গ্যালারিতে দর্শক তুলনামূলক ভাবে বেশি। তারা এসেছেন তাদের প্রিয় অভিনেত্রী বিপাশা হায়াতের চিত্রপ্রদর্শনী দেখতে।
‘একজন দর্শক যখন মনোযোগ দিয়ে আমার কোনও একটি শিল্পকর্ম দেখেন, তখন বেশ ভালো লাগে। আমি মনে করি, আমার ভাবনার জগতটা দর্শকদের সামনে মেলে দেব, আর দর্শকরা তাদের মতো করে ভাববেন,’ গ্যালারীতে বসে কথাগুলো বললেন বিপাশা হায়াত।
দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও হালের সফল নাট্যকার বিপাশা হায়াতের দশ-দিনব্যাপী প্রথম একক চিত্রপ্রদর্শনী ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুরু হয়েছিল ২৫ অক্টোবর। প্রদর্শনীর বেশির ভাগ শিল্পকর্মই বিমূর্ত। তাই দর্শকদের অনেককেই ভাবতে হয়েছে ছবির সামনে দাঁড়িয়ে।
‘সব দর্শকেরই নিজস্ব ভাবনার শক্তি আছে। একটি শিল্পকর্ম দেখে সেই ভাবনাটা তারা ব্যবহার করবেন। তারা নিজের মতো করে দেখবেন, ব্যাখ্যা দিবেন। এটাই তো একজন শিল্পীর আনন্দ। ’
শিল্পকর্ম নিয়ে বিপাশার নিজস্ব ভাবনা কি? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার শিল্পকর্মের মাধ্যমে আমি শুদ্ধতা খুঁজি। আমি বিভিন্ন মাধ্যমে কাজ করি। এই মাধ্যমগুলো ব্যবহার করি শিল্পকর্মের প্রয়োজনে। অর্থাৎ, শিল্পকর্মের প্রয়োজনে মাধ্যম, মাধ্যমের প্রয়োজনে শিল্পকর্ম নয়। আর সবকিছুই উদ্দেশ্য হলো শুদ্ধতার খোঁজ। ’
বিপাশা ছিলেন চারুকলার ছাত্রী। তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান ১৯৯৮ সালে। তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ সময় নিয়েছেন প্রথম চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজনে। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি নিজেকে প্রস্তুত করেছি এই সময়টায়। আমার বিশ্বাস যেকোনও শিল্পকর্মের জন্য সততা, দক্ষতা, নিষ্ঠা, ভালোবাসা ইত্যাদির প্রয়োজন। ’
‘এটা আমার চিত্রকর্মের প্রথম প্রদর্শনী তাই উদ্বেগের চেয়ে আবেগটাই বেশি। ’
প্রদর্শনীর সবকটি ছবিই আঁকা হয়েছে এবছরে। বিপাশার অভিমত, ‘একজন শিল্পী ইচ্ছা করলে অনেক কাজ করতে পারেন। আমি ছবি আঁকার জন্য যতটুকু সম্ভব সবটুকু সময় দিয়েছি। সংসারের কাজ গুছিয়ে নিয়েই ছবি আঁকতে বসেছি। অথবা, ছবি আঁকা শেষ করেই ঘরের কাজ করে নিয়েছি। ’
‘আমি বিশ্বাস করি, এটা সম্ভব। ’
সমকালীন চিত্রশিল্পীদের সম্পর্কে বিপাশা বলেন, ‘তাদের স্বপ্ন অনেক। কিন্তু কাজ করার সুযোগ কম। আমি মনে করি, তারা সহযোগিতা পেলে আরো অনেক ভালো কাজ করতে পারবেন। ’
‘আমি এটাও মনে করি যে, তাদের স্বপ্ন দিয়েও তাদের কাজ করা প্রয়োজন। ’
‘শিল্পের ইতিহাস আমাদের সব শিল্পীকে ভালোভাবে জানতে হবে। এই বিষয় নিয়ে আরো বেশি পড়াশুনা প্রয়োজন। এর ফলে, আমরা আমাদের অগ্রজ শিল্পীদের কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারব। আমাদের নিজেদের কাজের ধারাটাও বুঝতে পারব। ’
বাংলাদেশ সময় ০০১৫, নভেম্বর ৩, ২০১১