ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

বাঁশ ও বেতের ঝুড়ি বদলে দিয়েছে দরুইন গ্রামের চিত্র

উজ্জল চক্রবর্তী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১০
বাঁশ ও বেতের ঝুড়ি বদলে দিয়েছে দরুইন গ্রামের চিত্র

বাঁশ ও বেতের ঝুড়ি শিল্প বদলে দিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের দরুইন গ্রামের চিত্র। এই গ্রামে বাস করে ২০টি হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিবার।

যাদের সবাই বাঁশের বেত দিয়ে ঝুড়ি বানিয়ে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এক সময় এই পরিবারগুলোর দারিদ্রতা ছিল নিত্য সঙ্গী। পরিবারগুলোতে অভাব অনটন থাকায় জীবন নির্বাহ করা ছিল খুবই কষ্টের। বাঁশ-বেতের ঝুড়ি শিল্প বদলে দিয়েছে তাদের ভাগ্য। যেখানে তাদের অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাতে হত সেখানে আজ তারা সবাই অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল। বিনোদন হিসেবে রয়েছে সবার ঘরে টিভি-ভিসিডি। দিনবদলের পাশাপাশি ছেলেমেয়েদেরকে স্কুলে পাঠিয়ে শিক্ষার পাশাপাশি কর্মজীবি করে গড়ে তুলছে। এ পেশায় স্বাবলম্বী হওয়ায় বাপ-দাদার পেশাকে তারা আকড়ে ধরে রাখতে চায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই পরিবারগুলোর সবাই বাঁশ বেত দিয়ে ঝুড়ি তৈরি নিয়ে ব্যস্ত। কেউ বাঁশ টুকরো করছে, কেউ আবার বেত ফাড়ছে, আবার কেউ সেই বেত দিয়ে ঝুড়ি বুনছেন।

বাড়ির উঠানে  নিবিড় মনে বেত দিয়ে ঝুড়ি বুনতে থাকা মালতি রানী (৫৫) বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন আমি তিনটি ঝুড়ি তৈরি করতে পারি। বাজারে প্রতিটি ঝুড়ি বিক্রি হয় ৪০-৪৫ টাকায়। সদ্য বিধবা মাধবী রানী বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর এই ঝুড়ি বিক্রির টাকা দিয়েই আমার সংসার চলছে।

এই বাঁশ আর বেত কোথা থেকে আনা হয়, জানতে চাইলে এই গ্রামের বয়োবৃদ্ধ শচীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় সিআন্তবর্তী মোগড়া বাজার থেকে আমরা বাঁশ কিনি। প্রতিটি বাঁশের দাম ১৮০ থেকে থেকে ২০০ টাকা। একটি বাঁশ দিয়ে ৫-৬ টি ঝুড়ি তৈরি করা যায়। ঝুড়ি বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে হয় না। ক্রেতারা বাড়ি থেকেই কিনে নিয়ে যায়।

ঝুড়ি বিক্রেতা ননী গোপাল বলেন, প্রতিদিন এখানে ১৫০/২০০ ঝুড়ি বিক্রি হয়। এই ঝুড়িতে করে ভারতে মাছ রফতানি করা হয়। তাই স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা আরো বেশি। কিন্তু পুঁজির অভাবে বাঁশ কিনতে না পারায় তারা বাজারের চাহিদা মিটাতে পারছে না। তিনি আরো বলেন, এনজিওগুলো ঋণ দিলেও কড়া সুদের কারণে বেশির ভাগই ঋণ নিতে চায় না।

মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নান্নু মিয়া বলেন, সরকারীভাবে আর্থিক সহযোগিতা পেলে এই এলাকায় ক্ষুদ্র কুটির শিল্প সহ ঝুড়ি শিল্পের আরো ব্যাপক প্রসার ঘটবে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় : ১৭৪৬, নভেম্বর ৮, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।