
 
কিছুক্ষণ পর এগিয়ে এলেন মজিদ ভবনের দারোয়ান। অনেক অনুরোধের পর খুলে দিলেন ভবনের গেট। ভেতরে ঢুকে দেখা মিললো কয়েকজন নির্ঘুম দোকানির। তাদের একজন দেলোয়ার হোসেন। ৭/৮ বছর ধরে এ ভবনে কাপড়ের ব্যবসা করেন। জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের কথা জানিয়ে বললেন, প্রতিবছরই বৃষ্টিতে এমন কষ্ট পোহাতে হয় তাদের। হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায় এ ভবনের নিচতলা।
 
তারপাশে মমতা ক্লথ স্টোরের দেখা মিললো এক দর্জির। যিনি অথই পানিতে দোকান খোলা রেখে সেলাই মেশিনের ওপর মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন।     
 
৩৫টি দোকানের এ মার্কেটে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের এটিএম বুথের কক্ষটিতেও পানি ঢুকে পড়েছে। বুথের দারোয়ান তাহের জানালেন, পানি ঢোকায় এ বুথের কার্যক্রম বিকেল থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছু সরঞ্জামাদি উপরে তুলে রেখেছেন তিনি। পানি নেমে যাওয়ার পর বুথের কার্যক্রম সচল করা হবে।
 
দুর্ভোগ নিয়ে মূল সড়কের দুই পাশের অনেক দোকানিই জেগে আছেন। কেউ দোকান খোলা রেখে আবার কেউ বা বন্ধ রেখেই দাঁড়িয়ে আছেন। তাদের ভয় টানা বৃষ্টি হলে পানি বাড়তে পারে। আর এতে নষ্ট হবে দোকানের মালামাল। দোকানিদের মতে, কসাই বাজার থেকে কেসি মডেল স্কুল পর্যন্ত দীর্ঘদিনের এ জলাবদ্ধতা দূর করতে কোনো জনপ্রতিনিধিই এগিয়ে আসেননি।
 
তবে মাহমুদুল আলমের দাবি, স্থানীয় চেয়ারম্যান তোফাজ্জল সাহেব চেষ্টা করছেন এ সমস্যা সমাধানের।

এদিকে শুধু দক্ষিণখানই নয়, শুক্রবারের বৃষ্টিতে বাংলামোটর, ফার্মগেট, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর, আগাঁরগাও, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইল, মতিঝিল, মহাখালী, বাড্ডা, রামপুরা, বারিধারা ও গুলশানসহ রাজধানীর অনেক এলাকায়ই জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পরতে হয় নগরবাসীর।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৪৪০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৫
ইএস/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ