ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

বাবু আহমেদের আলোকচিত্র প্রদর্শনী

গৌড় ও পাণ্ডুয়া

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১১
গৌড় ও পাণ্ডুয়া

‘হেরিটেজ ফটোগ্রাফার’ হিসেবে খ্যাত বাবু আহমেদের একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘বাংলার বিস্মৃতির নগরী: গৌড় ও পাণ্ডুয়া’ শুরু হয়েছে ধানমণ্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায়। প্রদর্শনী সবার জন্য খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

শেষ হবে ৮ মার্চ।

বর্তমান রাজনৈতিক মানচিত্রে গৌড় ও পাণ্ডুয়া নগর দুটির অখণ্ড অবস্থান এখন বিভক্ত হয়েছে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভারতের মালদহ জেলায়। সুলতানি যুগে এই নগর দুটির মর্যাদা ছিল স্বাধীন বাংলার রাজধানী হিসেবে। তাই এখানে গড়ে উঠেছিল কারুকার্যময় নানান স্থাপনা। কিন্তু এখন সব ইতিহাসের অংশ। বাস্তবে শুধু টিকে আছে ধ্বংসাবশেষ।

বাবু আহমেদ তার ক্যামেরায় সেইসব ধ্বংসাবশেষের ছবি তুলে ধরেছেন শিল্পীর চোখ দিয়ে। তাই সূদূর অতীত জীবন্ত হয়ে উঠেছে তার আলোকচিত্রে। মোট ৬৩ ছবির মাধ্যমে বাবু তুলে ধরেছেন নগর দুটির স্থাপত্য-ঐতিহ্য। তিনি কাজ করেছেন বাংলাদেশ ও ভারতীয় অংশে।

বাবুর এই ছবিগুলোতে দেখা যায় মসজিদ, মাজার, মিনার, খিলান ও অন্যান্য স্থাপত্যশিল্পের নমুনা। এসব স্থাপত্যের ভেতরকার নকশাগুলো তিনি তুলে এনেছেন নিপুণ হাতে। প্রদর্শনীর বাংলাদেশ অংশের ছবিগুলোর ভেতর রয়েছে শাহ নিয়ামতউল্লাহ ওয়ালি’র মাজার (১৬৬৪ খ্রি.), শাহ নিয়ামতউল্লাহ ওয়ালি মসজিদ (১৭ শতক), শাহ শুজার তাহখানা (১৬৬৪ খ্রি.), ধানিয়াচক মসজিদের ভেতরের অলঙ্করণ (১৫ শতক) ইত্যাদি।

ভারতীয় অংশের ছবিগুলোর ভেতর রয়েছে কুতুবশাহী মসজিদের ধ্বংসাবশেষ (১৫৮২-১৫৮৩ খ্রি.), ফিরোজ মিনার (১৪৯৯ খ্রি), গুনমান্ত মসজিদের অভ্যন্তরীণ দৃশ্য (১৪৮৪ খ্রি) ইত্যাদি।

ছবিগুলো দেখে দর্শকমনে এই ধারণাই জন্মে যে, পোড়ামাটির স্থাপত্যগুলো প্রায়ই মিশে গেছে মাটির সাথে, এখন প্রয়োজন যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে আসা দর্শক-অতিথিদেরও সেই একই আকুতি, ‘রক্ষা করতে হবে স্থাপত্যশিল্পের এই অমূল্য ঐতিহ্য’। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত রজিত মিত্র। বিশেষ অতিথি ছিলেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ।

আলোচকরাও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যশিল্প, বিশেষ করে, বাংলার এই প্রাচীন শহরদুটির স্থাপত্য ঐতিহ্যের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তারা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ‘ক্রস বর্ডার পর্যটন’-এর ওপর গুরুত্ব দেন।

ড. আবু সাঈদ তার বক্তব্যে এই বাংলাদেশ ও ভারতের ভেতর অবস্থিত এই নগর দুটিকে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’ ঘোষণা দেওয়ার প্রস্তাব দেন, যাতে দুই দেশের অধিবাসী বাঙলিরা তাদের প্রাচীন রাজধানী শহর দুটি ভিসামুক্তভাবে পরিদর্শন করতে পারেন।

ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিষয়টি নিয়ে আরো আলোচনার আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশ সময় ২২০১, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।