বছরখানেক আগে জাতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ভিন্ন ভিন্ন ফরমেশনে দলকে খেলিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন চিলির হয়ে কোপা আমেরিকা জয়ী কোচ। তবে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে মাসচেরানোর সঙ্গে লুকাস বিগলিয়াকে খেলানোয় সাম্পাওলির রণকৌশল প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
মস্কোর ব্রনিৎসিতে অনুশীলনে ব্যাপক পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে। সাম্পাওলি মূল একাদশে ফুলব্যাকসহ তিন ডিফেন্ডার খেলানোর পরিকল্পনা করছেন। ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচে তাই আর্জেন্টাইন কোচের ফরমেশন হতে পারে তার পছন্দের ৩-৪-৩ ফরমেশন।
ডি মারিয়া, লুকাস বিগলিয়া, মার্কোস রোহো ও ম্যাক্সি মেজা প্রথম একাদশে জায়গা হারাতে পারেন। আর তা হলে সাম্পাওলির পরবর্তী একাদশে ঢুকবেন ক্রিস্তিয়ান পাভন, মার্কোস আকুনা, গাব্রিয়েল মার্কাদো ও এনজো পেরেজ।
আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ডি মারিয়ার বিবর্ণ পারফম্যান্স উল্টোদিকে বদলি হিসেবে নেমে ক্রিস্তিয়ান পাভনের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স সাম্পাওলিকে নতুন চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে। পাভনের গতি, বল নিয়ে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে কোনাকুনি ঢুকে পড়ার দক্ষতা আক্রমণভাগে লিওনেল মেসি ও সার্জিও আগুয়েরোর সঙ্গে কার্যকরী অস্ত্র হিসেবে কাজে দেবে বলেই ভাবছেন সাম্পাওলি।
ডি মারিয়াকে বসিয়ে আক্রমণে এমন কৌশলগত পরিবর্তন সময়োপযোগী ভাবা হলেও সাম্পাওলির অন্যান্য পরিবর্তন ফের প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। আইসল্যান্ডের ম্যাচটিতে দেখা গেছে সাম্পাওলির রক্ষণভাগ খুব সহজেই ভেঙে পড়ছে। রক্ষণে গাব্রিয়েল মার্কাদো তিন ডিফেন্ডারের ডানপাশে আসতে পারেন, মাঝে নিকোলাস ওতামেন্দি একাদশে নিজের জায়গা ধরে রাখবেন। ওতামেন্দির বাঁপাশে থাকবেন নিকোলাস তাগলিয়াফিকো। অর্থাৎ একাদশের জায়গা হারাচ্ছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ডিফেন্ডার মার্কোস রোহো।
অন্যদিকে এদুয়ার্দো সালভিও একাদশে জায়গা ধরে রাখলেও পরবর্তী ম্যাচে রাইটব্যাক নয়, তিনি তার নিজের জায়গা সেন্ট্রাল মিডফিল্ডের ডানপাশে খেলবেন। আর সেন্ট্রাল মিডফিল্ডের বাঁপাশে খেলবেন মার্কোস আকুনা, আগেও সাম্পাওলি এই জায়াগাতেই খেলিয়েছেন আকুনাকে।
সবচেয়ে গুরুতর প্রশ্ন মিডফিল্ডে মাসচেরানোর সঙ্গী কে হবেন? প্রথম ম্যাচে লুকাস বিগলিয়া সবাইকে হতাশ করেছেন। মাঝ মাঠ থেকে দ্রুত বল বাড়ানোয় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। জিওভান্নি লো সেলসো অথবা এভার বানেগাই এই পজিশনের যোগ্য দাবিদার। কিন্তু সাম্পাওলি এনজো পেরেজ ও ম্যাক্সি মেজাকেই অনুশীলনে যাচাই করেছেন। এ দুজনের মধ্যে পার্থক্য হলো পেরেজ আদর্শ বক্স-টু-বক্স খেলোয়াড় অন্যদিকে মাঝমাঠের ডান প্রান্ত দিয়ে মেজা মেসির সঙ্গে আক্রমণ শানাতে দক্ষ। যাকেই খেলানো হোক ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কঠিন এক পরীক্ষাই দিতে হবে আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডকে।
আইসল্যান্ডের বিপক্ষে সাম্পাওলির অতিসতর্কতা পরিষ্কারভাবেই কোনো কাজে আসেনি, ফুটবল বোদ্ধাদের তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়েছেন তিনি। খুব শিগগিরই উপযুক্ত ফরমেশন তাকে খুঁজে বের করতে হবে যাতে তিনি সফল হবেন। একাদশে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী এবং সেই পরিবর্তন কতটা কার্যকরী হবে তা জানা যাবে আগামী বৃহস্পতিবার (২১ জুন) ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটিতে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৮
এমজেএফ
