ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

স্মৃতির আঙিনায় ২৫ বছর

নাভিলা নদী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১১
স্মৃতির আঙিনায় ২৫ বছর

‘মেঘলা আকাশের সকাল। হঠাৎ করেই রোদ, আবার হঠাৎ করেই মেঘলা।

এই বুঝি বৃষ্টি এলো! এগুলো ভাবতে ভাবতেই র‌্যালিটা করা হলো না। ’ এভাবেই দিন শুরুর কথা বলছিল হারমেন মেইনার কলেজের প্রাক্তন ছাত্র সাফাত।

২৪ জুন মিরপুরে অবস্থিত হারমেন মেইনার কলেজ মাঠে আয়োজিত হলো ২৫ বছর পূর্তি। সকাল থেকেই প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছিল।

একজন উদ্যোক্তা বলছিলেন, আমাদের কলেজ সাজানো শুরু হয়েছে ১ সপ্তাহ আগে থেকেই। আর এগুলো কিন্তু করেছে সব প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই। সবাই ব্যস্ততার মাঝেও নিজের স্কুলে এসে কাজ করেছে।

সকাল ৮টায় র‌্যালি হওয়ার কথা থাকলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে করা হয়নি। কারও এ নিয়ে দুঃখ নেই। নিজের শৈশব ফিরে পেয়ে সবাই তখন উচ্ছসিত। অনুষ্ঠান উদ্বোধন হয় সকাল ১১টায়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, হারমেন  মেইনার কলেজের অধ্যক্ষ এএসএম সলিমুল্লাহ। উদ্বোধন পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কলেজের গর্ভনিং বোর্ডের চেয়ারম্যান গোলাম আহমেদ ইশহাক। বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের স্মৃতিচারণ পর্ব শুরু হয়ে যায়।

মাঝে মাঝে চলতে থাকে নাচ, গান, নাটক, ফ্যাশন-শো সহ আরও নানা আয়োজন। অন্যদিকে রোদ-বৃষ্টির খেলাও থেমে নেই। সেই খেলা বরং অনুষ্ঠানে নতুন মাত্রাও যোগ করে দিয়েছে।

ক্যামেরার ফ্ল্যাশের আওয়াজে মুখরিত মঞ্চের চারিপাশ। বন্ধুদের আড্ডা। পুরাণ বন্ধুদের পেয়ে জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে নেয়া শান্তির নিঃশ্বাস। কারণ, এই বন্ধুদের মাঝেই লেপটে আছে কৈশোর বেলার গন্ধ। একজনকে তো দেখা গেলো কেঁদে ফেলতে।

প্রাক্তন শিক্ষার্থী শারমিন সুলতানা বলছিলেন, স্কুলে অংক ভালো লাগতো না। ভাবসম্প্রসারণগুলো পড়তে ভালো লাগতো। ম্যাডামদের সান্নিধ্য পেয়ে আমার মতো ফাঁকিবাজও হয়ে উঠেছিল কবি। বিভিন্ন দেয়াল পত্রিকাগুলোতে লেখালিখি করে আমার হাত পাকতে শুরু করে। অন্যদিকে আবৃত্তির প্রতিও ভালোবাসা বেড়ে ওঠে। তাই এখনও কবিতা আবৃত্তির সময় মঞ্চে উঠে দাঁড়ালে চোখের সামনে ভেসে ওঠে আমার স্কুলের সময়গুলো।

আয়োজকদের অন্যতম হচ্ছেন অথৈ রহমান। তিনি বলছিলেন, হারমেন মেইনার স্কুলের ২৫ বছর পূর্তির দিন যতই ঘনিয়ে আসতে থাকে ততই আমি বর্তমান থেকে মূহুর্তেই হারিয়ে যাচ্ছিলাম। বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠতে থাকে আমার স্কুলের পরিপাটি দ্বিতল লাল দালানটি।

এভাবে আবেগের কথায় সবাই বলে ওঠে। অনুষ্ঠানস্থল যখন পূর্ণ ঠিক সেই মুহূর্তে বিকাল চারটায় প্রধান অতিথির আগমন ঘটে। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রি জাহাঙ্গীর কবির নানক অনুষ্ঠানস্থলে এসে মুগ্ধ হয়ে যায়। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এমন আয়োজনে আমি কোনদিন আসিনি। এই প্রথম এমন আয়োজনে উপস্থিত হতে পেরে আমি মুগ্ধ। ’

সন্ধ্যা গড়াতেই নিজ স্কুলের দুটি ব্যান্ড দল দর্শক মাতিয়ে ফেলে। সর্বশেষ, জনপ্রিয় ব্যান্ডদল এলআরবি উচ্ছলতার বন্যায় ভাসিয়ে দেয় হারমেন মেইনার কলেজের সিলভার জুবলি অনুষ্ঠানটি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।