ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

জাবিতে পাখিমেলা ২০১১

এম ওলি, জাবি থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১১
জাবিতে পাখিমেলা ২০১১

‘পাখপাখালি দেশের রত্ন, আসুন সবাই করি যত্ন’ এই স্লোগানে ৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘পাখিমেলা-২০১১’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আয়োজনে এ মেলার সহযোগী সংগঠন হিসেবে আছে ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার, আরণ্যক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ বার্ড কাব ও পাখ-পাখালি ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি।



পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ মেলা করা হচ্ছে বলে জানান মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোঃ মফিজুল কবির।

২০০১ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পাখিমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে নিয়মিত প্রতি বছর পাখিমেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

দিনব্যাপী এ মেলায় থাকছে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখি দেখা প্রতিযোগিতা, পাখির আলোকচিত্র ও পত্র-পত্রিকা প্রদর্শনী, টেলিস্কোপ দিয়ে শিশু-কিশোরদের পাখি পর্যবেক্ষণ, পাখিবিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা ও কুইজ প্রতিযোগিতা, আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পাখিচেনা প্রতিযোগিতা (অডিও-ভিডিওর মাধ্যমে), পুরস্কার বিতরণী ও পাখিবিষয়ক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছোট বড় প্রায় ১০ থেকে ১২টি লেক রয়েছে। প্রতি বছর এই লেকগুলোতে অতিথি পাখির আগমন ঘটে। এবারও অতিথি পাখির আগমনে মুখর হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এ ক্যাম্পাস। অতিথি পাখি দেখতে প্রতিদিন হাজারও শিার্থীসহ অসংখ্য পাখিপ্রেমী দর্শনার্থী ভিড় জমাচ্ছে ক্যাম্পাসজুড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এবং জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হলসংলগ্ন দুটি লেকে অতিথি পাখির আনাগোনা বেশি থাকে। অতিথি পাখিরা এ লেকগুলোকে অভয়াশ্রম হিসেবে বেছে নেয়।

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করে। ফলে উত্তরের শীতপ্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, নেপাল, জিনজিয়াং ও ভারতে প্রচুর তুষারপাত হয়। তুষারপাতে টিকতে না পেরে পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে পাড়ি জমায় বিভিন্ন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। এ সময় হাজার হাজার অতিথি পাখি দণি এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশের  যেসব এলাকায় এসব পাখি আসে তার মধ্যে জাবি ক্যাম্পাস অন্যতম। এ দেশে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর, নভেম্বর-জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল এই তিনটি পর্যায়ে অতিথি পাখিরা আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা বাংলাদেশে আসে। আবার মার্চেও শেষদিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মূলত দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে এ ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায়, শুকনা স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি পানিতে থাকে ও বিশ্রাম নেয়। এদের বেশির ভাগই হাঁসজাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। মূলত এরাই সবার নজরে  আসে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা  ও কামপাখি অন্যতম। এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি, বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তে চাড়া প্রভৃতি পাখিও এসেছে।

তবে ক্যাম্পাসে আগত পাখির প্রজাতি ও পরিমাণ প্রতি বছর কমছে। আগে এখানে ৪৫-৫০ প্রজাতির পাখি এলেও গত কয়েক বছর ধরে এ হার কমছে। ক্যাম্পাসে আগত পাখিরা খাদ্যের সন্ধানে পার্শ্ববর্তী বংশাই নদী ও স্থানীয় খালে বিচরণ করে। তখন স্থানীয় লোকজনের হাতে শিকার ও উত্ত্যক্তের সম্মুখীন হয়। এর ফলে অতিথি পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ সূত্র জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সময় ১৪০৫, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।