ঢাকা: তিউনিশিয়ার মরুভূমিতে ‘অলৌকিকভাবে’ একটি হ্রদ সৃষ্টি হয়েছে! উত্তর আফ্রিকার রাসায়নিক রপ্তানিকারক দেশ তিউনিশিয়ার শহর গাফসা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে মরুভূমিতে কয়েকজন মেষ বালকের চোখে পড়ে বিষয়টি।
৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বয়ে যাওয়া ওই এলাকায় সবসময় তীব্র গরম অনুভূত হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, এক হেক্টরের বেশি জায়গায় জুড়ে হ্রদটিতে ১০ লাখ ঘনমিটারের বেশি পানি আছে। স্থান ভেদে এর গভীরতা ১০ থেকে ১৮ মিটার।
হ্রদ সৃষ্টির কারণ জানা না গেলেও এটিকে লেক দি গাফসা বা গাফসা বিচ নামে ডাকা হচ্ছে। হ্রদটিকে ‘অলৌকিক হ্রদ’ বলেও মনে করছেন স্থানীয়রা।
তবে কেউ আশীর্বাদ হিসাবে নিলেও অনেকে এটিকে ‘অপয়া’ হিসেবে দেখছেন।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কর্মরত স্থানীয় সাংবাদিক লাখদর বলেন,‘এলাকার কয়েকজন বলছেন এটা অলৌকিক, অনেকেই আবার অভিশাপ হিসেবেও বর্ণনা করেছেন। ’
তিনি জানান, প্রথমে ওই হৃদের পানি স্বচ্ছ টলটলে ও ফিরোজা নীল ছিল কিন্তু পরে তা সবুজ রং ধারণ করে। বর্তমানে পানিতে সবুজ শ্যাওলা পড়েছে।
এদিকে মেহেদী বিলেল নামে এক ব্যক্তিও বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। হৃদ সৃষ্টি হওয়াকে তিনি অলৌকিক হিসেবেই দেখছেন।
তিনি দেশটির উত্তরাঞ্চল গাফসা শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ওম লারায়েস সড়ক দিয়ে বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার সময় মরুভূমিতে এ খাদটি দেখেন।
তিনি বলেন, কোনো বিরতি ছাড়াই কয়েক ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিয়েছিলাম আমি। তবে সত্যিই চিন্তা করেছি যে তখন ধাঁধায় পড়ে গিয়েছিলাম কিনা!
সাংবাদিকদের মেহেদী বলেন,‘আমি বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক কিছুই জানি না, তবে এটা অতিপ্রাকৃত কিছু হতে পারে। ’
এদিকে হৃদে ইতোমধ্যে দেশের নানা অঞ্চলের দর্শনার্থীরা ঘুরতে শুরু করে দিয়েছেন। তবে পানিতে নামার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
হ্রদের বিষয়ে সরকারি কোনো বক্তব্য দেওয়া না হলেও ভূতত্ত্ববিদেরা বলছেন, ভূকম্পনের ফলে ভূমির ভূগর্ভস্থ পানি উপরিভাগে উঠে আসে। এর ফলেই হয়তো হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে।
দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, পানিতে সাঁতার কাটতে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে পানি দূষিত কিংবা পানিতে রাসায়নিক পদার্থ থাকার আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ তিউনিশিয়ানদের সতর্ক করে দিয়েছে।
১০ দিন আগে দেশটির স্থানীয় মুখপাত্র হাতেফ ওয়াউগি বলেন, হৃদের পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ল্যাবে কাজ চলছে। সকর্তকতা হিসেবেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গাফসা ও এই হ্রদ সংলগ্ন এলাকা ফসফেট সমৃদ্ধ। এছাড়া গাফসায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফসফেটের খনি রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৪