ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বিরল প্রজাপতি নীল শিখীপর্ণ

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২০
বিরল প্রজাপতি নীল শিখীপর্ণ বর্ণিল প্রজাপতি ‘নীল শিখীপর্ণ’। ছবি: মুশফিক আবীর উপন্যাস

মৌলভীবাজার: প্রকৃতিতে প্রজাপতির অবস্থান সুস্থতার জানান দেয়। যেখানে যে পরিবেশে প্রজাপতির সংখ্যা বেশি সেখানকার প্রতিবেশ ব্যবস্থা যে প্রকৃতিময় সেটা বলা যায়।

দুই ডানায় ভর করে ছন্দময়তায় এগিয়ে যাওয়া মনোমুগ্ধকর উড়ন্ত কীটের নাম প্রজাপতি।  

বাংলাদেশের প্রকৃতিতে নানান ধরনের প্রজাপতির বিচরণ। তাদের বর্ণিল রূপ-সৌন্দর্য মানুষের হৃদয়কে দারুণভাবে আকর্ষণ করে। অনেকেরই ভালোলাগার বস্তুতে পরিণত হয়ে যায় প্রজাপতি। কোনো কোনো প্রজাতির আবার বিরল, সহজে দেখা যায় না।  

প্রজাপতি আলোকচিত্রী ও সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মুশফিক আবীর উপন্যাস বাংলানিউজকে বলেন, এ প্রজাপতির প্রচলিত বাংলা নাম ‘নীল শিখীপর্ণ’। ইংরেজি নাম Blue Pansy এবং বৈজ্ঞানিক নাম Junonia orithya। নিম্ফেলিডি পরিবারের এই প্রজাপতিটির ডানার প্রসারতার দৈর্ঘ্য প্রায় ৪৪-৫৫ মিলিমিটার। এই ছবিটি আমি জয়পুরহাট থেকে তুলেছি।  

এর নামকরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এই ‘নীল শিখীপর্ণ’ প্রজাপতির নামকরণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএ বাশার। বাংলাদেশে Junonia গণের অন্তর্ভুক্ত আরও পাঁচ ধরনের প্রজাপতি পাওয়া যায়। এগুলো হলো Junonia iphita, Junonia hierta, Junonia lemonius, Junonia almana, Junonia atlites। এই প্রজাপতিগুলোর ডানার উপরের অংশের রং আলাদা আলাদা।  

বাংলাদেশ ও ভারতে এই প্রজাপতিকে Blue Pansy বলা হলেও দক্ষিণ আফ্রিকাতে এই প্রজাপতিকে Eyed Pansy বলা হয়। আবার অস্ট্রেলিয়াতে এই প্রজাপতিকে Blue agrus বলা হয়। পৃথিবীতে এই প্রজাপতিটির প্রায় ২৬ ধরনের প্রজাতি রয়েছে বলে জানান উপন্যাস।  

শারীরিক সৌন্দর্য ও স্বভাব সম্পর্কে এ আলোকচিত্রী বলেন, ব্লু পানসি প্রজাপতিটির নজরকাড়া ব্যাপার হলো এর উজ্জ্বল নীল রং, যা হৃদয়কে সহজেই আকর্ষণ করে। পুরো শরীরজুড়েই তার অপূর্ব রঙের সমাহার। এই প্রজাপতিটির পুরুষরা তাদের ডানার উপরে অংশে ধারণ করে উজ্জ্বল নীল রং আর মেয়েরা হয় অনুজ্জ্বল। বিরল এই প্রজাপতি মৃদু রোদে ভেজা বালি, বিভিন্ন প্রাণীর মল বা কখনো কখনো শুকনো পাথর থেকে খনিজপদার্থ আহরণ করে। এরা খুব চঞ্চল হয় এবং দ্রুত ওড়ে। তবে বিশ্রাম প্রয়োজন হলে এরা গাছের পাতার উপরে বসে বিশ্রাম নেয়।

‘নীল শিখীপর্ণ’ প্রজাপতি মাঝে মধ্যে ঢাকায় দেখা যায়। ইদানীং রাজশাহী, ঢাকা জেলার কেরাণিগঞ্জ, জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুরে, রাজশাহী জেলার চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রভৃতি স্থানেও দেখা মিলেছে। এই প্রজাতিকে এজন্য যাযাবর বা ভ্রমণশীল প্রজাপতিও বলা হয়। স্বভাবতই এরা এক স্থানে বেশিদিন থাকতে পছন্দ করে না। ’ 

জীববৈচিত্র্য গবেষণা ও সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থার ‘আইইউসিএন’ ‘লাল তালিকা’-তে এই প্রজাপতিকে বাংলাদেশে অরক্ষিত (VU) বলে ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান উপন্যাস।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।