নারায়ণগঞ্জ: ‘সারারাত অনেকেই ঠিকমত ঘুমাতে পারেননি। বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) সকাল ৮টায় চাঁদপুরের মতলবে সোলায়মান শাহ ওরফে ‘ল্যাংটা বাবার মাজার’র ঘাট থেকে ট্রলারটি যখন ছাড়ে, তখন অনেকেই ঘুমিয়ে ছিলেন।
ট্রলারটি নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলার আলীগঞ্জের খেয়াঘাট এলাকায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবাহী বাল্কহেড (বালুবাহী যান) ধাক্কা দেয়। আর মুহূর্তের মধ্যেই ট্রলারটি ডুবে ঘুমের মধ্যেই অনেকেই চলে গেলেন চিরনিদ্রায়।
বাংলানিউজকে এসব কথা বলতেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন ওই ট্রলার থেকে বেঁচে আসা প্রত্যক্ষদর্শী সাদেক মিয়া।
তিনি ঢাকার লালবাগ এলাকাতে একটি জুতার দোকানের কর্মচারী। দুইদিন আগে তারা ট্রলারে করে গিয়েছিলেন মতলবের (ল্যাংটার বাবার) মেলাতে।
সাদেক বলেন, ঘটনার সময় আমরা কেউ প্রস্তুত ছিলাম না। বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি ডুবে যায়।
তিনি জানান, যাত্রীরা হয়তো না ঘুমালে এ ঘটনা ঘটতো না। ট্রলারডুবির সঙ্গে সঙ্গে ঘুমন্ত অবস্থায় যাত্রীরা পানিতে তলিয়ে যান। আর সে কারণেই তারা তীরে উঠতে পারেননি।
ট্রলারডুবির ঘটনার অপর প্রত্যক্ষদর্শী কালাম আহমেদ সবুর কাজ করেন পাগলা খেয়াঘাট এলাকায়। তিনি খেয়াঘাটের লোড আনলোড শ্রমিক। একটি ট্রলার থেকে পাথর আনলোডের সময় চোখের সামনেই ঘটে ওই ট্রলার ডুবি।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, হঠাৎ করেই একটি বাল্কহেড ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। খুব দ্রুত ট্রলারটি ডুবে যাওয়ার কারণে অনেকেই তীরে উঠতে পারেননি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলার আলীগঞ্জের খেয়াঘাট সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ট্রলার ডুবির ঘটনায় আট জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুই নারী।
নিহত ও নিখোঁজ সবার বাড়ি ঢাকার মিরপুর ও লালবাগ এলাকায়।
‘ল্যাংটার বাবার মেলা’ থেকে ট্রলারে করে এসব লোকজন ঢাকার সদরঘাটে ফিরছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৫