ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

প্রেক্ষাগৃহ খুললেও নেই দর্শক, উঠছে না বিদ্যুৎ খরচও

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
প্রেক্ষাগৃহ খুললেও নেই দর্শক, উঠছে না বিদ্যুৎ খরচও প্রেক্ষাগৃহের ভেতরে হাতেগোনা দর্শক। ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: করোনার কারণে বন্ধের প্রায় সাত মাস পর খুলেছে দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো। অর্ধেক আসন খালি রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৬ অক্টোবর থেকে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে সিনেমা দেখানোর অনুমতি দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

এরপর যে প্রেক্ষাগৃহগুলো খুলেছে, সেগুলোতে দেখা দিয়েছে দর্শক সঙ্কট।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার প্রেক্ষাগৃহ ঘুরে দেখা গেছে এমনচিত্র। রাজধানীতে বর্তমানে খোলা আছে মাত্র নয়টি প্রেক্ষাগৃহ। আর এগুলোর সবগুলোই এখন ভুগছে দর্শক স্বল্পতায়। এমন কী এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে দর্শকের অভাবে শো বাতিল করা লাগতে পারে বলেও জানিয়েছে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ। বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে অবস্থিত ‘আনন্দ’ এবং ‘ছন্দ’ প্রেক্ষাগৃহ ঘুরে দেখা যায় হাতে গোনা কয়েকজন দর্শক রয়েছেন এতে। সেখানকার কাউন্টারম্যান জানান, দর্শক এখনও সিনেমা দেখতে আসছে না। অনেকেই প্রেক্ষাগৃহের সামনে দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করছেন না। এছাড়া নতুন সিনেমা না মুক্তি না পাওয়াটাকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রেক্ষাগৃহ দু’টিতে চলছে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত হিরো আলম প্রযোজিত ও অভিনীত 'সাহসী হিরো আলম' এবং শাকিব খান অভিনীত পুরোনো সিনেমা 'রাজধানীর রাজা'। প্রেক্ষাগৃহে পুরনো সিনেমা দর্শক গ্রহণ করে না এবং নতুন সিনেমাটিতেও আগ্রহ না থাকায় দর্শক আসছে না বলে জানান প্রেক্ষাগৃহ দু’টির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন। আগামী সপ্তাহে আরও কিছু নতুন সিনেমা মুক্তি পাবে এবং নতুন সিনেমা আসতে থাকলে দর্শকও প্রেক্ষাগৃহমুখি হবে বলে এসময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ সাত মাস প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকার ফলে এমনিতেই অনেক ক্ষতি হয়েছে। সেগুলো ঠিক করতে হচ্ছে, শ্রমিকদের বেদন-ভাতা বাকি রয়েছে সেগুলো দিতে হবে। ঈদসহ বিভিন্ন ছুটি ঘরবন্দি অবস্থা আর দীর্ঘ বন্ধের পর প্রেক্ষাগৃহ খোলার সিদ্ধান্তে ভেবেছিলাম দর্শক হবে। কিন্তু পরিস্থিতি এমন, একটি শোতে যা দর্শক হচ্ছে, তাতে শো-এর বিদ্যুৎ বিলও উঠছে না। অনেকে করোনার ভয়ে আসছেন না, আবার অনেকে মনের মতো সিনেমা মুক্তি না পাওয়ায় আসছেন না। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই আরও কিছু নতুন সিনেমা আসবে এবং সেগুলো আসলে দর্শকও কিছুটা প্রেক্ষাগৃহমুখি হবে বলে আশা করছি। রাজধানীতে বর্তমানে ফার্মগেটের আনন্দ, ছন্দ, গুলিস্তানের ইংলিশ রোডের চিত্রা মহল, সদরঘাটের জনসন রোডের আজাদ, কেরানীগঞ্জের নিউ গুলশান, বনানীর সৈনিক ক্লাব, যাত্রাবাড়ীর গীত, সঙ্গীত এবং রায়েরবাগ রোডের পুনম ছাড়া বন্ধ রয়েছে অন্যান্য প্রেক্ষাগৃহগুলো। যে নয়টি প্রেক্ষাগৃহ খোলা রয়েছে, সেসব প্রেক্ষাগৃহে দর্শক স্বল্পতা রয়েছে বলেও জানা গেছে।  

এ প্রসঙ্গে আজাদ সিনেমার ব্যবস্থাপক মো. আলাউদ্দিন জানান, অধিকাংশ প্রেক্ষাগৃহেই এখন দর্শক কম। একে তো অর্ধেক দর্শক রেখে শো করতে হচ্ছে, ভালো সিনেমা নেই, তারপর আবার দর্শকও আসছে না। এই অবস্থাটা আশংকাজনক। আরও নতুন সিনেমা মুক্তি পেলে দর্শক কিছুটা বাড়বে বলে আশা করছি।

এছাড়া যেসব প্রেক্ষাগৃহ এখনো বন্ধ রয়েছে, সেগুলো আরও কিছু নতুন এবং ভালো সিনেমা এলেই খোলা হবে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ। নয়তো এভাবে চলতে থাকলে প্রেক্ষাগৃহ চিরস্থায়ী বন্ধের উপক্রম হবে বলেও জানান তারা।  
তাই করোনা পরবর্তী সময়ে প্রেক্ষাগৃহ মালিকরা কিছু বিগ বাজেটের ভালো এবং মানসম্মত সিনেমার জন্যই অপেক্ষা করছেন বলে জানা গেছে। আবার একই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন দর্শকও। তারাও চান দীর্ঘ বন্ধের পর করোনা পরবর্তী সময়ে কিছু সামাজিক এবং মানসম্মত সিনেমা।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২০
এইচএমএস/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।