ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

পাংশায় পদ্মায় ধরা পড়েছে ‘ঘড়িয়াল’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
পাংশায় পদ্মায় ধরা পড়েছে ‘ঘড়িয়াল’ পদ্মা নদীতে ধরা পড়া ঘড়িয়ালটি। ছবি: বাংলানিউজ

রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুরে পদ্মা নদী থেকে ধরা পড়েছে মিঠাপানির মহাবিপন্ন প্রজাতির প্রাণী ‘ঘড়িয়াল’।

বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ী বন কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) মাছ শিকারি মো. বাদশা সরদারের জালে আটকা পড়ে।  

ঘড়িয়ালটি গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে সংরক্ষণের জন্য রাজবাড়ী বন বিভাগ উদ্ধার করে বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বন্যপ্রাণী ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করেছে।

জানা গেছে, হাবাসপুর পদ্মা নদীতে সৌখিন মাছ শিকারি মো. বাদশা মিয়া গত ২০ অক্টোবর দুপুরের দিকে সআগের দিনের নদীতে ফেলা জালে ৪ ফিট ৮ ইঞ্চি লম্বা ঘড়িয়ালটি ধরা পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন ঘড়িয়ালটি উদ্ধার করে জেলা বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে।

বাংলাদেশে পদ্মা, যমুনা ও ব্রক্ষপুত্র এবং এগুলোর শাখা-প্রশাখায় এক সময় প্রচুর দেখা যেত। কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশে প্রজননক্ষম কোনো ঘড়িয়াল প্রকৃতিতে নেই বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
ঘড়িয়াল বিপন্ন প্রাণী যা বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ দ্বারা সংরক্ষিত।
সৌখিন মাছ শিকারি মো. বাদশা সরদার বাংলানিউজকে বলেন, গত ২০ অক্টোবর দুপুরে জালে তুলতে গিয়ে দেখি ঘড়িয়াল আটকা পড়েছে। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় ঘড়িয়ালটি উপজেলা প্রশাসনের কাছে দিয়ে দেই।
জেলা বন কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, খবর পেয়ে ঢাকা বন্যপ্রাণী ইউনিটের কর্মকর্তারা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট আসেন। পরে ঘড়িয়ালটি সংরক্ষণের জন্য তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঢাকা বন্যপ্রাণী ইউনিটের পরির্দশক মো. আব্দুল্লাহ আস সাদিক বাংলানিউজকে জানান, ঘড়িয়ালটি গাজিপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে সংরক্ষণ করা হবে। সাফারি পার্কে আরও তিনটি ঘড়িয়াল রয়েছে। উদ্ধার হওয়া নতুনকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ওই তিনটি সঙ্গে রাখা হবে।

ঘড়িয়াল ৫০ থেকে ৬০ বছর বাঁচে। প্রায় দুই হাজার মিলিয়ন বছর ধরে ঘড়িয়াল পৃথিবীতে বেঁচে আছে। পুরুষ ঘড়িয়ালের ওপরের চোয়ালে, নাকের ঠিক ওপরে, কলস বা ঘড়া আকৃতির একটি পিণ্ড থাকে। এ কারণেই সম্ভবত ঘড়িয়াল নাম। বর্তমানে পৃথিবীতে মাত্র ২শ’ বুনো ঘরিয়াল রয়েছে। যার সবগুলোই বাংলাদেশ, ভারত, নেপালের নদীগুলোতে। এদের সবচেয়ে পছন্দ বালুচরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ পোহানো। এরা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। বরং রাক্ষুসে মাছ খেয়ে ঘড়িয়াল প্রাকৃতিক খাদ্য শৃঙ্খল ঠিক রাখে।  

আঁশবিহীন মাছ, বিশেষ করে বোয়াল, আইড়, গুঁজি, পাঙ্গাস বেশি পছন্দ করে এরা। লম্বা চোয়াল মাছ ধরার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। মাছ প্রধান খাবার বলে এরা মেছো কুমির নামেও পরিচিত।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচারের (আইইউসিএন) মহাবিপদাপন্ন প্রাণীর তালিকায় যার নাম লেখা আছে লাল হরফে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।