ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

বিদায় আলী যাকের

দীপন নন্দী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
বিদায় আলী যাকের

ঢাকা: ক্যান্সারকে জয় করেই ছুটে এসেছিলেন মঞ্চে। যে মঞ্চে তিনি কখনও বিদ্রোহী নূরলদীন।

কখনও গ্যালিলিও। নানা চরিত্রে তিনি অনন্য। স্বাধীনতা-পরবর্তী মঞ্চনাটকের অন্যতম সংগঠক ও সফল নাট্যনির্দেশকও। ছোটপর্দায় তিনি ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়। তার মেধা স্পর্শ করেছিলো বিজ্ঞাপনী খাতকেও।

বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গন, বিজ্ঞাপনী খাতের অনন্য মানুষ আলী যাকের পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান।

১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে রতনপুরে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। তার বাবার নাম আবু তাহের এবং মায়ের নাম রিজিয়া তাহের।

১৯৭২ সালের আলী যাকের আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। এরপর তিনি ওই বছরের জুন মাসে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের ডাকে সাড়া দিয়ে যোগ দেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে। যেখানে তিনি আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন।

এক বছর তিনি প্রথমবারের মতো নির্দেশনা দেন বাদল সরকারের ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকটিতে। যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনী।

আরও পড়ুন...সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকের আর নেই

মঞ্চে তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘বিদগ্ধ রমণী কুল’, ‘তৈল সংকট’, ‘এই নিষিদ্ধ পল্লীতে আলী’, ‘দেওয়ান গাজীর কিস্‌সা’, ‘সৎ মানুষের খোঁজে’, ‘অচলায়তন’, ‘কোপেনিকের ক্যাপ্টেন’, ‘ম্যাকবেথ’, ‘টেমপেস্ট’, ‘নূরলদীনের সারাজীবন’, ‘গ্যালিলিও’।

টেলিভিশনের পর্দাতেও আলী যাকের ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়। হুমায়ূন আহমেদের ‘বহুব্রীহি’ ও ‘আজ রবিবার’-এ অভিনয় করে তিনি তুমুল দর্শকপ্রিয়তা পান। একক নাটক ‘একদিন হঠাৎ’, ‘নীতু তোমাকে ভালোবাসি’, ‘পাথর সময়’, ‘অচিনবৃক্ষ’, ‘আইসক্রিম’, ‘গণি মিয়ার পাথর’-এ অভিনয় করেও তিনি দর্শকপ্রিয়তা পান।

অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। ‘আগামী’, ‘নদীর নাম মধুমতী’, ‘লালসালু’ ও ‘রাবেয়া’ চলচ্চিত্রে তার অভিনয় দাগ কেটেছে মানুষের হৃদয়ে।

তার স্ত্রী নাট্যজন সারা যাকের। ১৯৭৭ সালে বিয়ে হওয়া এই দম্পতির দুই সন্তান, ছেলে অভিনেতা ইরেশ যাকের ও কন্যা শ্রিয়া সর্বজয়া।

আলী যাকের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সদস্য। ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক এবং মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২০
ডিএন/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।