ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

সৃষ্টির উৎসবে

শেরিফ সায়ার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১১ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১১
সৃষ্টির উৎসবে

‘বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিল নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। আমাদের পিডিবি যে পদ্ধতিতে মাস শেষে বিলটি দেয় সেটাও অনেক ঝামেলার।

তারা বাসায় আসে, মিটারগুলো দেখে তারপর বিল বানিয়ে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু আমাদের ‘স্মার্ট এনার্জি মিটার’ এ সব সমস্যার সমাধান দিবে। পিডিবিতে একটা  সেন্ট্রাল সার্ভার থাকবে। এবং সব মিটারগুলো থাকবে ওয়ারলেস কানেকটেড। পিডিবি যখন খুশী একটি এসএমএসের মাধ্যমে ইউজারের বিল সংক্রান্ত সকল তথ্য মুহূর্তেই পেয়ে যাবে। ’
 
এভাবে নিজেদের স্মার্ট এনার্জি মিটার প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করছিলেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতিমা বিনতে জিয়া অপি এবং সানজানা ভীনাস।   এই মিটারের সুবিধা নিয়ে বলতে গিয়ে অপি জানায়, সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে বিল টেম্পারিং-এর কোনো সুযোগ এখানে থাকছে না। সুতরাং দূর্নীতির কোনো সুযোগ নেই।
 
ভিন্নধর্মী এ প্রজেক্টটি প্রশংসা কুড়িয়েছে  ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি আয়োজিত চার দিন ব্যাপী প্রযুক্তি উৎসবে।

ইষ্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রনিক্স ক্লাবের আয়োজনে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিয়ে এ উৎসব শুরু হয় ২৫ জুন।  

উৎসবের প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হয় কর্মশালা। কর্মশালায় পিএইচপি ও ম্যাট ল্যাব বিষয়ে আলোচনা হয়। উৎসবের দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হয় মুভি শো। তৃতীয় দিনে হয় ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনার।

অনুষ্ঠানের শেষ দিন ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হয় আকর্ষণীয় প্রজেক্ট প্রদর্শনী ও কুইজ প্রতিযোগীতা।

শেষ দিনের প্রজেক্ট প্রদর্শনীতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৮টি প্রজেক্ট প্রদর্শন করা হয়। আয়োজনে বুয়েটের সিএসসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রদর্শন করেন জিডিটাল টেম্পারেচার মিটার অ্যান্ড ফ্যান অটোমেশন। এ প্রজেক্টের উদ্ভাবকদের অন্যতম সুবির সাহা বলেন, এখানে আকর্ষণীয় দিক হলো ঘরের মধ্যে যদি কোন লোক না থাকে তবে ফ্যান অটো বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে বিদ্যুতের অপচয় রোধ করা সম্ভব হবে।

প্রদর্শনীতে উল্লেখযোগ্য ছিল এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাংলা বর্ণমালার হাতে খড়ি’ প্রজেক্টি। অন্ধদের জন্য তৈরি করা  কি-বোর্ড দিয়ে বর্ণমালা শেখার ব্যবস্থা করেছে মনযুর উল মাসুম এবং মো: শরীফ উল্লাহ।

মনযুর বলে, প্রথমে তারা কলকাতার একটি কি-বোর্ড দিয়ে লে-আউট তৈরি করার চেষ্টা করে। কিন্তু সে মুহূর্তে দেখা গেলো দু বাংলার অন্ধদের জন্য লে-আউট সম্পূর্ণ ভিন্ন। পরবর্তীতে তারা মো: সরওয়ার হোসেন নামে একজন সফল ব্যক্তির খোঁজ পায়। যিনি অন্ধ হয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছেন।

তিনি এই প্রজেক্টের জন্য কি-বোর্ডের একটি লে-আউট তৈরি করে দেন। তবে এ প্রজেক্টের ভিন্নতা হলো, যারা ছোট জন্য অন্যরকম ব্যবস্থা। কি-বোর্ডে প্রেস করার সাথে সাথে শব্দ করে ঐ বর্ণমালার নাম বলবে। এতে করে তারা শুনেও বর্ণমালার সাথে পরিচিত হতে পারবে।
 
এছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাউথ ইষ্ট ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি সহ ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে।
 
ইষ্ট ওয়েষ্ট ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রনিক্স ক্লাবের সভাপতি ফাহমিদুর রহমান অনি জানায়, ‘আমাদের ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রতিবছর এ উৎসব আয়োজন করতে চাই। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের অবসর সময় সৃষ্টিশীল কাজে ব্যয় করতে উৎসাহ পাবে। এর ফলে দেশেও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।

প্রতিযোগিতার সেরা প্রজেক্ট নির্বাচিত হয় সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ‘স্মার্ট হোম সিকিউরিটি সিস্টেম’।

বিকেল পাঁচটায় সমাপনি ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ব্যাংক-এর সাবেক গর্ভনর  ড. মো. ফরাস উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।