ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শান্তি, মানবতা ও মানুষের অধিকার চেয়ে বর্ষবরণ

এস এম আববাস ও ইলিয়াস সরকার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৫
শান্তি, মানবতা ও মানুষের অধিকার চেয়ে বর্ষবরণ ছবি: নাজমুল হাসান/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রমনার বটমূল থেকে: ‘হেরো গো অন্তরে অরূপসুন্দরে, নিখিল সংসারে’। বিশ্বসংসারে শান্তির আহ্বান জানিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ কথা আর সুরে নববর্ষের প্রথম প্রহর শুরু হয় রমনার বটমূলে।



‘ধ্বনিল আহ্বান মধুর গম্ভীর প্রভাত-অম্বর-মাঝে, দিকে দিগন্তরে ভুবনমন্দিরে শান্তিসঙ্গীত বাজে’ বিশ্বকবির এ আহ্বান রমনার বটমূল ছাড়িয়ে ধ্বনি তোলে উদ্যানের প্রতিটি কোনায়।

ছায়ানটের ‘১৪২২’ বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ‘শান্তি, মানবতা ও মানুষের অধিকার’। এবার ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনের বর্ষবরণ শুরু হয় মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টায়। ছায়ানটের এ প্রভাতী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নববর্ষকে বরণ করতে সকাল থেকেই ঢল নামে তরুণ-তরুণী, নারী-শিশুসহ সর্বস্তরের জনতার। ঐতিহ্যবাহী এ অনুষ্ঠ‍ানে অংশ নিতে ভিড় জমায় অনেক বিদেশি দর্শনার্থীও।

সূচনা পর্বে পরমেশ্বরী রাগে আলাপ-জোড় সেতারবাদন মুগ্ধ করে দর্শকদের। একে একে চলতে থাকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, সাধক লালন ফকির, কবি অতুল প্রসাদ সেন, সলিল চৌধুরী, সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, সাধন গুহ, রশিদ উদ্দিন, কুটি মনসুর এবং আব্দুল লতিফের গান এবং কবিতা।

অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা অংশ নেন বর্ষবরণের এককগানে। এ শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক ও লাইসা আহমদ লিসা, লোকসংগীত শিল্পী চন্দনা মজুমদার, নজরুলসংগীত শিল্পী খায়রুল আলম শাকিল, সংগীত শিল্পী মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।

পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ছায়ানটের বড়দের এবং ছোটদের দল ধারাবাহিকভাবে সংগীত পরিবেশন করে। ফাঁকে ফাঁকে চলে একক গান।

কবিগুরুর সূচনা সংগীত ‘কলুষ কল্মষ বিরোধ বিদ্বেষ হউক নির্মল, হউক নিঃশেষ-, চিত্তে হোক যত বিঘ্ন অপগত নিত্য কল্যাণকাজে’ মুগ্ধ করে শ্রোতা-দর্শকদের।

জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের ‘সঙ্ঘ শরণ তীর্থযাত্রা- পথে এসো মোরা যাই/সঙ্ঘ বাঁধিয়া চলিলে অভয় সে পথে মৃত্যু নাই। ’

রমনার বটমূলে বৈশাখের প্রথম প্রত্যূষে বাংলা নববর্ষের আবাহন ছায়ানটের মূল অনুষ্ঠান। ১৯৬৭ সালের মধ্য এপ্রিলে প্রথম অনুষ্ঠান শুরু হয় এ প্রতিষ্ঠানটির। এরপর ১৯৭১ সালে বাঙালির মহান মুক্তিযুদ্ধের বছর ছাড়া প্রতিটি পহেলা বৈশাখেই নতুন বছরকে স্বাগত জানায় ছায়ানট। সুরের মুর্চ্ছনা আর কথামালায় নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয় প্রতিবছর।

ছায়ানটের ওয়েবসাইটে সরাসরি দেখা যায়এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। এছাড়া, অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলও সরাসরি সম্প্রচার করে ছায়ানটের অনুষ্ঠানমালা।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে বৈশাখের আহ্বান ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ সংগীত পরিবেশন করে বড় ও ছোটদের দল। সকালে সেতারবাদন ও কবিগুরুর গান দিয়ে ছায়ানটের যে বর্ষবরণ শুরু হয় তা শেষ হয় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে।

অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার আগে ছায়ানটের কর্ণধার সনজীদা খাতুন শুভেচ্ছা ব্ক্তব্য রখেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৫
এসএমএ/এমইএস/এইচএ/

** ‘শান্তি, মানবতা ও মানুষের অধিকার’ চেয়ে ছায়ানটের বর্ষবরণ
** নতুনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি রমনার বটমূলে
** মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ