ঢাকা, বুধবার, ১ কার্তিক ১৪৩১, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২ রবিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সোয়ানে যোগ দিলো বাংলাদেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০১৬
সোয়ানে যোগ দিলো বাংলাদেশ

ঢাকা: প্রতিষ্ঠার ৫ বছর পর সাউথ এশিয়া ওয়াইল্ড লাইফ এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কে (সোয়ান) আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ।

সোমবার (৩ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি অনুমোদনের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার এ ফোরামে যোগ দিলো বাংলাদেশ।


 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ১২২তম সভায় সোয়ান’এ বাংলাদেশের অর্ন্তভুক্তির বিষয়টির অনুমোদন দেওয়া হয়।
 
বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সোয়ান হলো এমন একটি সংস্থা, যা আঞ্চলিক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সম্মতিতে ভুটানের পারো’য় সোয়ান গঠিত হয়। এরই মধ্যে সকল সদস্য দেশ এটাকে অনুমোদন দিলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সময় লাগলো ৫ বছর।
 
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, সকল সদস্য রাষ্ট্র এ অঞ্চলের জীব বৈচিত্র রক্ষা, শিকার প্রতিরোধ, পরিবেশ- প্রতিবেশ সংরক্ষণ, বৃক্ষ-গুল্ম রক্ষা ও বৈচিত্র ধরে রাখতে অনেক আগেই সোয়ান’কে তাদের মন্ত্রিসভায় পাশ করার মাধ্যমে কার্যকর করেছে। একটু দেরি হলেও বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা তাদের ১২২তম বৈঠকে সংস্থাটিতে বাংলাদেশের অর্ন্তভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে।
 
মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী তথা জীবজন্তু পাচার সম্পর্কিত অপরাধ একযোগে মোকাবেলা করার ব্যাপারে বাংলাদেশও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের সঙ্গে এক যোগে কাজ করতে সম্মত হলো।

বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়া সংস্থার অন্য দেশগুলো হলো- আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ।

এর আগে এ বছরের এপ্রিলের প্রথম দিকে জীবজন্তু পাচার সম্পর্কিত অপরাধ বন্ধে সহযোগিতার অংশ হিসেবে সাউথ এশিয়া ওয়াইল্ড লাইফ এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্ক (সোয়ান) এর অধীনস্থ সকল সদস্য দেশের বিভিন্ন সংস্থার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ভারতের দিল্লিতে, সে দেশের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (সিবিআই) সদর দপ্তরে।

ওই বৈঠকে ভারতীয় গোয়েন্দাদের প্রকাশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোতে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে চারটি করে চিতাবাঘ শিকার হয়। এছাড়া ২০১৩ সালের প্রথম ছয় মাসে এ অঞ্চলে ৪০টিরও বেশি বাঘ হত্যা করা হয়েছে বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
 
সোয়ান তার ওয়েবসাইটে বলছে, ইন্টারপোল- এর পরিবেশ অপরাধ কর্মসূচির আওতায় সোয়ান এর বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কারিকুলাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও ওয়াল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো এবং ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটিসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞরা সোয়ান’কে কার্যকর করতে কাজ করছেন।
 
পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছরের এপ্রিলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোয়ান এর ধারণাকে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেন। সংস্থাটিকে কার্যকর করতে এবং দক্ষিণ এশিয়ার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। কারণ ভারতের সঙ্গে প্রায় সকল সদস্য রাষ্ট্রেরই আন্তঃদেশীয় সীমান্ত রয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার বন্য প্রাণীর বড় বাজার ও পাচার রুটের অবস্থান ও ভারতসংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থিত। বিষয়টিকে তাই ভারতও গুরুত্ব দিয়েছে।
 
বাংলাদেশের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় বলছে, গত এপ্রিলে দিল্লির সিবিআই সদর দফতরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ভারতের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী জয়ন্তী নটরাজান জানান, ভারতের ১৯৭২ সালের প্রাণী সুরক্ষা আইন এ অঞ্চলের বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় যথেষ্ট নয়। প্রাণী সম্পর্কিত অপরাধ দমনে একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রয়োজন। এ কারণেই সোয়ান এর সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিতভাবেই এই অপরাধ দমনে সহায়ক হবে।
 
সোয়ানের ওয়েব সাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী, সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হলো- কার্যকরভাবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক স্থাপন করা। যার মাধ্যমে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম (যেমন: বন্য প্রাণী পাচার, শিকার, বন্যপ্রাণীর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রয়, পাচার) দ্রুত চিহ্নিত করে তা স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রতিরোধ ও মোকাবেলা করা। সংস্থাটি এ জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য আদান প্রদান, নতুন নতুন গবেষণা, অভিজ্ঞতা বিনিময়, কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ, সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং উৎসাহ দিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৬
আরএম/আরআইএস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।