‘গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’ খ্যাত এই ফুটবল মহাযজ্ঞে বাংলাদেশ সুযোগ পায়নি, তাই বলে সমর্থকদের উৎসাহ বা উদ্দীপনা বিশ্বকাপ খেলুড়ে দেশগুলোর চাইতে কী কোনো অংশে কম?
মোটেও না। বরং ক্ষেত্র বিশেষে বেশিই।
ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার পতাকায় ইতোমধ্যেই দুয়ারীপাড়া সয়লাব হয়ে গেছে। তবে স্থানীয়রা জানালেন বিশ্বকাপ মাঠে গড়ালে নাকি পতাকার সংখ্যা বেড়ে বর্তমানের দশগুণ হবে! এখানকার মানুষের বিশ্বকাপ উন্মাদনা এতটাই প্রবল যে আসর শুরু হওয়ার দুই থেকে তিন দিন আগে থেকেই এলাকার মোড়ে মোড়ে প্রিয় দলের ব্যানার টাঙিয়ে দেন।
তবে প্রিয় দল বলতে ওই এক আর্জেন্টিনাই। এমনও শোনা গেছে এখানকার বাবা-মায়েরা তাদের আদরের ছোট সন্তানদের মেসি, ডি মারিয়ার জার্সি কিনে দেন এবং ম্যাচ চলাকালীন পাড়ার বড় স্ক্রিনে প্রিয় সন্তানদের নিয়ে প্রিয় আর্জেন্টিনার ম্যাচ উপভোগ করেন। কেন এত আর্জেন্টিনা প্রীতি? আনিছ নামের ৩৮ বছর বয়সী এক সমর্থকের উত্তরটা বেশ চমকপ্রদ। স্রেফ আর্জেন্টিনার খেলার ধরন। সাথে আছে প্রিয় ম্যারাডোনার আবেশ। ‘আর্জেন্টিনার খেলা ভীষণ পছন্দ হয়। অন্য দলের প্লেয়াররা যেমন ফাউল করে আর্জেন্টিনা তেমন ফাউল করে না। জার্মানি, স্পেনের মতো মেরে খেলে না। ’
তাদের আশা তাদের প্রিয় দল এবার বিশ্বকাপ শিরোপা জিতবে। কেন জিতবে সেই কারণটি আরও চমকপ্রদ। ‘এটাই মেসির শেষ বিশ্বকাপ। ও অবসরে যাবে। তাই এবার কাপ নেয়ার আশাই বেশি। ’
ব্রাজিল কী করবে? প্রতিবেদকের করা এমন প্রশ্নের জবাবে পাশ থেকে জাহিন নামক এক আকাশী-নীল সমর্থকের উত্তরটি এমন, ‘ব্রাজিল দল ভালো কিন্তু এ বছর তাদের থেকে আমরা এগিয়ে আছি। ’বিশ্বকাপে না খেলেও প্রবলভাবে বাংলাদেশ বিশ্বকাপে থাকে। চার বছর পরপর এই এক মাস ক্ষুদ্র ব-দ্বীপের মানচিত্রের আকাশ-মাটি ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার পতাকার রঙে যেন এক খণ্ড ব্রাজিল, এক টুকরো আর্জেন্টিনা৷ সঙ্গে ছোট্ট ছোট্ট দ্বীপের মতো জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্সে রূপ নেয়৷
সেটা মন্দ না। বিশ্বায়নের যুগে ভিনেদেশি ফুটবল নিয়ে ভালোবাসার প্রকাশ থাকাটা দোষের কিছুও নয়। বিশ্বকাপের সৌন্দর্য তখনই মলিন হয় ও কলঙ্কের প্রলেপ পড়ে যখন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকদের ভেতরে হানাহানির ঘটনা ঘটে। যখন সমর্থন উগ্রতায় রূপ নেয়।
আমরা আশা করবো এমন কলঙ্কিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, ২ জুন ২০১৮
এইচএল/এমএমএস