একটি পদ্ধতি বলে দিতে পারে আপনার সন্তানের আগামী দিনগুলির কথা। অবাক হলেও বিষয়টি বাস্তব।
সংখ্যা তত্ত্বের গভীর তাত্ত্বিক আলোচনায় না গিয়ে আজকের কলামে কিছু প্রাথমিক বিশ্লেষণ তুলে ধরতে চাইছি। এর মাধ্যমে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন সংখ্যাতত্ত্ব কতটা গভীর ও নির্ভুল।
আজ আমি আলোচনা করব কি করে সংখ্যাতত্ত্ব ব্যবহার করে আপনার শিশুর চারিত্রিক গঠন বিষয়ে আপনি নজর দেবেন। এর বেশ কিছু জটিল পদ্ধতি আছে। আজকের প্রতিবেদনে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিটি তুলে ধরা হলো। এই পদ্ধতি আপনি সহজে কারও সাহায্য ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন।
আসুন আমারা দেখি কীভাবে সংখ্যাতত্ত্বের সাহায্য আপনি আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন গড়ে দিতে পারেন।
প্রতিটি মানুষের মূলাঙ্কের ওপর নির্ভর করে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। মূলাঙ্ক গণনা করে সহজেই সেই মানুষটি কেমন তা বুঝতে পারি আমরা। জন্ম তারিখের প্রতিটি অংক (দিন, মাস, বছর সহ) পরস্পরের সঙ্গে যোগ করে মূলাঙ্ক পাওয়া যায়। যোগফল যদি দুই অংকের হয়, তবে সেদু’টিও ফের পরস্পরের সঙ্গে যোগ করতে হবে, যতক্ষণ না এক অংকের সংখ্যা আসবে।

ধরা গেল, এক ব্যক্তির জন্ম তারিখ ১৫-৬-১৯৯০। সুতরাং, হিসাবটি দাঁড়াবে ১৫+৬+১৯৯০= ২০১১ এরপর ২+০+১+১=৪। তার মানে ১৫-৬-১৯৯০, এদিনে জন্ম নেওয়া জাতক বা জাতিকার মুলাঙ্ক ৪। আবার অনেকে ১৫+৬+১৯৯০=২০১১ তারপর ২০+১১=৩১ তারপর ৩+১= (মুলাঙ্ক) ৪ এই পদ্ধতিও অবলম্বন করেন। তবে প্রথম পদ্ধতিটি বেশি ব্যবহার করা হয়।
এর কারণ মূলাঙ্ক শুধুমাত্র ১-৯-এর মধ্যেই গণনা করা যায়। অর্থাৎ, যতক্ষণ পর্যন্ত দিন, মাস, তারিখ যোগ করে ১-৯ মধ্যে সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না। ততক্ষণ আপনাকে একটি সংখ্যার সঙ্গে পাশের সংখ্যাটি যোগ করে যেতে হবে। মূলাঙ্ক গণনা করে বাচ্চাদের মূল স্বভাব জেনেই মা-বাবা তাদের সঠিক শিক্ষা দিতে পারেন।
প্রতিটি সংখ্যার গুরুত্ব
(১) এই মুলাঙ্কের বাচ্চারা রাগী ও জেদি হয়। এরা স্বাধীন থাকতে চায়। কোনো কাজে কারও হস্তক্ষেপ পছন্দ করে না। জোর করে তাদের উপর মতামত চাপিয়ে দিলে তারা রেগে যায়। এরা ভবিষ্যতে প্রধানত বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে চাকরি করে থাকে। এ ধরনের শিশুদের না বকে যুক্তি দিয়ে বোঝালে সহজেই বুঝে যায়।
(২) এই বাচ্চারা শান্ত, ভাবুক হয়। পড়াশোনা করতে ভালোবাসে। জেদি না-হলেও নিজের জিনিসের প্রতি খুব সচেতন। এরা পরিবারকে খুবই ভালোবাসে। এদের বোঝানোর ক্ষেত্রে শান্ত ভাবের খুবই প্রয়োজন। এদের ছোট বেলায় ভয় দেখালে সেই ভয় বাকি জীবনে প্রভাব বিস্তার করে।
(৩) এই মুলাঙ্কের বাচ্চাদের মস্তিষ্ক খুব সক্রিয়। এরা জ্ঞানী হয়। এ কারণে এদের মধ্যে পাণ্ডিত্যের অহংকার জন্ম নেয়। জনপ্রিয় ও আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে ওঠার প্রবল ইচ্ছা থাকে এদের মধ্যে। যেখানে এরা গুরুত্ব পায় না সেখানে এরা যেতে চায় না। এদের বোঝানোর জন্য আপনার যথাযথ জ্ঞান থাকা জরুরি।
(৪) এই বাচ্চারা খুব বেপরোয়া হয়। খেলাধুলো করতে পছন্দ করে। ঝুঁকি নেওয়া এদের স্বভাব। বকে নয়, ভালোবাসার মাধ্যমেই এদের নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
(৫) এই শিশুরা বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়। এ সংখ্যাটি সাহস, উত্সাহ ও পরিবর্তনের প্রতীক। এদের সঙ্গে ধৈর্য ধরে শান্তভাবে কথা বলবেন।

(৬) মনে রাখবেন, এই শিশুরা মিথ্যে কথা বলতে ভয় পায়। তাই তারা আপনাকে কোনো কথা বললে সেই কথা সবসময় গুরুত্ব দিয়ে শুনবেন। এরা সাধারণত হাসি-খুশি থাকে কিন্তু রেগে গেলে কোনো বিরোধই এরা বরদাস্ত করে না।
(৭) এই মুলাঙ্কের বাচ্চারা কিছুটা চঞ্চল ও স্বতন্ত্র প্রবৃত্তির হয়। এরা ভাবুক, কিছুটা নিরাশাবাদী, কিন্তু প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন। বিচার ধারায় এই শিশুদের মৌলিকতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এদের খুবই ভাবনা-চিন্তার মাধ্যমে পরিচালনা করা উচিত।
(৮) এই বাচ্চারা কিছুটা ভাবুক, অত্যন্ত ব্যবহারিক, পরিশ্রমী এবং বুদ্ধিসম্পন্ন হয়। এদের জীবনে গতি কিছুটা দেরিতে আসে। কিন্তু এরা নিজের লক্ষ্যে স্থির থেকে সফল হয়। এরা কোমল হৃদয়ের হয়। শাসন করার সময়ে বাবা-মাদের খুবই সতর্ক থাকা উচিত।
(৯) মুলাঙ্কের হিসেবে এটি শ্রেষ্ঠ সংখ্যা। এই শিশুরা দুষ্টু হলেও তীব্র বুদ্ধিসম্পন্ন হয়। জীবনে এরা বার বার বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। মা-বাবার সঙ্গে খুব একটা ভাব থাকে না। প্রশাসনিক কাজে এরা খুব কৌশলী। বড় হয়ে কিছুটা মেজাজি বা দাম্ভিক হতে পারে। আত্মবিশ্বাস এদের বয়সের দ্বিগুণ গতিতে বাড়তে থাকে। তাই এদের কোনোভাবেই জোর করে নয় বরং ভালোভাবে বোঝানো উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ০০০১ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৪