শ্রীমঙ্গল: ফুলটি যারা যত্ন করে ফুটিয়ে থাকেন তারা প্রত্যেকেই এর প্রকাশিত শুভ্র ভালবাসাকে কিছুতেই এড়াতে পারেন না। শুভ্রতায় বাধা পড়ে কোমল হৃদয়।
ঘরের বারান্দা কিংবা ছাদে অথবা ফ্ল্যাটের এক কোণে রাতের রানী হয়ে একসময় আবির্ভূত হয় এ ফুলটি। আঁধার ঢেলে উদ্ভাসিত ধ্রুব সত্যের মতো প্রকাশ পায় তার শ্বেতশুভ্র উপস্থিতি। চারপাশকে যেন জানান দেয়– অন্ধকারের উৎস হতে সেই একমাত্র প্রকাশিত সত্য। যা সতত সুন্দর। এভাবেই বছরে পর বছর ধরে তার আগমন প্রতিটি পরিবারের আনন্দের সাথে ভাগ বসাতে। তবে ভোরের আলো ফোটার আগেই সে আপনা থেকেই গুটিয়ে নেয় তার সৌন্দর্য।

শ্রীমঙ্গল শহরের সোনামিয়া সড়কের জেসমিন ভ্যালির জুলফিকার আলী মন্ডল ও আক্তার ফারহানা তানভীর লতার ফ্ল্যাটে শনিবার রাত ৯টায় মোট ১৩টি নিশিপদ্ম ফুটেছে। তারা বলেন, ভীষণ ভালো লাগছে। এ গাছটির বয়স চার বছর। এ পর্যন্ত মোট ৫৪টি নিশিপদ্ম ফুটলো। সন্ধ্যার পর একটু একটু করে ফোটা শুরু হয়। পাঁচ-ছয় ঘণ্টা থেকে রাতের শেষে আবার গুটিয়ে যায়। মে-জুন মাসে ফুল ফুটে।
প্রকৃতি বিষয়ক গবেষক ও লেখক মোকারম হোসেন বলেন, নাইটকুইনের সঠিক বাংলা নামটি হলো নিশিপদ্ম। বৈজ্ঞানিক নাম Epiphyllum oxypetalum। শুধুমাত্র নাইটকুইনই নয়। রাতে আরো অসংখ্য জাতের ফুল ফোটে এবং ভোরেই ঝরে পড়ে। তবুও এ ফুল নিয়ে পুষ্প প্রেমিকদের অনেক উৎসাহ। নিশিপদ্ম সাধারণত সৌখিন পুষ্পপ্রেমিকদের বাসায় দেখা যায়। এটি কোনো বিরল প্রজাতির ফুল নয়।

মোকারম হোসেন আরও বলেন, গাছ ক্যাকটাস গোত্রীয়। মসৃণ ও কণ্টকহীন। যথারীতি পাতা নেই, রূপান্তরিত কাণ্ডই পাতার কার্য সম্পাদন করে। গাছের গোড়া শক্ত, ডাঁটার মতো। অনেকগুলো শাখা প্রশাখা। সবগুলোই চ্যাপ্টা ফিতার আকৃতি, তাতে সবুজ রঙের শিরা সুস্পস্ট। প্রায় সারা বছরই নিষ্প্রাণ থাকে। গ্রীষ্মের শেষভাগে একপশলা বৃষ্টির ছোঁয়া পেলেই প্রস্ফুটন প্রস্তুতি শুরু হয়। সাদা রঙের সুগন্ধিযুক্ত ফুল নিশিপদ্ম।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৮ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৪