ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

লোকজ সুর, নৃত্য-পালাগানে নগরে নবান্ন উৎসব

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
লোকজ সুর, নৃত্য-পালাগানে নগরে নবান্ন উৎসব নবান্ন উৎসবে বায়োস্কোপে মগ্ন শিশু। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: অগ্রহায়ণের মিঠে রোদকে মুখরিত করে লোকজ সুর, নৃত্য আর পালাগানের মধ্য দিয়ে নগরে পর্দা উঠলো নবান্ন উৎসবের। হরেক রকমের পিঠাপুলি, নাগরদোলা আর চরকিতে সে উৎসবে ঘ্রাণ এলো বাংলার চিরায়ত গ্রামীণ জীবনের রং-রূপের।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে শুরু হয়েছে তিনদিনব্যাপী ‘প্রাণ চিনিগুড়া চাল নবান্ন উৎসব’।

উৎসবের প্রথম দিন বিকেলে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

বিকেল ৪টায় এই উৎসব প্রাঙ্গণে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন অনিমা মুক্তি গোমেজ, অনিমা রায়, শ্যামল পাল, খায়রুল ওয়ার্সি। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সুরবিহার। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে গারো কালচারাল অ্যাকাডেমি। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন মাসকুর-এ-সাত্তার-কল্লোল ও তামান্না তিথি। এদিন ছিল মানিকগঞ্জের মহুয়ার পালার পরিবেশনা।

এর আগে সকালে প্রথম পর্বে মঞ্চে লোকজসঙ্গীত পরিবেশন করেন কানন বালা সরকার, সরদার রহম উল্লাহ, মীরা মণ্ডল। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে সমস্বর। এইচ আর অনিকের নির্দেশনায় পথনাটক ‘আজব বাক্স’ মঞ্চস্থ করে চন্দ্রকলা থিয়েটার।

লোকগান শোনার পর নবান্ন উৎসবে আসা নগরবাসীদের একাংশ শিশুদের নিয়ে চড়েন নাগরদোলায়। এরপর মালপোয়া, ভাপা, পুলি, চিতই হরেক রকমের পিঠার স্বাদ পেতে বাবা মায়ের হাত ধরে ছোট শিশুরা ঘুরে বেড়িয়েছে স্টলে স্টলে।

উৎসবে নাগরদোলা।  ছবি: শাকিল আহমেদ

প্রাণ চিনিগুড়া চাল নবান্ন উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্ব পরিচালনা করেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজুরুল ইসলাম চৌধুরী সুইট। উৎসব নিয়ে তিনি বলেন, পৃথিবীর আদিমতম ও প্রাচীনতম উৎসব হচ্ছে নবান্ন উৎসব। আমরা সেই উৎসবের নাগরিক সংস্করণ করেছি। আদিমতম এই ঋতু উৎসবের বড় দিকটি হচ্ছে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে সুখী-সুন্দর-সমৃদ্ধি ও সাম্যের বাংলাদেশ নির্মাণ করা।

এসময় নবান্ন উৎসব, পৌষ মেলা, বসন্ত উৎসবের মতো ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো গ্রামে-গঞ্জে নানাভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। মানজুরুল ইসলাম চৌধুরী সুইট বলেন, যত বেশি এ ধরনের উৎসব হবে, আগামী প্রজন্মের শিশুরা সংস্কৃতিবান্ধব হবে, প্রকৃতিবান্ধব হবে। আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণে এই উৎসব সহায়ক হবে।

এর আগে প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা জানান, কালের বিবর্তনে যে ঐতিহ্যবাহী উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে, তা এই নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে চান তারা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে একক সঙ্গীত শোনাবেন আবু বকর সিদ্দিক, আরিফ রহমান, আতাউর রহমান, এস এম মেজবাহউদ্দিন, নবনীতা জাইদ চৌধুরী অনন্যা। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবে স্ব-ভূমি লেখক শিল্পীরা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করবে স্পন্দন। একক আবৃত্তি পরিবেশন করবেন আহকাম উল্লাহ, নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী। মানজার চৌধুরী সুইটের নির্দেশনায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর উপস্থাপনায় থাকবে নাটিকা ‘ইতিহাস কথা কও’।

উৎসবের শেষ দিন শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৯টায় শুরু হবে তৃতীয় দিনের পরিবেশনা। সেদিন সকালে একক সঙ্গীত শোনাবেন মহাদেব ঘোষ, মামুন জাহিদ খান, সঞ্জয় কবিরাজ, তাহমিনা খন্দকার মুক্তি। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবে সুর সাগর ললিতকলা অ্যাকাডেমি। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করবে ঢাকা স্বরকল্পন। পথনাটক ‘বৃত্ত’ পরিবেশন করবে নাট্যদল। পরে বিকাল সাড়ে ৩টায় উৎসবের সমাপনী পর্বে গান শোনাবেন বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, আব্দুল হালিম, তিমির নন্দী, ফকির আলমগীর। এছাড়া মাগুরা থেকে আসা সমীরণ বাউল ও তার দলের বিশেষ পরিবেশনা থাকবে মঞ্চে। দলীয় নৃত্য পরিবেশনা করবে ধানমন্ডির বুলবুল ললিতকলা অ্যাকাডেমি।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
এইচএমএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।