পুরো নাম ফারুক আহমেদ সুমন। কিন্তু গানের জগতের মানুষরা তাকে এফ এ সুমন নামেই চিনেন।
কিন্তু এ গানের সাথে তার হৃদয়ের বন্ধনটা কিভাবে হলো? তার মুখেই জানতে চাই। ‘সত্যি বলতে জানি না কিভাবে হল। দাদীর মুখে শুনেছি আমার দাদা কালু মিয়া মুন্সি দোতারা বাজাতেন। তবে আমার বাবা-মা একদমই মিউজিক করা পছন্দ করতেন না। আমি ছোটবেলা থেকেই দেশের ও বাইরের ব্যান্ডগুলোর গান শুনতাম। ১৯৯৬ সালে ‘হেভি মেটাল’ এবং ২০০০ সালে ‘মনিটর’ ব্যান্ডে লিড গিটারিস্ট হিসেবে মিউজিকে যাত্রা শুরু’-
ঢাকার শান্তিবাগে জন্ম নেওয়া সুমন ঢাকা কলেজ থেকে মাকের্টিং বিভাগে মাস্টার্স করার পাশাপাশি এনআইআইটি-তে (ই-টেকনোলজিতে) উচ্চতর ডিপ্লোমা করেন। এত পড়াশুনার পরও চাকরি করনেনি। কিন্তু কেন?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘চাকরি করলে আমি মিউজিক করতে পারতাম না। বাবা-মা সবসময়ই চাইতেন আমি এটা ছেড়ে দেই। কিন্তু উল্টো আমি মিউজিকের জন্য নিজের বাড়িঘরই একবার ছেড়ে দিয়েছিলাম। কারণ, আমি মিউজিক ছাড়া কিছুই আপন করে নিতে পারিনি। ’
লিল্ড গিটারিস্ট হয়ে তিনি আমাদের দেশের সামিনা চৌধুরী, এসডি রুবেল, মনির খান, মমতাজসহ আরো অনেক গুনী শিল্পীদের সাথে কাজ করেছেন। তবে ২০০০ সালে যাত্রাবাড়ী নিজ বাসাতেই স্টুডিও করে মিউজিক কম্পোজিশনের চর্চা শুরু করেন।

প্রথম এককের টাইটেল গান, ‘নিশাচর’ গান দুটি শ্রোতাপ্রিয় হয়। এরপর মঈন বিশ্বাসের পরিচালনায় ‘পাগল তোর জন্য রে’- ছবির টাইটেল গানটি তার কম্পোজিশনে কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি গায়। গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
শুরু হয় নতুন করে গান গানের পথে পথচলা। ২০১২ সালে সুমনের দ্বিতীয় একক ‘সখীরে’ অ্যালবামটি প্রকাশিত হয় এবং সর্বশেষ গত রোজার ঈদে ‘দরদীয়া’ অ্যালবামটি বাজারে আসে। এ দুটি অ্যালবামের ‘সখীরে’, ‘ভিতর কান্দে’, ‘দরদীয়া’, ‘মন মুনিয়া’ গানগুলো শ্রোতাদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পায়।
এ বিষয়ে এফ এ সুমন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি শুধু একক না, বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবামেও কাজ করেছি। তবে আমার তৃতীয় একক অ্যালবামের গানগুলোর সাড়া ভালো পেয়েছি। এজন্য শ্রোতাদের কাছে কৃতজ্ঞ। ’
বর্তমানে অ্যালবামের বাইরে প্লে-ব্যাক ও কম্পোজিশনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। এবার কোরবানি ঈদে তার সংগীতায়োজনে ক্লোজআপ ওয়ান সাজুর নতুন একক অ্যালবাম ‘অটোগ্রাফ ফট্রোগাফ’ বের হচ্ছে। এছাড়া সুমন ফারুক নামের নতুন একজন শিল্পীর প্রথম একক ‘ভালোবাসা রঙিনঘুড়ি’ অ্যালবামেরও সুর-সংগীত করেছেন।
এবার পরিবারের কথায় আসা যাক। সুমনের বাবা নুরুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী এবং মা ফজিলাতুন্নেসা গৃহিনী। দুই ভাই বোনের মধ্যে সুমন বড়। ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
২০০৮ সালে বিয়ে করেন তিনি। তার জীবনসঙ্গী জাহানারা বেগম ও এক ছেলে-এক মেয়ে নিয়েই তাদের সংসার। ছেলে সরজের এর বয়স সাত বছর এবং মেয়ে রোজার বয়স সাড়ে তিন বছর।
ছেলে সরজের নামেই তার বর্তমান স্টুডিও। সামনের দিনগুলোর বিষয়ে এফ এ সুমন বলেন, ‘ আমি খুঁটি এবং অন্যপথ নামের দুটি ছবির গানে সুর ও সংগীত করেছি। আশা করছি, ছবিটি মুক্তি পেলে গানগুলো শ্রোতাদের ভালোলাগবে। আর সামনে বছরের রোজার ঈদে নিজের নতুন একক নিয়ে হাজির হব। আর মিউজিক ছাড়া সামনে নতুন কোনো পরিকল্পনা নেই। শ্রোতাদের চাহিদা মতে মেলো-রক, সুফি সব ধরনের মিউজিক করে যেতে চাই। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০১৩
এমকে/জিআর/বিএসকে