ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

আলীরাজের হাতে তুলে দেওয়া হলো জাদুর ‘অস্কার’

রবাব রসাঁ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১১
আলীরাজের হাতে তুলে দেওয়া হলো জাদুর ‘অস্কার’

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জাদুশিল্পী আলীরাজের হাতে তুলে দেওয়া হলো জাদুর জগতে ‘অস্কার’ নামে খ্যাত ‘দ্য মার্লিন এওয়ার্ড’। ৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁও-এ এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই শিল্পীর হাতে পুরস্কারটি তুলে দিলেন জাদুকরদের সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যাজিশিয়ান সোসাইটি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট টনি হাসিনি।



এই প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশি জাদুশিল্পী পেলেন এই দুর্লভ পুরস্কার। প্রতি তিন বছর পর পর ব্যাপক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। আগামী ২ মার্চ এই পুরস্কার বিতরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসে।

তবে আলীরাজ তার পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠানের কারণে সেখানে উপস্থিত থাকে পারবেন না বলেই ঢাকায় এসে এই পুরস্কারটি আগেভাগেই হস্তান্তর করা হলো। বলা বাহুল্য, লাস ভেগাসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন পৃথিবীর বিখ্যাত জাদুশিল্পীরা।

টনি হাসিনি তার বক্তৃতায় বলেন, ‘আমি ইন্টারন্যাশনাল ম্যাজিশিয়ান সোসাইটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই সংগঠনের ৩৭ হাজার সদস্যের পক্ষ থেকে আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিচ্ছি যে, আমাদের বিচারকমন্ডলী আলীরাজকে জাদুর জগতে ‘অস্কার’ হিসেবে খ্যাত ‘দ্য মার্লিন এওয়ার্ড’-এর জন্য নির্বাচিত করেছেন। ’

‘আমরা আলীরাজকে নির্বাচিত করেছি তার কাজের মৌলিকতা, নিজস্বতা এবং ঐতিহ্যের প্রতি তার আনুগত্যে মুগ্ধ হয়ে,’ বাংলাদেশি এই জাদুকর সম্পর্কে হাসিনির মন্তব্য।

এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন হ্যারি বস্ন্যাকস্টোন, ডেভিড কপারফিল্ড এবং ক্রিস অ্যাঞ্জেলের মতো সাড়া জাগানো জাদুশিল্পীরা।

বাংলানিউজকে হাসিনি বলেন, বর্হিবিশ্বে, বাংলাদেশ তথা এই উপমহাদেশকে জাদুর অন্যতম উৎপত্তিস্থান হিসেবে শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়। ‘জাদুশিল্পে বাংলাদেশের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। তবে বিভিন্ন কারণে জনমনে জাদু সম্পর্কে বাজে ধারণা সৃষ্টি হয়ে আছে। এসব ভুল ধারণা থেকে তরুণদের মুক্ত করতে হবে। তাদের ভেতর সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এবং জাদুশিল্পের আনন্দময় দিকগুলো তুলে ধরতে হবে,’ হাসিনির অভিমত।

১৯৪১ সালে উত্তর সাইপ্রাসে জন্মগ্রহণকারী তুর্কি বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিক হাসিনি বিশ্বাস করেন, প্রাচ্যের জাদুশিল্প মরমী ভাবধারা সমৃদ্ধ। ‘তাই পাশ্চাত্যের জাদুশিল্পীদের ভেতর প্রাচ্যের জাদু সম্পর্কে ব্যাপক আগ্রহ আছে। বাংলাদেশের আলী রাজ তার শিল্পকর্ম প্রদর্শন করে আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করেছেন। ’

জাদুশিল্পী আলীরাজ নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। জাদুর জগতে সবচেয়ে বড় পুরস্কার পেয়ে আমি ভীষণ আনন্দিত। এই গৌরব গোটা দেশের। ’ বাংলানিউজের কাছে অভিমত ব্যক্ত করে তিনি আরো বলেন, ‘এর ফলে আমাদের দেশের কথা বহির্বিশ্বের লোকজন আরো ভালো করে জানতে পারবেন। ’

তিনি আশা করেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাওয়া এই পুরস্কার বাংলাদেশের এই শিল্পকলা সম্পর্কে দেশের তরুণদের মনে আগ্রহ সৃষ্টি করবে। ‘আমি আমাদের দেশের জাদুশিল্পীদের অনুরোধ করব তারা যেন এই দেশের ঐতিহ্যবাহী জাদুগুলোকেই সুন্দর করে পরিবেশন করেন। এর ফলে একদিকে যেমন আমাদের ঐতিহ্য রক্ষা পাবে অন্যদিকে জাদুশিল্পে আমাদের সমৃদ্ধি সম্পর্কে বর্হিবিশ্ব অবহিত হবে। ’

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়ার আন্তর্জাতিক পরামর্শক  রুবেন অ্যাডগার্ডো ভ্যানকুয়েজসহ অনেনে।

বাংলাদেশ সময় ১২৫৩, জানুয়ারি ৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad