ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

বামবা থেকে সরে গেলেন ব্যান্ডশিল্পী মাকসুদ

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২০
বামবা থেকে সরে গেলেন ব্যান্ডশিল্পী মাকসুদ

বাংলাদেশের ব্যান্ডগুলো নিয়ে গঠিত সংগঠন বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশন (বামবা)’র বর্তমান কমিটি ‘অবৈধ ও বেআইনি’ বলে অভিযোগ তুলেছেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাকসুদুল হক। তিনি ‘নৈতিক কারণে’ বর্তমান নির্বাহী কমিটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

১৯৮৭ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশের ব্যান্ডশিল্পীদের এই বৃহৎ সংগঠনটি। তখন ফিডব্যাক দলের ভোকাল মাকসুদুল হক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরেই কিছু হতাশা ও ক্ষোভ ছিল তার মাঝে।

সোমবার (১৬ মার্চ) নির্বাহী কমিটির বৈঠকে নিজের দায়িত্ব ও পদ থেকে সরে যান বর্তমান ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ ব্যান্ডের এই দলনেতা।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মাকসুদ জানান, ‘বামবা তথা বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ডস অ্যাসোসিয়েশনের আসন্ন সাধারণ নির্বাচন ও এর চলতি নির্বাহী পর্ষদ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। নৈতিক বিবেচনায় বেআইনি, অবৈধ ও নীতি লঙ্ঘনকারী কিছুর সঙ্গে যুক্ত থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। একই সঙ্গে এ–ও বলে রাখি যে, আমাদের ব্যান্ড ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ বামবার সদস্য থাকবে কি না, তা ব্যান্ড সিদ্ধান্ত নেবে। ব্যক্তিগত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ব্যান্ডের ওপর কোনো প্রভাব রাখবে না। ’ 

পরে বামবার গঠনতন্ত্র ও বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে ফেসবুকে আরও একটি পোস্ট লেখেন মাকসুদ।

ফেসবুকে তিনি লেখেন, বামবার কার্যকরী সদস্যদের সঙ্গে সদস্য ব্যান্ডগুলোর সম্পর্কের ভিত্তি হলো বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য। কিন্তু আজ আমাদের প্রতি সদস্য ব্যান্ডগুলোর বিশ্বাস বা আনুগত্য নেই বললেই চলে। এর মূল কারণ আমরা তাদের মধ্যে এই আস্থা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছি যে, তারাই হলো বামবার ভবিষ্যৎ ধারক ও বাহক।

হতাশা নিয়ে তিনি লেখেন, ‘আজ অবধি প্রতিটি কাজ বাস্তবায়ন করতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয় আমাদের, যেখানে অধিকাংশ সদস্য আর দশটা কনসার্ট বা ইভেন্টের মতোই কেবল পারফর্ম করতে আসে এবং পারফরম্যান্স শেষে চলে যায়। এই আত্মসমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বামবার গঠনতন্ত্র কী বলে আর আমরাই বা তা কতটুকু মেনে চলি, সেটির কোনো গুরুত্ব আজ নেই বললেই চলে। ’

বর্তমান নির্বাহী কমিটির পদত্যাগ দাবি করে মাকসুদ লেখেন, ‘বর্তমান নির্বাহী কমিটির উচিত পদত্যাগ করা। এটাই আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা হয়তো এত দিন যাবৎ অনেক নিষ্ঠা, উৎসাহ এবং বলতে গেলে অনেকটা ঐচ্ছিকভাবেই কাজ করে এসেছি। কিন্তু সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্তমানে কার্যকরী সদস্য হিসেবে কাজ করার কোনো আইনগত ভিত্তি আমাদের নেই। ’ 

এ প্রসঙ্গে মাকসুদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমি আমার প্রস্তাবগুলো দিয়েছি। দেখি তারা কী সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরে আমি এ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলব। আপাতত এটুকুই বলতে চাই, আমি ‘নৈতিক কারণে’ পদত্যাগ করেছি।

মাকসুদের দেওয়া প্রস্তাবগুলো হলো- 

- সংগঠনের প্রতি নিজেদের স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে সবার পদত্যাগ।  
- একটি অ্যাডহক নির্বাচন স্টিয়ারিং কমিটি করে পক্ষপাতহীন নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা।  
- নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত কার্যকরী সদস্য তথা সংগঠন কর্ণধারদের নাম প্রকাশ্যে ঘোষণা ও তাদের দায়িত্বভার গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে ইএসসির সব কার্যক্রম অবলুপ্ত করা।  
- নিরপেক্ষ ‘বামবা’বহির্ভূত একজন নির্বাচন কমিশনার একটি পদ সৃষ্টি, যিনি শুধু প্রয়োগযোগ্য নির্বাচনী আচার-আচরণ ও বিধিমালা প্রণয়নের দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিটি ইওজিএমের ক্ষেত্রে এই পদ কার্যকর করা।  
- সদস্য ব্যান্ডগুলোকে নির্বাচনের আগে বকেয়া চাঁদার কমপক্ষে ৫০ শতাংশ পরিশোধ করা।

তবে বামবার অন্যতম সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি হামিন আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মাকসুদের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে কিছু বলতে চান না।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২০
এমকেআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।