ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফুটবল

পিএসজিকে বিদায় করে প্রথমবার ফাইনালে ম্যানসিটি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৪ ঘণ্টা, মে ৫, ২০২১
পিএসজিকে বিদায় করে প্রথমবার ফাইনালে ম্যানসিটি সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে উঠলো ম্যানচেস্টার সিটি। প্রথম লেগে জয়ের পর এক পা দিয়েই রেখেছিল সিটিজেনরা, দ্বিতীয় লেগে এলো আরও দাপুটে জয়।

 

মঙ্গলবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে নিজেদের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ২-০ গোলে জিতেছে ম্যানসিটি। আগের দেখায় পিএসজিকে তাদের মাঠে ২-১ গোলে হারিয়েছিল তারা। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ ব্যবধানে জিতে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে সিটি।  

ইউরোপ সেরা আসরের এক মৌসুমে ১১টি ম্যাচ জেতার রেকর্ডও গড়েছে তারা। এই কীর্তি নেই আর কোনো দলের।

সেমির বাধা পেরোতে শুধু জয় পেলে চলত না পিএসজির। ফরাসি ক্লাবটিকে নির্দিষ্ট ব্যবধানের সমীকরণ মেলাতে হতো। কিন্তু কিলিয়ান এমবাপের অনুপস্থিতিতে তা পারেনি তারা। সিটির গোলমুখে নেইমাররা ১২টি শট নিলেও একটিও ছিল না লক্ষ্যে।  

অন্যদিকে, রক্ষণ জমাট রেখে খেলা স্বাগতিকদের ১২ শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। ম্যাচের আগে প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হয় ম্যানচেস্টারে। মাঠের সর্বত্র শিলা পড়ে থাকায় শুরুতে মানিয়ে নিতে কিছুটা অসুবিধা হয় খেলোয়াড়দের।

গত আসরের ফাইনালিস্ট পিএসজি প্রতিপক্ষের মাঠে শুরুতে ছিল উজ্জীবিত। বল দখলে রেখে আক্রমণাত্মক ফুটবলে সিটিকে চেপে ধরে তারা। সপ্তম মিনিটে তাদের পক্ষে পেনাল্টির বাঁশিও বাজান রেফারি। কিন্তু ভিএআরের সাহায্য নিলে দেখা যায়, বল আলেকসান্দার জিনচেঙ্কোর ঘাড়ে লেগেছিল। ফলে পরিবর্তিত হয় সিদ্ধান্ত।

একাদশ মিনিটে লক্ষ্যভেদ করেন সিটির মাহরেজ। পাল্টা আক্রমণে ডি-বক্সের ভেতর থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। মাঝমাঠের কিছুটা সামনে থেকে বল নিয়ে দৌড়ে ইউক্রেনের ডিফেন্ডার জিনচেঙ্কো খুঁজে নেন কেভিন ডি ব্রুইনকে। তার শট অতিথিদের অধিনায়ক মার্কুইনোস আটকে দিলেও পেয়ে যান মাহরেজ। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে পিএসজির গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে পরাস্ত করেন তিনি।

ছয় মিনিট পর সমতায় ফিরতে পারত প্যারিসিয়ানরা। কিন্তু হতাশায় পুড়তে হয় তাদের। আনহেল দি মারিয়ার হাওয়ায় ভাসানো বলে মার্কুইনোসের হেড ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। দুই মিনিট পর নিজেদের ভুলে গোল হজম করার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল সিটি। বার্নার্দো সিলভার কাছ থেকে বল কেড়ে নেন আর্জেন্টাইন উইঙ্গার দি মারিয়া। ডি-বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া শট চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে। অথচ গোলপোস্ট ছিল ফাঁকা।  

৩৬তম মিনিটে আন্দার হেরেরার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তাকে বলের যোগান দিয়েছিলেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড বেশ কয়েকবার প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ভীতি ছড়ালেও নিশ্চিত কোনো সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হন। সিটির দুই সেন্টার-ব্যাক রুবেন দিয়াস ও জন স্টোনস ছিলেন চীনের প্রাচীর হয়ে। প্রথমার্ধের শেষদিকে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। মাহরেজের ডান পায়ের কোণাকুণি শট নাভাস রুখে না দিলে ব্যবধান বাড়াতে পারত তারা।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা মাঠে গড়ানোর পরপরই ম্যাচের লাগাম মুঠোয় নেয় সিটি। ৫৪তম মিনিটে ফিল ফোডেনের জোরালো শট রুখে দিয়ে পিএসজিকে লড়াইয়ে রাখেন নাভাস। তবে কিছুক্ষণ পরই লড়াইয়ের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেন মাহরেজ। ৬৩তম মিনিটে ডি ব্রুইনের সঙ্গে বল আদান-প্রদান করে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন ফোডেন। এরপর বাঁ প্রান্ত থেকে ক্রস করেন তরুণ এই ইংলিশ মিডফিল্ডার। বাকিটা অনায়াসে সারেন আলজেরিয়ার ফরোয়ার্ড মাহরেজ।

এরপর উত্তেজনা ছড়ায় মাঠে। মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে দি মারিয়া ৬৯তম মিনিটে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন। সিটির অধিনায়ক ফার্নান্দিনহোর পায়ে অযথা আঘাত করেন তিনি। পিএসজির ঘুরে দাঁড়ানোর যে সম্ভাবনা নিভু নিভু করে জ্বলছিল, তা শেষ হয়ে যায় তখন। পরে আরেকটি ফাউলকে কেন্দ্র করে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতেও জড়ান দুদলের কয়েকজন।

সিটির জয়ের ব্যবধান আরো বড় হতে পারত। ৭৭তম মিনিটে ফোডেনের শটে নাভাস পরাস্ত হলেও বল বাধা পায় পোস্টে। তিন মিনিট পর তার আরেকটি প্রচেষ্টা রুখে দেন পিএসজির এই গোলরক্ষক। বাকি সময়ে আর কোনো গোল হয়নি। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে ফাইনালের টিকিট পাওয়ার উল্লাসে মাতোয়ারা হয় সিটি।

আগামী ২৯ মে ইস্তানবুলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল হবে। সেখানে গার্দিওলার সিটির প্রতিপক্ষ হবে রিয়াল মাদ্রিদ কিংবা চেলসি, যারা বুধবার রাতে পরস্পরের মোকাবেলা করবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৪ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০২১
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।