ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ফুটবল

আলিসনের ভুলে ম্যানসিটির কাছে লিভারপুলের বিশাল হার

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২১
আলিসনের ভুলে ম্যানসিটির কাছে লিভারপুলের বিশাল হার ছবি: সংগৃহীত

মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলকে রীতিমত উড়িয়ে দিল ম্যানচেস্টার সিটি। অন্যদিকে এই পরাজয়ে অলরেডদের শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্ন বড় ধরনের ধাক্কা খেলো।

ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের এই পরাজয়ে গোলরক্ষক আলিসনের রয়েছে সবচেয়ে বড় ভূমিকা।

রোববার (০৭ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে লিভারপুলের ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ড থেকে ৪-১ গোলের বড় জয় নিয়ে ফিরেছে ম্যানসিটি। এই নিয়ে লিগে টানা দশম ম্যাচে জয় পেল পেপ গার্দিওলার দল। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তাদের চতুর্দশ জয়। কোনো ইংলিশ ক্লাবের ক্ষেত্রে এটা একটা রেকর্ড। এর আগে টানা এতগুলো ম্যাচে জয় পেয়েছিল প্রেস্টন (১৮৯২ সালে শেষ) এবং আর্সেনাল (১৯৮৭ সালে শেষ)

অন্যদিকে শীর্ষ লিগ জেতার পরের মৌসুমে কোনো ইংলিশ ক্লাবের টানা তিন ম্যাচ হারার লজ্জার কীর্তি গড়লো লিভারপুল। এর আগে ১৯৫৬ সালের মার্চে এমন লজ্জায় ডুবেছিল চেলসি। শিরোপাধারী কোনো দলের ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের এই পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট খোয়ানোর রেকর্ডও এটা। গতবার এই সময়ে লিভারপুলের পয়েন্ট ছিল ৬৭, আর এবার তার চেয়ে ২৭ পয়েন্ট কম।

লিভারপুলের এই বিশাল হারের দায় অনেকটা ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা দলের মূল গোলরক্ষক আলিসনের ওপর বর্তায়। দুটি ভয়াবহ ভুল করে বসেছেন এই ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক, যার পূর্ণ ফায়দা তুলে নিয়েছে সিটি।  

শুরুতে অবশ্য দারুণ গোছালো আক্রমণ শানাচ্ছিল লিভারপুল। কিন্তু ফল আসছিল না। উল্টো স্রোতের বিপরীতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে যায় সিটি। নিজেদের বক্সে রহিম স্টার্লিংকে ফেলে দেন  ফ্যাবিনহো। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত জানান রেফারি। কিন্তু ইলকাই গুন্দোগানের নেওয়া শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে প্রতিশোধ নেন গুন্দোগান। অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ডকে পাশ কাটিয়ে ফোডেনকে খুঁজে নেন স্টার্লিং। তবে স্টার্লিংয়ের শট ফিরিয়ে দেন আলিসন। কিন্তু পেনাল্টি মিসের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া গুন্দোগান ফিরতি শটে বল জালে জড়িয়ে দেন।

৬৩তম মিনিটে সিটির ভুলে সমতায় ফেরে লিভারপুল। নিজেদের বক্সে মোহামেদ সালাহকে ফাউল করে বসেন দিয়াস। সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্পট কিকে বল জালে জড়িয়ে দেন মিশরীয় ফরোয়ার্ড। অ্যানফিল্ডে ঠিক ৪১০ মিনিট পর গোলের দেখা পেল লিভারপুল। ভাবা যায়!

সালাহ সমতা ফেরানোর ১০ মিনিট পরেই ফের এগিয়ে যায় সিটি। এবার কালপ্রিট গোলরক্ষক আলিসন নিজেই। ব্যাক থেকে বল পাস করেছিলেন তিনি। কিন্তু ফোডেন বাধা হয়ে দাঁড়ান। এরপর কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তিনি বল পাঠিয়ে দেন সুবিধাজনক স্থানে থাকা গুন্দোগানের দিকে। সঙ্গে সঙ্গে বল জালে জড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নেন জার্মান মিডফিল্ডার।

লিভারপুলের দুর্দশার এখানেই শেষ হয়। ৭৬তম মিনিটে ফের ভুল করে বসেন আলিসন। নিজের জায়গা থেকে বাইরে বল পাঠিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু বল চলে যায় বার্নান্দো সিলভার দিকে। প্রথমে বাইলাইনে পড়ে গেলেও নিজেকে সামলে সঙ্গে সঙ্গে বল ব্যাক পোস্টে ক্রস করেন আর চমৎকার এক হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন স্টার্লিং। এটি আবার কোচ গার্দিওলার অধীনে তার ১০০তম গোল। এর আগে এই কীর্তি ছিল শুধু লিওনেল মেসি (২১১) এবং সার্জিও আগুয়েরোর (১২০) দখলে।  

৮৩তম মিনিটে এসে সিটিকে চতুর্থ গোল ও লিভারপুলের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন ফোডেন। গ্যাব্রিয়েল জেসুসের পাস থেকে বল নিয়ে ডান দিক থেকে আচমকা ঢুকে পড়েন এই তরুণ স্ট্রাইকার। এরপর নিজের মার্কারকে বোকা বানিয়ে বুলেট গতির শটে টপ কর্নারে বল পাঠিয়ে দেন। লিভারপুলের আশার বাতিও নিভে যায় সঙ্গে সঙ্গে।

এই জয়ে শীর্ষে থাকা সিটিজেনদের শিরোপা স্বপ্ন আরও উজ্জ্বল হলো। ২২ ম্যাচে দলটির সংগ্রহ ৫০ পয়েন্ট, যা দুইয়ে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়ে ৫ পয়েন্ট বেশি। অন্যদিকে শীর্ষস্থান থেকে ১০ পয়েন্ট দূরে চলে যাওয়া লিভারপুলের শিরোপা ধরে রাখার আশা এখন দুরাশায় পরিণত হলো।

বাংলাদেশ সময়: ০১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২১
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।