বহুকাল ধরে বাঁশের ঝাকা তৈরিকে জীবিকার অবলম্বন করে নিয়েছে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের বড় বড়িয়াল গ্রামের শতাধিক পরিবার। বাঁশের ঝাকা তৈরি ও বিক্রি তাদের রুটি-রুজির প্রধান উৎস।
সম্প্রতি গ্রামটিতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারগুলোর প্রায় সবাই বাঁশের ঝাকা তৈরিতে ব্যস্ত। আর এ কাজে পুরুষের সাথে সাথে নারীরাও সমানে কাজ করে যাচ্ছেন। বাড়ির বউ-ঝিরা গৃহস্থালীর কাজ শেষে এ কাজে লেগে যান পুরুষদের সাথে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামটিতে উৎসবের আমেজে কাজ চলে।
বড়িয়াল গ্রামের বয়োবৃদ্ধ মণীন্দ্র (৮২) জানান, এই গ্রামে প্রায় শত বছর ধরে ঝাকা তৈরির কাজ হয়। প্রায় ১২০ পরিবার এই কাজে সরাসরি জড়িত। পৈতৃক পেশা হিসেবেই তারা এই কাজ করে থাকে বলে তিনি আরো জানান।
সনু মালা রানী (৩৬) জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সাথে তিনি ঝাকা তৈরি করছেন। প্রতিদিন ঘরের কাজের পাশাপাশি দুটি ঝাকা তৈরি করা যায়। বছরের কার্তিক থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত কাজের চাহিদা একটু বেশি থাকে।
সুর বালা (২২) জানান, সংসারে অন্যান্য কাজ ও লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবা-মাকে সাহায্য করি। তাতে বাবা-মায়ের কষ্ট অনেকটা দূর হয় এবং সেই সাথে কিছু বাড়তি আয়ও হয়।
ফালান চন্দ্র দাশ (৫৫) জানান, একেকটি ঝাকা তৈরি করতে ৩০-৩৫ টাকা খরচ হয়। সেগুলো ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করা যায়। একটি বাঁশ দিয়ে ৪-৫টি ঝাকা তৈরি করা যায়। পাইকাররা বাড়ি থেকে এগুলো কিনে নিয়ে যান।
বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উজ্জ¦ল হোসেন জানান, সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে এই এলাকায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পসহ ঝাকা শিল্পের আরো ব্যাপক প্রসার ঘটবে।
বাংলাদেশ সময় ১৮৩৫, এপ্রিল ১১, ২০১১