সিনেট ভবন থেকে: কৃষিপ্রধান দেশের কৃষিকে তুলে ধরতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কৃষি-সাংবাদিকতা নামে পৃথক বিষয় খোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ‘দরিদ্র-বান্ধব কৃষি: গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা একথা বলেছেন।
কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প ক্যাটালিস্টের সহযোগিতায় এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজক গণমাধ্যম বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা সমষ্টি।
সাংবাদিকদের কৃষির ওপর যথাযথ জ্ঞান না থাকায় তারা মূল বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে বক্তব্যনির্ভর সংবাদ তৈরি করেন বলে মন্তব্য করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সহিদুর রশিদ ভূঁইয়া।
বৃহত্তর আঙ্গিকে কৃষি সাংবাদিকতার পঠন-পাঠনের ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি সাংবাদিকতার ওপর দু’টি কোর্স আছে জানিয়ে তিনি সেখানে কৃষি সাংবাদিকতা নিয়ে পৃথক একটি বিষয় খোলা যায় কি না- তা নিয়ে উদ্যোগ নেবেন বলে জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান হেলেনা ফেরদৌসী বলেন, কৃষিসহ উন্নয়ন সাংবাদিকতার ছাত্ররা গণমাধ্যমে চাকরি পাচ্ছেন কি না, বা অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারছেন কি না- তা দেখতে হবে।
‘রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে কৃষিপণ্য নষ্ট হয়ে যায়’ বলে উল্লেখ করে এর বিকল্প কি হতে পারে তা গণমাধ্যম কৃষকের কাছে ছড়িয়ে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কমিউনিটি রেডিওকে কাজে লাগিয়ে নিজস্ব ভাষায় বোধগম্য করে কৃষকের কাছে তথ্য পৌঁছানোর আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া গণমাধ্যমে অ্যাগ্রোটেইনমেন্টের মাধ্যমে কৃষিতথ্য বেশি বেশি প্রচার করা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক বলেন, শহুরে উচ্চবিত্তের চাহিদার বিপরীতে কৃষি সাংবাদিকতা চ্যালেঞ্জিং বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দু-একটি টিভি চ্যানেল কৃষি বিষয়ের ওপর ভালো অনুষ্ঠান করলেও অধিকাংশই ভালো করছে না।
তিনি বলেন, আমাদের ঠিক করতে হবে টার্গেট অডিয়েন্স কারা, সে অনুযায়ী অনুষ্ঠান তৈরি করে কৃষকদের কাছে কৃষিজ্ঞান পৌঁছাতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স খুলে সেটার প্রয়োগিক ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। কৃষি ইন্ডাস্ট্রিতে কৃষি কোর্সের বাস্তব প্রয়োগ থাকতে হবে বলেও মনে করেন এই অধ্যাপক।
কৃষি সাংবাদিকতার জন্য শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেন বাংলানিউজের হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন। তিনি বলেন, ঘটনার গভীরে গিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হলে তা প্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে কৃষি সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করার সীমাবদ্ধতা থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্র সুন্দর-স্বাভাবিকভাবে চললে কৃষি সংবাদগুলোকেও গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
বিটিভির প্রধান প্রতিবেদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইউজিসি’র অনুমোদন নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি সাংবাদিকতার ওপর কোর্স খোলা যেতে পারে।
গোলটেবিল আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন সাংবাদিকতার অধ্যাপক সাবরিনা সুলতানা চৌধুরী।
সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজসহ গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব এবং সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত আছেন।
** কৃষি বিজ্ঞানের বিষয়গুলো জনপ্রিয় ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে
** মূলধারার সংবাদে কৃষিকে প্রাধান্য দিতে হবে
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৪