ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

চারুকলায় নবান্ন উৎসব ১৪১৭

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১০
চারুকলায় নবান্ন উৎসব ১৪১৭

বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী ও মাটির সাথে চিরবন্ধনযুক্ত উৎসব ‘নবান্ন’। এটি মূলত কৃষিনির্ভর উৎসব হলেও তা ঋতুমুখী উৎসবও বটে।

আমাদের দেশে হেমন্তকালে এ উৎসব পালিত হয়। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের ১ তারিখে। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নতুন ফসল। কিন্তু আক্ষেপের বিষয়,  আমরা প্রায় ভুলতেই বসেছি, আমাদের সেই ঐতিহ্য, কৃষ্টি, নতুন ধানের খই, মুড়ি-মুড়কি আর হরেকরকমের পিঠা-পায়েসের অতুলনীয় স্বাদ আর নতুন ফসল তোলার আনন্দে সারারাত ধরে চলা ঐতিহ্যবাহী গানের আসর।

কিন্তু কয়েকজন তরুণ সংস্কৃতিকর্মীর উদ্যোগে ‘জাতীয় নবান্নোৎসব উদযাপন পর্ষদ’ শহুরে নাগরিকদেরও মনে করিয়ে দিতে চায় আমাদের সেই নিজস্ব ঐতিহ্যকে। এ কারণে তারা গত ১২ বছর ধরে আয়োজন করে আসছেন ‘নবান্ন’ উৎসবের। ১৪০৬ বঙ্গাব্দে এ উৎসবটি প্রথম শুরু হয়েছিল টিএসসিতে। পরে ১৪০৭ সালের ৩ অগ্রহায়ণ এ আয়োজন চলে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় এবং সিদ্ধান্ত হয় প্রতি বছর ১ অগ্রহায়ণ পালন করা হবে এ উৎসব।

আজ ১৫ নভেম্বর ২০১০ [১ অগ্রহায়ণ ১৪১৭] সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় জাতীয় নবান্ন উৎসবের। চারুকলায় সকাল ৭টা ১ মিনিটে বাঁশি, দোতরা ও তবলার সহযোগে দেশীয় যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় এ উৎসব। ৯টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দেশের ১২জন কৃষক-কৃষানী।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শাহরিয়ার সালাম। লায়লা হাসানের সভাপতিত্বে আরো অংশ নেন শুভ রহমান। ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বাবুল বিশ্বাস ও সঞ্চালনা করেন মানজার চৌধুরী সুইট। পর্ষদের নতুন লোগো উন্মোচন করেন প্রবীণ শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী।

শাহরিয়ার সালাম বলেন, ‘বর্তমান সরকার যদি পহেলা অগ্রহায়ণকে জাতীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করে দেন তাহলে দেশের এই ঐতিহ্যবাহী তাহলে দেশের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব নতুন জীবন লাভ করে’।

সকাল ১০টায় সবার অংশগ্রহণে শুরু হয় নবান্ন শোভাযাত্রা। এরপর অনুষ্ঠানে গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন দেশের বিশিষ্ট সঙ্গীত, নৃত্যশিল্পী  ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সদস্যরা। চলে ছোটদের ছবি আঁকা ও প্রদর্শনী। এছাড়া উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে পরিবেশন করা হয় মুড়ি-মুড়কিসহ বিচিত্র ধরনের পিঠা।

বেলা ১২টা থেকে তিনটা পর্যন্ত মঞ্চের পরিবেশনা বন্ধ থাকলেও প্রদর্শনী চলে। বেলা তিনটা থেকে ঢাক- ঢোল,  বাউলগান, লাঠিখেলা, কবিতা আবৃত্তি, নাচ ও গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। মানিকগঞ্জের চাঁনমিয়া ও তার দল পরিবেশন করবে ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। বাউলগানে অংশ নেবেন পাগলা বাবুল, বাবুল সরকার, ইবাল সাঁই ও আলম দেওয়ান।

এছাড়া সারা দিনের উৎসবে অংশ নেবেন দেশের স্বনামখ্যাত শিল্পীরা ও সংগঠন। এর মধ্যে সঙ্গীতে অংশ নেন উদীচী, সুরবিহার, আলোর ভুবন, খেলাঘর, সত্যেন সেন শিল্পী সংস্থা, নিবেদন, কচিকাঁচার মেলা, ওস্তাদ মমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমি, তপন মাহমুদ, খায়রুল আনাম শাকিল, মলয় কুমার গাঙ্গুলীসহ দেশের অনেক উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা।

উৎসব উপলক্ষে পর্ষদের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা হয় একটি স্মারক সংকলন, পোস্টার ও শুভেচ্ছাপত্র।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ১৪১০, নভেম্বর ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।