ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

শীত এলো বলে...

গোলাম রসূল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪
শীত এলো বলে... ছবি: ফাইল ফটো

ঢাকা: প্রাকৃতিক নিয়ম চক্রে দেশে আবার এসেছে শীত। ঋতু বিভাজনে পৌষ ও মাঘ মাস শীতের জন্য বরাদ্দ হলেও প্রকৃতিতে শীত থাকে তিন-চার মাস।

এখন প্রকৃতির প্রতিটি ভোরে পড়ছে হালকা কুয়াশা। ছোট্ট দুপুরটায় রোদের অল্প গরম আর সন্ধ্যার বাতাসে হালকা শীতের কাঁপুনি। হিম-হিম রাতে লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুম উপভোগ করছে কোটি মানুষ।

উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শীত পড়েছে অনেক আগেই অগ্রহায়ণ মাসে। সেখানে গরিব-অসহায় মানুষের কাছে শীত বস্ত্র পাঠাতে শুরু করেছে জনদরদী ও মানবসেবী মানুষ এবং বিভিন্ন সংগঠন। সব মিলিয়ে প্রকৃতিতে এখন শীতের আমেজ।     

এখন ভোরে ঘাসের ডগায় শিশির বিন্দু সূর্যের রোদ পেয়ে মুক্তোর দানার মতো ঝিকমিক করে। সকালের মিঠেকড়া রোদে বসে সূর্যের তাপ পোহাচ্ছে অনেকেই।   যে শীত একটু দূরে ছিল তা এখন সমস্ত প্রকৃতিতে জেঁকে বসেছে।

প্রতিদিনই এখন একটু একটু করে তাপমাত্রা কমছে। বাতাসে কমছে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি। সেই সঙ্গে কমছে আদ্রতাও। নতুন বছরের শুরুতে দেশে বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। তবে ওই বৃষ্টি খুব বেশি শীত বয়ে আনবে না বলেই মনে হচ্ছে।

ইট-পাথরের রাজধানী ঢাকাতে প্রকৃতির পালাবদল টের পাওয়া বড়ই কঠিন। তবে গত কয়েকদিনের শীত সেটি এ নগরবাসীকে বেশ ভালভাবেই টের পাইয়ে দিচ্ছে। রাজধানীতে এখন প্রতিদিন কুয়াশার চাদর গায়ে দিয়ে শীত তার অস্তিত্ব খুব ভালভাবেই জানান দিচ্ছে।

কথায় আছে পিঠা-পার্বনের দেশ বাংলাদেশ। আর সে পিঠার উৎসবতো শীতকে কেন্দ্র করেই। শীত এলেই হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির বাহারি রকমের পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যায় সারা দেশে। ধোঁয়া ওঠা গরম ভাপা পিঠা ও চিতই- পাটিসাপটার সঙ্গে খেজুরের রস, গুড় কিংবা বিভিন্ন প্রকার ভর্তা দিয়ে খাওয়ার যে কি তৃপ্তি তা ভোজন রসিক কোনো বাঙালির অজানা নয়। সঙ্গে শীতের পিঠা পুলিতো রয়েছেই।

শীত নিয়ে কবি-সাহিত্যিকরাও কম মাতেননি। ইংরেজ কবি পি বি শেলী তার কবিতায় বলেছেন, “ইফ উইন্টার কামস, ক্যান স্প্রিং বি ফার বিহাইন্ড”। শীতকে উপলক্ষ করে পৃথিবীর নানা ভাষায় লেখা হয়েছে প্রচুর রোমান্টিক গদ্য ও পদ্য। তবে শীত রোমান্টিকতার বাইরে দ্রোহও জাগিয়েছে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর মনে। আর তাইতো তিনি লিখেছেন...

বাইরে লুট হচ্ছে রোদ্দুর-
অথচ কেউই বলছে না: তোমরা বেরিয়ে এসো,
দ্যাখো, তোমাদের শীতের কাপড়গুলো
আর ভিজে-ক্ষত শুকোবার একমাত্র ওষুধটুকুও
হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

দরোজা আটকে ঘরে থাকবার সময় এখন নয়,
এখন সময় নয় সঙ্গমের।     

বাংলাদেশ সময়: ০২২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।