ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

এবার কৃষিভিত্তিক রিয়েলিটি শো

‘ফিরে চল মাটির টানে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১১
‘ফিরে চল মাটির টানে’

এটাকে ঠিক রিয়েলিটি শো বলা যাবে না, এটা হলো রিয়েল রিয়েলিটি শো। কারণ আমাদের দেশের হৃদস্পন্দন কৃষকদের বাস্তব অবস্থা শিক্ষার্থীর এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে উপলব্ধি করতে পারবে।

আবার কাজটি যে সবচেয়ে ভালো করতে পারবে তাকে যেহেতু পুরস্কৃত করা  হবে, কাজেই এটাকে রিয়েলিটি শো বলাও যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চ্যানেল আইয়ের কৃষিভিত্তিক নতুন কার্যক্রম ‘ফিরে চল মাটির টানে’ সম্পর্কে এভাবেই বললেন কৃষি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ।

চ্যানেল আইয়ের কৃষি বিষয়ক কার্যক্রম ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ এবার উদ্যোগ নিয়েছে আগামী প্রজন্মের মাঝে কৃষি ও কৃষকের গুরুত্ব তুলে ধরার। নতুন এই উদ্যোগের নাম ‘ফিরে চল মাটির টানে’। নাগরিক শিক্ষার্থীদের কষি উৎপাদন ও বাণিজ্য ব্যবস্থা এবং শ্রম সম্পর্কিত ব্যবহারিক ধারণা প্রদানের এই কার্যক্রম শুরুর আগে ১২ জানুয়ারি বুধবার চ্যানেল আই-এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড চ্যানেল আই-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর এবং এ উদ্যোগের স্বপ্নদ্রষ্টা চ্যানেল আই-এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে শাইখ সিরাজ বলেন, এদেশের অর্থনীতির প্রধানতম চালিকাশক্তি কৃষি, কিন্তু কৃষি যুগ যুগ ধরে রয়ে গেছে নাগরিক চিন্তাভাবনার আড়ালে। কৃষকরা দেশের ১৬ কোটি মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দেয়ার জন্য কঠিন কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করছে, কিন্তু নতুন প্রজন্ম দূরের কথা শহরের আজকের নাগরিকরা পর্যন্ত কৃষি উৎপাদন প্রক্রিয়ার ভেতরের কষ্টগুলো অনুভব করতে পারে না। এমনকি কৃষি উৎপাদন ও বাণিজ্য ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক সম্পর্কেও তাদের ধারণা নেই। এটি কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ব্যবধান। এই ব্যবধান কমিয়ে আনার জন্যই আজকের নতুন প্রজন্ম যারা আগামী দিনের বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন তাদের মাঝে কৃষি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেয়ার এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রথমেই ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চারজন ছাত্রকে তিনদিনের জন্য গ্রামে নিয়ে গিয়ে একজন কৃষক ও কৃষি শ্রমিকের কাজে নিয়োজিত করা হবে। এর মধ্য দিয়ে তারা উপলব্ধি করবে কৃষকের বঞ্চনা, ত্যাগ, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, মজুরি বৈষম্য থেকে শুরু করে দিনরাত্রির সকল বিষয়। এটি তাদের এমনই এক ব্যবহারিক শিক্ষা যার মধ্য দিয়ে একজন শিক্ষার্থীর রুচি, মনন ও কৃষি সম্পর্কিত মূল্যায়ণ পাল্টে যাবে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, আমাদের কৃষির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার ক্ষেত্রে শাইখ সিরাজের প্রয়াস সত্যিই অনন্য। এর মধ্য দিয়ে দেশের আধুনিক সমাজ তথা নাগরিক জীবনে কৃষি আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত হতে থাকবে। যা কৃষকের সমস্যার জায়গাগুলোকে চিনতে আরো সহজ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১৬ জানুয়ারি রোববার থেকে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ গ্রাম থেকে শুরু হবে চার শিক্ষার্থীর কৃষি কার্যক্রম। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে এ কার্যক্রমটি একটি প্রতিযোগিতায় রূপ নেবে। এই প্রতিযোগিতায় কৃতিত্ব অর্জনের বিষয় জড়িত থাকবে। একই প্রক্রিয়ায় কৃষি ও ফসলের বিভিন্ন মৌসুমে চলবে এ কার্যক্রম। প্রত্যেক আয়োজন থেকে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে বছরের শেষে অনুষ্ঠিত হবে চূড়ান্ত রাউন্ডের কার্যক্রম। সেখানে এসব শিক্ষার্থীর অভিজ্ঞতা, জরিপসহ সকল কার্যক্রম তুলে ধরা হবে জাতীয়ভাবে। এর মধ্য দিয়ে দেশের কৃষি ও কৃষকের জন্য রাষ্ট্রের করণীয় বিষয়ে প্রস্তুত করা হবে নতুন সুপারিশমালা। অন্যদিকে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরাও ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ ফেলো হিসেবে পাবেন বিশেষ সনদ। যা তার শিক্ষাগত ও পেশাগত জীবনের জন্য হবে মূল্যবান একটি স্বীকৃতি।

সংবাদ সম্মেলনে ‘কৃষকের দিনরাত্রি’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। যার মধ্যে উঠে আসে কৃষকের শ্রম ও বঞ্চনার নানাদিক।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৬৩০, জানুয়ারি ১২, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।