ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

জুটি সংকটে মৌসুমী

বিনোদন প্রতিবেদক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১২
জুটি সংকটে মৌসুমী

এখনও ঢালিউডে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন নায়িকা মৌসুমী। তবে কমে গেছে তার অভিনীত ছবির সংখ্যা।

কারণ আর কিছু নয়, জুটি সংকট। মৌসুমীর বিপরীতে অভিনয়ের জন্য মানানসই নায়ক ঢালিউডে তেমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এই সময়ের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের বিপরীতে মৌসুমীকে একেবারেই মানায় না। এটি মৌসুমী আর শাকিব খান দুজনই জানেন বলেই একসঙ্গে তারা অভিনয় করতে আগ্রহী নন। রিয়াজ তো চলচ্চিত্র থেকে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে চলে গেছেন। মৌসুমী অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিতে নায়ক ফেরদৌসের বিপরীতে তাকে দেখা গেছে। বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের প্রতি উদাসিনতার কারণে ফেরদৌসের চাহিদা এখন নির্মাতাদের কাছে নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় মৌসুমী পড়ে গেছেন বেকায়দায়। তাকে এখন অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনে ডিপজলের মতো নায়কের বিপরীতে অভিনয় করতে হচ্ছে।

নায়ক মান্নার মৃত্যুর পর থেকেই আসলে মৌসুমী জুটি সংকটে পড়েন। মৌসুমী-মান্নার রসায়ন দারুণভাবে গ্রহণ করেছিল দর্শকরা। নায়ক মান্নার সঙ্গে গড়ে তোলা জুটি প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, মান্নার সঙ্গে অভিনয় করা আমার প্রথম ছবি ‘লুটতরাজ’। এটি মান্নাভাইয়ের প্রথম প্রযোজিত ছবি। তারই আগ্রহে ছবিটিতে কাজ করি। অনেকেই তখন বলেছিলেন তার সঙ্গে আমাকে মানাবে না। তিনি অ্যাকশন হিরো। আমি রোমান্টিক ছবি বেশি করেছি। অথচ দর্শক আমাদের জুটিকে দারুণভাবে পছন্দ করে ফেলল। তারপর কত ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছি তার ইয়ত্তা নেই।

মৌসুমী আরো বলেন, মান্নাভাইয়ের মৃত্যুর কয়েকদিন আগে চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। অনেকটা একঘেয়েমি থেকেই সিদ্ধান্তটা নিতে বাধ্য হই। এসময় পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম  তার ‘দুই পুরুষ’ ছবির প্রস্তাব নিয়ে আমার কাছে আসেন । আমি তাকে সবিনয়ে ফিরিয়ে দেই। মান্নাভাই জানতে পারেন ঘটনাটা। ফ্যামিলি নিয়ে চলে আসেন আমার বাসায়। অবসর পেলে এটা তিনি প্রায়ই করতেন। আমাদের দুই পরিবারের মধ্যেও বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল। মান্নাভাই বাসায় এসে আমাকে বোঝাতে শুরু করলেন। তার জোড়াজুড়িতে চাষী ভাইয়ের ছবিতে কাজ করতে রাজি হই। তারই কয়েকদিন পর ওপারের ডাকে চলে গেলেন মান্নাভাই। অভিনয়টা এখনও করছি, ছাড়িনি। যার জন্য থেকে যাওয়া, তিনিই চলে গেলেন। আমি যে দুজন নায়কের সঙ্গে অভিনয় করে সবচেয়ে সাফল্য পেয়েছি, তারা হলেন সালমান শাহ ও মান্না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা দুজনই অকালে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।

মৌসুমী অভিনীত মুক্তি প্রতিক্ষীত ছবি আছে ২টি। এগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘দেবদাস’। এতে চন্দ্রমুখীর চরিত্র রূপায়ণ করেছেন তিনি। অন্যটি হল নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল পরিচালিত ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস প্রযোজিত ‘এক কাপ চা’। দু`টি ছবির মুক্তি এখনো অনিশ্চিত। সেন্সর বোর্ড আটকে দিয়েছে ‘দেবদাস’। পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম সেন্সর বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী ছবিটি সম্পাদনা করতে রাজি নন। নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুলের ‘এক কাপ চা’ ছবিটি যৌথ প্রযোজনায় হলেও কবে মুক্তি পাবে তা চূড়ান্ত নয়। ছবির কিছু টেকনিক্যাল কাজ এখনো বাকি পড়ে আছে। এছাড়াও ডিপজলের প্রযোজনায় তার বিপরীতে নতুন চারটি ছবিতে মৌসুমীর অভিনয়ের কথা আছে।

তাই বলে মৌসুমীর কাছে চলচ্চিত্রের প্রস্তাব যে আসছে না, তা নয়। যেসব প্রস্তাব আসছে তাতে সাড়া দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কারণ অধিকাংশ নির্মাতাই মৌসুমীকে নবাগতদের মায়ের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসছেন। কিন্তু বড় পর্দায় এখনই মায়ের চরিত্রে তিনি অভিনয় করতে রাজি নন। এ প্রসঙ্গে মৌসুমীর মন্তব্য, আমার আগের প্রজন্মের অভিনেত্রী ববিতা-শাবানা-কবরীকে অনেক বয়স পর্যন্ত আমি নায়িকা হিসেবে অভিনয় করতে দেখেছি। আমার মনে হয়, এখনো আমি এতটা বুড়িয়ে যায় নি যে, মায়ের চরিত্রে আমাকে অভিনয় করতে হবে। খুব বেশি হলে নায়কের ভাইয়ের স্ত্রী, অর্থাৎ ভাবী চরিত্রে অভিনয় করা যেতে পারে। মা-খালা-চাচীর ভূমিকায় আমি অভিনয় করতে মোটেও রাজি নই।

সম্পাদনা :  বিপুল হাসান

বাংলাদেশ সময় : ১৭৫০, মার্চ ১৭, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।