ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের পথ চলার ৫০ বছর

এম. ওলি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১০
আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের পথ চলার ৫০ বছর

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ অন্যতম। ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত।

১৯৬০ সালে  প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানটি ৫০ বছর পেরিয়ে ৫১ বছরে পদার্পণ করেছে। এ উপলে আগামী ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর জমকালো এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে প্রাক্তন শিার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে কলেজ ক্যাম্পাস। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য হাজারো কর্মব্যস্ততা ফেলে রেজিস্ট্রেশন করতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন শিার্থীরা। রেজিস্ট্রেশন করতে এসে দীর্ঘদিন পর পুরনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে খোশগল্পে মেতে উঠতে দেখা গেছে অনেককে। সব মিলে এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।

সুবর্ণ জয়ন্তী উপলে স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসকে সাজানো হচ্ছে বর্ণিল রুপে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভবন নতুন রঙে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। স্কুল ও কলেজের ভবন থেকে শুরু করে মাঠের গাছ সব জায়গায় করা হয়েছে আলোকসজ্জা। ব্যানার-ফেস্টুনে ভরে উঠেছে পুরো মাঠ।

সুবর্ণ জয়ন্তীতে প্রায় ছয় হাজার সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীর সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও আদমজী কলেজের অধ্য কর্নেল মোহাম্মদ গোলাম হোসেন সরকার।

প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
 
আদমজী ক্যান্টমেন্ট স্কুল ঢাকা শহরের একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি প্রথমে আলহাজ গুল মোহাম্মদ আদমজীর পৃষ্ঠপোষকতায় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল নামে স্থাপিত হয়। পরবর্তী সময়ে এটিকে কলেজে রুপান্তরিত করা হয়। প্রশাসনিক কারণে ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসে স্কুলটিকে কলেজ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করা হয় এবং নতুন নাম হয় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ।

১৯৫৮ সালের ১৩ জানুয়ারি বেগম গুল মোহাম্মদ আদমজী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। মূল ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলে ১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারি (বুধবার) পাকিস্তানের তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান প্রতিষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন। বর্তমানে স্কুলটিতে বাংলা ও ইংলিশ দুই মাধ্যমে প্রায় ২৬৭০ জন শিার্থীকে পাঠদান করা হয়। এছাড়া বর্তমানে স্কুলটিতে ৯১ জন  শিক্ষক-শিক্ষিকা পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন।

আদমজী কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

আদমজী কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬০ সালে। এটি তদানীন্তন পাকিস্তানের শিল্পপতি গুল মোহাম্মদ আদমজীর অর্থায়নে ইংলেন্ডের আদি পাবলিক স্কুল ইটন ও হ্যারো-এর আদর্শে নির্মিত হয়। স্বাধীনতার আগে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাদান মাধ্যম ছিল ইংরেজি। তখন এটি ইংরেজি মাধ্যমের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষার মাধ্যম হয় বাংলা। বর্তমানে এখানে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষার পাশাপাশি ডিগ্রি পাস কোর্স এবং ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স মাস্টার্স ও বিবিএ কোর্স চালু আছে। ছাত্ররাজনীতি বিবর্জিত এ কলেজে সহশিক্ষার পাশাপাশি কঠোর নিয়মানুবর্তিতা, সংযম ও শৃঙ্খলার মাধ্যমে প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে একজন আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় রয়েছে। কলেজটি ২০০০ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করেছে এবং ২০১০ সালে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই কলেজ ঢাকা বোর্ডে ১৬তম স্থান করেছে। কলেজে বর্তমানে ৮০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ২৭৭৮ জন শিক্ষার্থীকে পাঠ দান করছেন।

সুবর্ণ জয়ন্তী উপলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্মৃতিচারণ, ফটোসেশন, লেজার শো, পুরস্কার বিতরণী প্রভৃতি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন মিলা, জেমস, সোলস, আর্টসেল, হায়দার হোসেন। এছাড়া প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাও গান পরিবেশন করবেন।

দু দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের প্রথম দিন ২৩ তারিখ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ড. কাজী রেজাউল হক ও দ্বিতীয় দিন ২৪ তারিখ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ আবদুল মুবীন।

সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও আদমজী কলেজের অধ্য কর্নেল মোহাম্মদ গোলাম হোসেন সরকার বলেন, সূবর্ণ জয়ন্তীর আয়োজন প্রায় শেষ। আশা করছি অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারব।

দু দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

বাংলাদেশ সময় ১৮৫০, ডিসেম্বর ২২, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।