ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২, ০৮ মে ২০২৫, ১০ জিলকদ ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

দুই রোগে বিপন্ন চা-গাছ

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২৭, নভেম্বর ১৯, ২০১৮
দুই রোগে বিপন্ন চা-গাছ একটি চারা গাছে দু’টি রোগের প্রাদুর্ভাব। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: সবুজ গালিচামোড়া চা বাগানের নয়নাভিরাম রূপ দু’চোখ ভরে শুধু দেখতেই ইচ্ছে হয়। কিন্তু যখন চা গাছের দুঃসময় ধেয়ে আসে। তখন সবুজময় চা গাছ সৌন্দর্য্য হারিয়ে হয়ে পড়ে ধূসর-ম্লান।

রোগাক্রান্ত এসব গাছগুলো তখন প্রাণে বেঁচে উঠতে চায় বারবার। নতুন করে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ ছড়াতে চায় চা প্রেমীদের জন্য।

সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানে দেখা গেছে, একটি চারা গাছে দু’টি রোগের প্রাদুর্ভাব। মৃত্যুর প্রহর গুনছে রুগ্ন সেইসব চা গাছ।

অভিজ্ঞ টি-প্লান্টার এবং বারোমাসিয়া চা বাগানের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক হক ইবাদুল বাংলানিউজকে বলেন, এ চাগাছ দু’টো রোগাক্রান্ত। প্রথম রোগটি নাম হলো: টি-টারমাইড (Tea-Termite)। বাংলায় বলে চায়ের উঁইপোকা। অর্থাৎ চা গাছে উঁইপোকা আক্রমণ ঘটেছে। আর দ্বিতীয় রোগটি হলো- ফাঙ্গাস ডিজিজেস (fungus disease) অর্থাৎ ছত্রাকজনিত রোগ। ইংরেজিতে এ ছত্রাকজনিত রোগকে বলা হয় Poria root disease এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Poria hypola teritia।

তিনি আরও বলেন, এ ‘পুরিয়া’ ছত্রাকের কারণে শিকড় থেকে এ রোগের সৃষ্টি হয়ে আস্তে আস্তে উপরে উঠে আসে। এ রোগের দমনপ্রক্রিয়া হলো- মাটিতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করতে হবে। তবে সবচেয়ে উত্তম পন্থা হলো- ছত্রাকে আক্রান্ত চা গাছগুলো মাটি থেকে তুলে ফেলা।

টি-টারমাইড রোগ সম্পর্কে অভিজ্ঞ টি-প্লান্টার বলেন, এ রোগ থেকে বাগানের চা গাছগুলো বাঁচানোর অন্যতমপন্থা হলো মাটি খুঁড়ে উইপোকার রানীকে খুঁজে বের করে মেরে ফেলা। উইপোকার রানী মাটি ৩/৪ ফুট গর্তের নিচে থাকে। এ রানীই লাখ লাখ বাচ্চা তৈরি করতে সক্ষম।

‘আমরা আমাদের চা বাগানগুলোকে টি-টাইমাইড রোগের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য উঁইপোকার রানীকে মেরে ফেলি। পুরুষ উঁইপোকাগুলো সহজে মারা যায়। কিন্তু রানী বেঁচে থাকে অনেকদিন। রানীকে মেরে ফেললেই ওই এলাকার সব উঁইপোকা মারা যাবে এবং নতুন করে জন্মানোর সুযোগ পাবে না। ’

সিলেট অঞ্চলের চা বাগানগুলোর গাছে এখন ‘পুরিয়া’ ছত্রাকের আক্রমণ ভয়াবহ। এর ফলে ব্যাপকহারে চা গাছ মারা যাচ্ছে বলে জানান অভিজ্ঞ টি-প্লান্টার হক ইবাদুল।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৮
বিবিবি/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।