ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

ফিচার

ইতিহাসে এই দিন

ছান্দসিক প্রবোধচন্দ্র সেনের প্রয়াণ

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬
ছান্দসিক প্রবোধচন্দ্র সেনের প্রয়াণ

ঢাকা: ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে।

প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভালো, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ।

তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার। ৫ আশ্বিন, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

ঘটনা
•    ১৮৫৪ - অবিভক্ত বাংলায় প্রথম ডাকটিকেট বিক্রি শুরু হয়। ডাকটিকেটের চিত্রশিল্পী ছিলেন নুমারউদ্দীন।
•    ১৮৫৭ - বিদ্রোহী সিপাহীদের হাত থেকে ব্রিটিশ সেনারা দিল্লি পুনর্দখল করে।
•    ১৮৩১ - বাষ্পচালিত প্রথম বাস নির্মাণ করা হয়।
•    ১৮৭০ - ইতালির সেনাবাহিনী ফ্রান্সের কাছ থেকে রোম শহর দখল করে নেয়।
•    ১৯৭৩ - নারী টেনিস খেলোয়াড় বিলি জিন কিং লন টেনিস খেলার লিঙ্গের যুদ্ধ নামক মুখোমুখি ম্যাচে পুরুষ টেনিস খেলোয়াড় ববি রিগসকে পরাজিত করেন।
•    ১৯৯২ - আহসান মঞ্জিল জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়।


জন্ম
•    ১৮৬৩ - জার্মান ভাষাতাত্ত্বিক, আইনজ্ঞ ও পুরাণবেত্তা ইয়াকপ গ্রিমের মৃত্যু।
•    ২০১১ - আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট বুরহানুদ্দিন রব্বানির মৃত্যু।
•    ১৮৩৩ - নোবেল জয়ী ইতালীয় মানব-হিতৈষী এর্নেস্তো তিওদোরো মনেতার জন্ম।
•    ১৯৭১ - নোবেলজয়ী গ্রিক কবি জর্জ সেফেরিসের মৃত্যু।
•    ১৯৭৫ - নোবেলজয়ী ফরাসি সাহিত্যিক স্যঁ জন পেরসের মৃত্যু।
•    ১৯৮৬ - ছন্দবিশারদ, ঐতিহাসিক ও রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ প্রবোধচন্দ্র সেনের মৃত্যু। ১৯৯৭ সালের ২৭ এপ্রিল কুমিল্লায় জন্ম নেওয়া প্রবোধচন্দ্রের বাবা হরদাস সেন, আর মা স্বর্ণময়ী সেন। ইতিহাসে অনার্সসহ বিএ এবং প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৭ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ব্রিটিশ শাসনকালে রাজদ্রোহী সন্দেহে কারারুদ্ধ হওয়া প্রবোধচন্দ্র কর্মজীবনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান এবং প্রফেসর ইমেরিটাস ছিলেন। তবে তিনি বেশি প্রসিদ্ধ ছিলেন ছন্দজ্ঞান নিয়ে। কলেজে পড়ার সময়ে প্রবোধচন্দ্র ‘বাংলাছন্দ’ শীর্ষক একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখেন, যা পড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাকে ‘ছান্দসিক’ বলে অভিহিত করেন। পরে এ বিষয়ে চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, মোহিতলাল মজুমদার, কুমুদরঞ্জন মল্লিক, কালিদাস রায়, যতীন্দ্রপ্রসাদ ভট্টাচার্য ও কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখের স্বীকৃতি লাভ করেন তিনি। বাংলা ছন্দ বিষয়ক তার গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘বাংলা ছন্দে রবীন্দ্রনাথের দান’, ‘ছন্দোগুরু রবীন্দ্রনাথ’, ‘ছন্দ পরিক্রমা’, ‘ছন্দ-জিজ্ঞাসা’, ‘বাংলা ছন্দচিন্তার ক্রমবিকাশ’, ‘ছন্দ সোপান’, ‘আধুনিক বাংলা ছন্দ-সাহিত্য’, ‘বাংলা ছন্দে রূপকার রবীন্দ্রনাথ’, ‘নূতন ছন্দ পরিক্রমা’ ইতাদি উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘ চৌষট্টি বছর প্রবোধচন্দ্র ছন্দ-চর্চায় নিবিষ্ট ছিলেন এবং বাংলা ছন্দের আদ্যন্ত ইতিহাস বিজ্ঞানসম্মতরূপে রচনা করেন। বৃহৎ সময় তিনি ছন্দ-বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বিতর্ক-আলোচনা শেষে বাংলা ছন্দের ৩ রীতির নামকরণ করেন মিশ্রবৃত্ত, কলাবৃত্ত ও দলবৃত্ত। ইতিহাস বিষয়ে ‘বাংলার ইতিহাস সাধনা’, ‘বাংলায় হিন্দু রাজত্বের শেষ যুগ’, ‘ধর্মবিজয়ী অশোক’, ‘ধম্মপদ-পরিচয়’ তার উল্লেখযোগ্য অবদান। প্রাচীন ভারতের সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে রচিত দু’টি গ্রন্থ ‘রামায়ণ ও ভারত সংস্কৃতি’, ‘ভারতাত্মা কবি কালিদাস’ বাংলা সাহিত্যের মূল্যবান সম্পদ বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। রবীন্দ্রনাথ বিষয়ে তার ‘রবীন্দ্র দৃষ্টিতে অশোক’, ‘রবীন্দ্র দৃষ্টিতে কালিদাস’ এবং ‘ভারতপথিক রবীন্দ্রনাথ’ রচনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য প্রবোধচন্দ্র ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিলিট ইত্যাদি পুরস্কার ও সম্মাননা অর্জন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬
এইচএ/
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।