ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী

আইয়ুব বাচ্চু নেই, আইয়ুব বাচ্চু আছেন

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
আইয়ুব বাচ্চু নেই, আইয়ুব বাচ্চু আছেন কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু

দেশীয় ব্যান্ড সংগীতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ তারকা এবং এক ও অদ্বিতীয় গিটার জাদুকরের নাম আইয়ুব বাচ্চু। অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে কাঁদিয়ে গত বছরের ১৮ অক্টোবর না ফেরার দেশে চলে যান ব্যান্ডসংগীতের উজ্জ্বল এই নক্ষত্র।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। মৃত্যুর আগে সুদীর্ঘ ২৫ বছর কাটিয়েছেন নিজ হাতে তিলে তিলে গড়া এলআরবি’র সঙ্গে।

১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল সোলস ছেড়ে এলআরবি গড়ে তুলেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। শুরুতে ব্যান্ডটি নাম রাখা হয়েছিল ‘লিটল রিভার ব্যান্ড (এলআরবি)। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে এই নাম বদল করে রাখা হয় ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড' (এলআরবি)। কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুপ্রতিকূল অবস্থার মধ্য দিয়ে সংগীতে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন আইয়ুব বাচ্চু। পিতা-মাতার আদরের সন্তান হলেও তার সংগীত চর্চায় ছিল ব্যাপক বাধা। সংগীতপ্রেমী বাচ্চু পারিবারিক নিষেধ উপেক্ষা করেই নিজের স্বপ্নকে জয় করেছেন। তবে জয়ের নেপথ্যে রয়েছে কঠিন-করুণ গল্প।

১৯৮৩ সালে মাত্র ৬০০ টাকা পকেটে নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। কিন্তু অদম্য স্পৃহা, কঠোর পরিশ্রম ও সাধনায় তিনি অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীর আইয়ুব বাচ্চু হয়ে উঠেন। এককথায় দীর্ঘদিন তিনিই ছিলেন দেশীয় ব্যান্ড সংগীতের অপ্রতিদ্বন্দ্বী তারকা। কণ্ঠ-সুর আর গিটারের মন্ত্রণায় মাতোয়ারা করে রেখেছেন গানপ্রেমিদের। আর ভূষিত হয়েছিলেন গানের ‘বস’ খেতাবে। তিনি আজ নেই। হয়ে গেলো এক বছর। কিন্তু মেনে নিতে পারছে না কেউই। বয়ে বেড়াচ্ছে তাকে হারানোর অসহনীয় শোক।

আইয়ুব বাচ্চু মূলত রকস্টার। কিন্তু ব্যান্ড কিংবা রক তারকা হলেও অন্যান্য ঘরানার গানেও তিনি পারঙ্গমতার পরিচয় দিয়েছেন। বিশেষ করে আধুনিক এবং লোকগানে তিনি দক্ষতার প্রমাণ রেখে গেছেন। নিজের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় অন্যান্য শিল্পীদের জন্য আধুনিক, লোক এবং ক্লাসিক্যাল ঘরানার গানও তৈরি করেছেন তিনি। তবে জিমি হেন্ডরিক্স, জো স্যাটরিনি, স্টিভ মুর তার গানের আদর্শ ছিলেন বলে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে আইয়ুব বাচ্চু জানিয়েছেন। কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুসুখের চেয়ে বেদনার চিত্রই গিটার জাদুকরের গানে বেশি ফুঠে উঠেছে। যেনো গানের গল্পেই লুকানো তার জীবন। জীবনের এপাশ-ওপাশ। হয়তো এ কারণে তার হতাশার গানগুলো চোখ বুজেই লুফে নিয়েছে শ্রোতারা।

আইয়ুব বাচ্চুর অধিক জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘সেই তুমি’, ‘কষ্ট’, ‘নীল বেদনা’, ‘আসলে কেউ সুখী নয়’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘সেই রুপালী গিটার ফেলে’, ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’ ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ফেরারী মন’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

অসংখ্য জনপ্রিয় অ্যালবাম ও গানের তারকা আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন ভীষণ অভিমানীও। ভেতরে ভেতরে কষ্ট-অভিমান পুষে রাখতেন। গিটারের ঝংকারে সেই অভিমান-কষ্ট ছড়িয়ে দিতেন শিশুর মতো কেঁদে কেঁদে- তার দীর্ঘদিনের সঙ্গীরা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এ কথা সাবলীলভাবেই বলেছেন। কিংবদন্তি ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চু১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্রগ্রাম শহরের এনায়েতবাজারে জন্মগ্রহণ করেন আইয়ুব বাচ্চু। তার বাবার মোহাম্মদ ইসহাক ও মা নূরজাহান বেগম। সংসার জীবনে তিনি স্ত্রী, ফাইরুজ সাফরা নামে এক কন্যা ও তাজোয়ার নামে এক পুত্র সন্তান রেখে গেছেন।

গত বছরের ১৮ অক্টোবর মাত্র ৫৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশীয় ব্যান্ডসংগীতের অন্যতম দিকপাল, গিটার জাদুকর-এলআরবি’র প্রতিষ্ঠাতা আইয়ুব বাচ্চু।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৯
ওএফবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।