ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিনোদন

টাইমের চোখে সেরা দশ চলচ্চিত্র

রবাব রসাঁ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১০
টাইমের চোখে সেরা দশ চলচ্চিত্র

২০১০ সাল শেষের দিকে। দেশে-দেশে নির্মিত হয়েছে কত-শত চলচ্চিত্র।

গল্প, গল্পের নির্মাণ এবং ব্যক্তি ও সমাজজীবনে এসবের প্রভাবসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে আমেরিকার ‘টাইম’ ম্যাগাজিন তৈরি করেছে এ বছরের সেরা দশটি ছবির তালিকা। টাইম অবলম্বনে লেখাটি তৈরি করেছেন রবাব রসাঁ

টম স্টোরি থ্রি

পরিচালক লি উনক্রিশের ‘টয় স্টোরি থ্রি’-কে কেন টাইম তাদের চোখে সেরা দশ চলচ্চিত্রের প্রথমে স্থান দিয়েছে সে বিষয়ে মন্তব্য করে বলেছে, এই চলচ্চিত্রটি ব্যক্তিগত দায়বোধ এবং অংশীদারিত্ব সম্পর্কে দর্শকদের নৈতিক শিক্ষা দেয়।

আর হলিউডকে এই শিক্ষা দেয় যে, ‘দেখো, কেমন করে এমন ছবি বানানো যায়’। টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বাস, এখনকার দিনে এত ভালো ছবি কেউ বানান না।

মাইকেল আর্নটের লেখা এই সিকুয়্যেলটির গল্পে মানুষের স্বাধীনতার চেয়ে মানবতার মুক্তিটাকেই যেন বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইনসাইড জব

এই প্রামাণ্যটিত্রটির পরিচালক চার্লস ফার্গুসন সাবলীল ভাষায় চমৎকারভাবে তুলে এনেছেন ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টির ভেতরকার কুৎসিত রূপ।

এই মন্দা সৃষ্টির খলনায়কেরা এখন বহাল তবিয়তেই আছেন। কেবল তা-ই নয়, অগাধ অর্থের মালিকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বহাল তবিয়তেই চালিয়ে যাচ্ছেন নিজেদের বাণিজ্য। এদের মুখে আঁটা আছে শক্তিশালী বিনিয়োগকারী, সরকারি কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদের মুখোশ।

ধৈর্য ধরেই ছবিটি দেখুন। ক্ষোভে ফেটে পড়তে ইচ্ছে হবে।

নেভার লেট মি গো

মার্ক রোমানেক পরিচালিত ‘নেভার লেট মি গো’ ছবিটি দর্শকদের থমকে দিয়েছিল এ বছরের লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসবে। ছবিটি নিয়ে বাদ্য বাজানোর সাহস হয়নি কারো। সবাইকে থাকতে হয়েছে মাথা হেট করে।

কাজু ইশিগুরোর উপন্যাস থেকে গল্পটি রূপান্তরিত করেছেন অ্যালেক্স গারলেন্ড। চমৎকার অভিনয় করেছেন ক্যারি মুলিগান, এন্ড্রু গারফিল্ড এবং কিরা নাইটলি।

শৈশবে যদি শিশুরা বড়দের কাছ থেকে ভয়ঙ্কর মিথ্যাই না শিখে তাহলে আবার শৈশব কী? সম্ভ্রান্ত এক ব্রিটিশ আবাসিক স্কুল হেইলশ্যামকে ঘিরে চলেছে সায়েন্স-ফিকশন ‘নেভার লেট মি গো’র গল্প।

লাইফ ডিউরিং ওয়ারটাইম

দৈহিক প্রয়োজনে শিশুদের প্রতিই যেন লোকটির আকর্ষণ বেশি। এ জন্য জেলও হয়েছে তার। এই লজ্জা থেকে মুখ ঢাকতে তার প্রাক্তন স্ত্রী নিউ জার্সি থেকে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন মিয়ামিতে।

এদিকে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে লোকটি চেষ্টা করছেন তার ছেলে দুটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে। ঘটনাটির সঙ্গে যোগ হয়েছে আরো কিছু উপগল্প।

নিজের লেখা গল্প নিয়েই পরিচালক টড সোলোনজ তৈরি করেছেন ‘লাইফ ডিউরিং ওয়ারটাইম’ ছবিটি। অভিনয় করেছেন সিয়ারান হাইন্ডস, অ্যালিসন জ্যানি, শার্লি হেন্ডারসন এবং পল রুবেন্স।

দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

সামাজিক যোগাযোগের ব্যাপক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের জীবনীমূলক কাহিনী নিয়ে ডেভিড ফিনশের তৈরি করেছেন ‘দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক’।

অ্যারন সোরকিনের লেখা গল্পে ফিনশের শুধু একটি ওয়েবসাইটের সাফল্যগাথা তুলে ধরেননি কিংবা তুলে ধরেননি বিশ্বের কনিষ্ঠতম ধনী ব্যক্তির জীবনকাহিনী। বরং ছবিটি এর চেয়েও বেশি কিছু। ছয়টি অস্কার মনোনয়ন পাওয়া এবং বেশ কয়েক সপ্তাহ উত্তর আমেরিকার বক্স অফিসের শীর্ষে থাকা এই উচ্চ-বুদ্ধিবৃত্তিসমৃদ্ধ চলচ্চিত্রটি দর্শকদের আনন্দ দেবে।

রেবিট হোল

ছোট ছেলের মৃত্যুর আট মাস পর বেক্কা এবং হাউয়ি দম্পতি নিজেদের অনেকটাই সামলে নিয়েছেন। কিন্তু ঘটনার শুরু যেন এখান থেকেই। ছবিটির পরিচালক জন ক্যামেরন মিচেল একটি একঘেয়ে ঘটনাকে অসাধারণ দক্ষতার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন।

ডেভিড লিন্ডসে অ্যাবেরের ব্রডওয়ের নাটক অবলম্বনে নির্মিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন নিকোল কিডম্যান এবং অ্যারন একহার্ট।

ওয়াইল্ড গ্রাস

বিবাহিত জীবনে সুখী মানুষটি কুড়িয়ে পেলেন এক নারীর টাকার থলি। এভাবে দুজনের ভেতর গড়ে উঠল বিপজ্জনক এক সম্পর্ক।

অ্যাঁলা রেসনার গল্পের উষ্ণতা একজন দর্শককে বিমোহিত করে রাখে, যতক্ষণ না বুঝতে পারেন, তিনি একটি অবাস্তব রঙের জগতে প্রবেশ করেছেন।

৮৮ বছর বয়সে এসে পরিচালক রেসনা তার জীবনের প্রথম ছবিটিতে কোনও ভাবগাম্ভীর্য আনেননি। বরং এনেছেন তারুণ্যের বুদ্ধিমত্তা এবং সতেজ জীবনীশক্তি।

ছবিটিতে অভিনয় করেছেন আঁদ্রে দুসোলিয়ে এবং স্যাবাঁ আসেমা।

গ্রিন জোন

ইরাকে আমেরিকার আগ্রাসনের খনিক পরের ঘটনা। প্রধান ওয়ারেন্ট অফিসার রয় মিলার বুঝতে পারলেন ইরাকের গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিষয়টি আসলে একটি অলীক গল্প মাত্র।

এই বছরের সবচেয়ে শিহরণ জাগানিয়া ছবিটিতে মিলার বাগদাদে এলেন গোয়েন্দা গল্পের নায়ক হয়ে। অবাক হওয়ার কিছু নেই। কেননা, এই ছবিটির পরিচালক পল গ্রিনগ্রাস এর আগে গোয়েন্দাকাহিনী সমৃদ্ধ দুটি ছবি পরিচালনা করেছিলেন।

ওয়েটিং ফর সুপারম্যান

প্রতি সকালেই আর সব দেশের মতো আমেরিকার মা-বাবারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠান অনেক আশা বুকে বেঁধে। অনেকটা প্রামাণ্যচিত্রের ধাঁচে তৈরি করা চলচ্চিত্রটিতে পরিচালক ডাভিস গগেনহেইম তুলে ধরেছেন আমেরিকার সরকারি স্কুলগুলোর বর্তমান দুর্দশা।

তিনি ছবিটিতে এও ইঙ্গিত করেছেন যে, এখনই এই জীর্ণ বিষয়গুলোর সংস্কার করা প্রয়োজন। কোনও সুপারম্যানের জন্য অপেক্ষা করার সময় হাতে নেই।

ফোর লায়নস

এই ছবিটিতে চারজন ব্রিটিশ মুসলমান উগ্রবাদী কীভাবে পশ্চিমা সভ্যতাকে ধ্বংস করবে এর গোপন খবর প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ ব্যঙ্গরসিক পরিচালক ক্রিস্টোফার মরিস। হাস্য-কৌতুক কাহিনীর মাধ্যমে তিনি বুঝিয়েছেন কীভাবে এই উগ্রবাদীরা এক বোকার স্বর্গে বসবাস করছে।

আমেরিকায় ১৯৬৪ সালে নির্মিত হাস্যরসাত্মক ছবি ‘ডক্টর স্ট্রেঞ্জলাভ’ চলচ্চিত্রের পর এই ছবিটিই সেরা হাসির ছবি টাইমের দৃষ্টিতে। তবে অনেকের চোখে ‘ফোর লায়নস’ ছবিটি এই বছরের সবচেয়ে বির্তকিত ছবিও বটে।

বাংলাদেশ সময় ০০৩০, ডিসেম্বর ২৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।