গ্রীষ্মের এক শান্ত বিকেল। তাপমাত্রা ৬০ ডিগ্রির মাঝামাঝি।
অকস্মাৎ এমন দৃশ্যে আশপাশে উপস্থিত সাধারণের চোখ কপালে ওঠার যোগার। ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য হলেও নগ্ন হয়ে সাইকেল চালনার বিস্ময়কর এ দৃশ্যের অবতারণা হয় সবার চোখের সামনে, যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ডের রাস্তায়।
যানবাহন ও কৃত্রিম জ্বালানি ব্যবহারের প্রতিবাদে, প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় এবং বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বাইসাইকেলের ব্যবহার বাড়াতে প্রতীকী সাইকেল চলানার প্রচলন রয়েছে আরো আগে থেকেই। কিন্তু তাই বলে হাজারো সাইকেল চালক একত্রে বিবস্ত্র হয়ে শহরের রাস্তায় সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়াবেন এ আবার কেমন প্রতিবাদের ভাষা! এ প্রশ্নের উত্তরে ওই নগ্ন সাইকেল চালকেরা অবশ্য বলেছেন একটু ভিন্ন কথা। সম্পূর্ন নগ্ন এবং সারা শরীরে ধুসর রঙে ঢাকা কেন জনসন বলেন-“একই সাথে সবুজ ও পরিবেশ সচেতনতায় দৃষ্টি আকর্ষণ এবং পোর্টল্যান্ডের একটি ট্রাডিশন হিসেবে ‘বাৎসরিক নগ্ন সাইকেল চালনা উৎসব’ প্রতিষ্ঠা করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। ”
অন্যদের সঙ্গে সুর মিলালেও নগ্ন হয়ে সাইকেল চালনার পক্ষে জান্ডি সিলভাগি আরো একধাপ এগিয়ে। তিনি বলেন- ‘পরিবেশ রক্ষায় নগ্নতার সবগুলো পথেই আমি হাটবো’।
‘এটি একটি অনন্য অভিজ্ঞতা এবং এর মাধ্যমে সম্পূর্ন স্বাধীনতা ও প্রাকৃতিক অনুভূতি লাভ করা সম্ভব। ’ পোর্টল্যান্ডের নগ্ন সাইকেল চালনা উৎসবে ফনিক্্র থেকে আসা ব্রুকলিন তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন এভাবেই।
তবে; উলঙ্গ হয়ে সাইকেল চালনা পোর্টল্যান্ডে প্রথম হলেও পৃথিবীতে এমন দৃশ্য কিন্তু এটিই প্রথম নয়। নগ্ন সাইকেল চালকদের সর্ব প্রথম দেখা মিলেছিলো সানফ্রান্সিসকোর সিয়াটল এবং কলোরাডোর ব্লাক রক সিটিতে ২০০৪ সনে।
এদিকে, পোর্টল্যান্ডের নগ্ন সাইকেল চালনা উৎসবের করপোরেট স্পন্সর ছিল বীয়ার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ব্রিজপোর্ট ব্রিউয়িং। প্রতিষ্ঠানটির ইভেন্ট কর্মকর্তা সিফট্ জানান - এটি মূলত মোটরযান ও (দূষণ সৃষ্টিকারী) জ্বালানীর বিরুদ্ধে বাইসাইকেল প্রেমীদের একটি সাহসী প্রতিবাদ উৎসব।
অবশ্য সারা দুনিয়ায় প্রতিবাদ আর সাহসের এমন আজীব নমূনা দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে কি না জানা নেই!
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, পূর্বে পোর্টলান্ড শহরে সম্পূর্ন নগ্ন হয়ে সাইকেল চালনার কোনও নজির না থাকলেও পোর্টল্যান্ড পুলিশ নগ্নতার অপরাধে ওই উৎসব থেকে কাউকেই গ্রেপ্তার করেনি!!
আসাদুল হক খোকন, বাংলানিউজ পাঠক
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, ২৯ জুন, ২০১১