ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২, ০৯ মে ২০২৫, ১১ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

বাঘ-ভাল্লুক-সিংহ যখন বন্ধু!

আবু তালহা, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:৫৮, মে ২৮, ২০১৪
বাঘ-ভাল্লুক-সিংহ যখন বন্ধু!

ঢাকা: বাঘ, ভাল্লুক ও সিংহ- তিনটিই হিংস্র প্রাণী হিসেবে পরিচিত। কেবল মানুষ বা ‍অন্য প্রাণীর জন্য নয়, এরা নিজেরা নিজেদের শত্রুও বটে।



কেমন হয় যদি এরা বন্ধু হয়ে যায়? ভাবতে নিশ্চয়ই অবাক লাগছে?

আসুন জানা যাক এমন তিন বন্ধুর গল্প।

বাঘ, ভাল্লুক ও সিংহ যে বন্ধ‍ু হতে পারে তা প্রথম জানা গেল শের খান, বালো এবং লিওদের দেখে।



বালো আমেরিকান কালো ভাল্লুক, সিংহের নাম লিও এবং বাঘ নাম শের খান। এদের বন্ধুত্ব এত গভীর যা মানুষের বন্ধুত্বকেও যেন হার মানিয়েছে। প্রাণিজগতেও এমন বন্ধুত্ব সাধারণত দেখা যায় না।

গল্প নয়! আমেরিকার জর্জিয়া, লুকাস গ্রোভ চিড়িয়াখানার নোয়া’স আর্ক রেসকিউ সেন্টারে গেলেই এ দৃশ্য দেখতে পাবেন। জঙ্গলে তাদের ভিন্ন আচরণ দেখা গেলেও নোয়া’স আর্কে তারা একই পরিবেষ্টনের মধ্যে বসবাস করে।



১৩ বছর আগে আটলান্টায় মাদক পাচারকারীর কাছ থেকে পুলিশ প্রায় দুই মাস বয়সী এসব শিশুদের উদ্ধার করে। পরে তাদের নোয়া’স আর্ক অ্যানিমেল রেসকিউ সেন্টারে দেওয়া হয়। তখন থেকেই কর্তৃপক্ষ তাদের একসঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।



নোয়া’স আর্কের সহাকারী পরিচালক ড্যানি স্মিথ বলেন, আমরা তাদের আলাদা রাখতে পারতাম, কিন্তু সে সময় তারা একটি পরিবারের মতো এসেছিল। যে কারণে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ তাদের একত্রে রাখারই সিদ্ধান্ত নেয়। আমাদের জানা মতে এটাই একমাত্র জায়গা যেখানে এই তিনটি হিংস্র পশুকে একত্রে রাখা সম্ভব হয়েছে। প্রায় এক যুগের বেশি সময় পর্যটকরা এদের বন্ধুত্বের সাক্ষী।

এই দীর্ঘ সময়ে তাদের একবারই আলাদ‍া করা হয়েছিল যখন ভাল্লুক বালোর সংক্রামণ চিকিৎসা করতে বাম পা থেকে জিন খুলতে ‍অস্ত্রপ্রচারের দরকার হয়েছিল।



সে সময় শের খান এবং লিওকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন তারা বালোর ফিরে আসারই অপেক্ষা করছে। একটু বড় হওয়ার পরে তাদের ভিন্ন জায়গায় রাখার সামর্থ্য আমাদের ছিল না। কিন্তু এখন তাদের দেখলেই মনে হবে যেন তারা একই মায়ের গর্ভে জন্ম নেওয়া তিন ভাই। তাদের এ বন্ধন এত বেশি শক্ত যে অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হলে তারা বন্ধুশূন্য হয়ে পড়বে।

তিনি আরও বলেন, বালোর সঙ্গে শের খানেরই বেশি ভাব। কারণ লিও দিনের বেশিটা সময় ঘুমিয়ে কাটাতেই পছন্দ করে।



আমেরিকান এই কালো ভাল্লুক বাংলাদেশি বাঘের ঘাড়ে হাত দিয়ে এমনকি গৃহপালিত বেড়ালের মতো জিহ্বা দিয়ে চেটেও আদর করে, এ দৃশ্য দেখলে সত্যিই অদ্ভুত এবং জাদুর মতো মনে হয়।

আবার লিও ঘুম থেকে জাগলে ক্ষুধা পাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনজন খেলতে থাকে। তিন শিকারি প্রাণীরই অন্যকে হত্যা করার ক্ষমতা থাকলেও অশ্চর্যজনকভাবে তারা একে অন্যের প্রতি খুবই সহনশীল আচরণ করে।



শের খান একটু গম্ভীর প্রকৃতির, নড়াচড়া কম করতে পছন্দ অথচ বালো তাকে দক্ষ হাতে পরিচালানা করে ঠিক খেলার সঙ্গী বানিয়ে নেয়। এখন নোয়া’র আর্কই যেন তাদের বাড়ি হয়ে উঠেছে। আর কখনও হয়তো বা তারা আলাদা থাকাতেও পারবে না।



ড্যানি স্মিথ আরও বলেন, তারা একসঙ্গেই ঘুমায় বলে তাদের থাকার ঘরটি খুবই মজবুত করে তৈরি করা হয়েছে। থাকার ঘরের সঙ্গে আমরা একটি চৌবাচ্চার ব্যবস্থাও করেছি। কারণ শের খান এবং বলো দুজনই পানিতে নামতে ভালোবাসে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০৬ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।