ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

দিবসকেন্দ্রিক ফুলের চাষ

শরিফুল ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১১
দিবসকেন্দ্রিক ফুলের চাষ

ফুল ফোটা না ফোটার ওপর কবির বসন্ত যেমন নির্ভর করে না, তেমনি ফুলচাষিদের কাছেও ফুল ফোটা অথবা ফুল চাষের জন্য বসন্ত কোনো ব্যাপার না। বাঙালি স্বভাবত ফুলপ্রেমী।

যখনই বিশেষ কোনো দিবস সামনে চলে আসে, তাকে উপলক্ষ করে জমে উঠে ফুলের ব্যবসা।

শীতকাল মানে ফুল চাষ, ব্যবসায়ীরা এখন এই ধারণা থেকে বের হয়ে আসছেন। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তারা আজ বিভিন্ন দিবসকেন্দ্রিক ফুল চাষ করছেন। সাভারের কয়েকটি গ্রামে মাঠের পর মাঠ ঘুরে চোখে পড়ল এমনই চিত্র। এখানকার ফুলচাষিরা সাভারে এনেছেন ফুল বিপ্লব।


শীতে সাধারণত বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষের মাধ্যমে এই ফুল বাণিজ্যের সুচনা হলেও জমজমাট হয় ফেব্রুয়ারি মাসে পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালবাসা দিবসে। এমনটাই বলছিলেন সাভার এলাকার শ্যামপুরের ফুল ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘সারা বছর ফুল চাষ হলেও ব্যবসা জমজমাট হয় শীতকালে বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে। ফুলের চাহিদা সবচে বেশি থাকে ভ্যালেন্টাইন ডেতে। এরপর পহেলা ফাল্গুন, ইংরেজি ও বাংলা নববর্ষ এবং একুশে ফেব্রুয়ারিতে।

তিনি আরো বলেন, ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’তে ফুলের বান্ডিল বিক্রি হয় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকায়। এরপর ইংরেজি নববর্ষ, পহেলা ফাল্গুন, পহেলা বৈশাখসহ বিভিন্ন দিবসেও ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় ফুল বিক্রি হয়। একই ফুল অফ সিজনে বান্ডিল প্রতি বিক্রি হয় মাত্র দেড়শ থেকে ২০০ টাকায়। ’

একই রকম কথা বললেন ফুল ব্যবসায়ী আরমান মিয়া। তিনি বলেন, ‘উল্লেখযোগ্য দিবসগুলোতে ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। তাই বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে আমরা ফুল চাষ করি। এমনভাবে সময় নির্ধারণ করে গাছের চারা লাগাই বা গাছের ডাল কাটি যাতে শীত আসার আগেই গাছে ফুল আসে। ফুলের একটা পর্যায় শেষ হলেও যাতে পরে আর একটা দিবসে ফুলের অভাব না হয়। ’

বিভিন্ন দিবসে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে একুশে ফেব্রুয়ারি ও পহেলা ফাল্গুনে গাঁদা ফুল, ভ্যালেন্টাইন ডে ও ফ্রেন্ডশিপ ডেতে গোলাপ ও গ্যালোটিলাস ফুলের চাহিদা বেশি থাকে। এছাড়া ইংরেজি ও বাংলা নববর্ষে চাহিদা বেশি থাকে গোলাপ, রজনীগন্ধা ও গ্যালোটিলাসের। তবে দিবস ছাড়াই সংস্কৃতিমনা বাঙালি তাদের দৈনন্দিন জীবনের আচার-অনুষ্ঠানে প্রচুর ফুল ব্যবহার করে। এজন্য কমবেশি সব ফুলের চাহিদা থাকলেও গোলাপের চাহিদা থাকে সবসময় শীর্ষে।

পৌনে চারশ গোলাপ জাতের মধ্যে বাংলাদেশে ৬-৭টির চাষ হয়। উল্লেখযোগ্য গোলাপ হলো বড় জাতের মেরিন্ডা, ছোট সাইজের চাম্পা গোলাপ, গন্ধ বেশি পাপা মিলনের আর দীর্ঘদিন স্থায়ী গোলাপ হল লিংকন। এছাড়া সাদা, লাল, হলুদ রঙের গোলাপ চাষ হয়।

সাভারের সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুরের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে এই গোলাপ চাষ করছেন। পাশাপশি অন্য ফুলের চাহিদা মেটাতে রাজাসন গ্রামে গ্যালোটিলাস ফুল বেশি চাষ হয়। গ্যালোটিলাসের মধ্যে রয়েছে সাদা, গোলাপি, হলুদ, বেগুনি, কমলা, বিস্কুট, নীল রঙের ফুল।

বাংলাদেশ সময় ২০৫২, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।