ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ফুটবল

কাতার বিশ্বকাপ: মাতালদের নেওয়া হবে বিশেষ জোনে

স্পোর্টস ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
কাতার বিশ্বকাপ: মাতালদের নেওয়া হবে বিশেষ জোনে

মধ্যপ্রাচ্যের রক্ষণশীল দেশ কাতারে বসছে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মুসলিম-প্রধান দেশটির সংস্কৃতির আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

এমনকি ফুটবল বিশ্বকাপের মতো বড় আসরের জন্যও নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে আপোষ করতে রাজি নয় দেশটি।  

পশ্চিমা দেশগুলোতে খেলা দেখার মাঝখানে বা পরে অনেক সমর্থককে মদ পান করতে দেখা যায়। কিন্তু মদের ব্যাপারে অনেকটা কড়াকড়ি নিয়মের ভেতর চলে কাতার। আইনিভাবে সেদেশে মদপান নিষিদ্ধ। ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রিয় দলের খেলা দেখতে ও সমর্থন দিতে যারা কাতারে যাবেন তাদের মানতে হবে বেশকিছু কঠোর নিয়ম।  

তবে ১৯ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া আসরে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিতে যাচ্ছে আয়োজক দেশটি। এর মধ্যে আছে মদ্যপায়ীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় মদ পানের ব্যবস্থা। ফ্যান জোনে বা নির্দিষ্ট বারে বসে মদপান করতে পারবেন মদ্যপায়ীরা। কিন্তু মাঠে বসে বা উন্মুক্ত স্থানে মদপান করা নিষিদ্ধ থাকছে। তাদের মদের নেশা কাটিয়ে উঠার জন্য আলাদা জোনের ব্যবস্থা করেছে কাতার বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটি। কারণ উন্মুক্ত স্থানে মাতাল অবস্থায় চলাফেরার মতো দৃশ্য সেখানে একেবারেই অপরিচিত।

কাতারের রাজধানী দোহায় 'স্কাই নিউজ'- কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপ আয়োজক কমিটির প্রধান আল খাতের বলেন, ‘যদি কেউ অতি মাত্রায় মদ পান করে ফেলেন, তাহলে তাদের নেশা কাটানোর জন্য আলাদা জায়গা রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এটা এমন একটি জায়গা যেখানে তারা কারো জন্য সমস্যার কারণ হবেন না; বরং নিজেদের নিরাপদ রাখতে পারেন। ’

১২ বছর আগে বিশ্বকাপের আয়োজকস্বত্ব পাওয়ার পর থেকেই নানা রকম সমালোচনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে কাতারকে। বেশকিছু গণমাধ্যমের দাবি, ফিফাকে টাকা দিয়ে আয়োজক স্বত্ব কিনে নিয়েছিল কাতার। তবে আল খাতের মনে করেন অন্যায়ভাবে তাদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করা হচ্ছে, ‘আমরা নিজেদের উপর একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি এবং তা নিয়েই কাজ করছি। অন্যদের উদ্দেশ্য নিয়ে আমি মাথা ঘামাতে চাই না। তাদের মন ও আত্মার ভেতর প্রবেশ করছি না আমি। ’

কাতারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে প্রবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের। তাদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক না দেওয়া এবং কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বহু শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছে। পরে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে শ্রম আইনে কিছু পরিবর্তন আনে কাতার সরকার। ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে ফান্ডও গঠন করা হয়। কিন্তু তাদের গৃহীত ব্যবস্থা যথেষ্ট নয় বলে দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

অভিযোগের জবাবে আল খাতের বলেন, 'শ্রমিক কল্যাণ নিয়ে অনেকেই কথা বলছে। কিন্তু তারা এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ নন। তারা যা বলছে সে সম্পর্কে তাদের স্বচ্ছ ধারণা নেই। আমার মতে, কাতারে মাঠ পর্যায়ে কি হচ্ছে তা বুঝতে হলে তাদের আরও পড়াশোনা করতে হবে এ ব্যাপারে। এটা বিশেষজ্ঞদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। আমরা বরং ফুটবলের দিকে নজর দিচ্ছি। '

বিশ্বকাপে সমকামীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আল খাতার জানান, সমকামী-বিরোধী আইনে কোনো পরিবর্তন আনা হবে না। তবে সমকামীদের বৈষম্যের শিকার হতে হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি সমকামী সমর্থকরা হাত ধরে চলাফেরাও করতে পারবেন বলে নিশ্চিত করেছেন আল খাতের।

তিনি বলেন, 'আমরা শুধু সবাইকে আমাদের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। দিনশেষে, আপনি যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যের কোনো ক্ষতি না করছেন, জনগণের সম্পদ বিনষ্ট না করছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যের ক্ষতি হয় এমন আচরণ না করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে স্বাগত জানানো হবে এবং আপনার কোনো দুশ্চিন্তা করতে হবে না। '

তবে আল খাতের জানিয়ে দিয়েছেন, বিশ্বকাপে কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই সঙ্গে তিনি বিশ্বকাপের টিকিট বিক্রির ব্যাপারেও তথ্য জানিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের ৯৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
এমএইচএম 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।