ঢাকা: ২০০৯ সালের ক্ষুদে গানরাজখ্যাত শিল্পী জারিন তাসনিম নাওমি এখন নিজেকে ক্ষুদে মানতে নারাজ। মাত্র ৪ বছর বয়সে মায়ের কাছে ক্ল্যাসিকালে তালিম নেয়া এই শিল্পীর সাফল্য ছোটবেলা থেকেই।

আড্ডার শুরুতেই গান নিয়ে নাওমি বাংলানিউজকে বললেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন অনেকটা আম্মুর কথায় গান শিখেছি। সেসময় সংগীতচর্চার অর্থটা তেমন বুঝতাম না। কিন্তু এখন আমার কাছে সংগীতের অর্থটা আলাদা। একটা মানুষের শারীরিক সুস্থতার জন্য যেমন ওষুধ দরকার হয়, ঠিক তেমনি যে কোন মানুষকে শুদ্ধ সংগীতের মাধ্যমে মনকে প্রাণবন্ত করা বা সুস্থ করা সম্ভব। ’
নাওমির এই কথাগুলো শুনে যে কেউ এখন মানতে রাজী, নাওমি আর সেই ছোট্ট মেয়েটি নেই। বর্তমানে তার কাজের ব্যস্ততাও বেড়েছে বেশ।
তবে ক্ষুদে গানরাজের পর নাওমির গানের সুযোগটা করে দিয়েছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ এবং আসিফ ইকবাল। আমির নেওয়াজের একটি অ্যালবামে ‘নীল আকাশ’ শিরোনামে একটি গান করেন নাওমি।
এরপর তাকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে ইবরার টিপুর সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে ‘তোমায় ভেবে’ ও ইমরানের সাথে ‘হৃদয়ের সীমানা’ গান দুটির মিউজিক ভিডিও এখন প্রায় সব স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছে।
বিশেষ করে, ‘হৃদয়ের সীমানায়’ গানটি প্রকাশের পর ইউটিউবে মাত্র ছয় সপ্তাহে ৮৬,০০০ লাইক পড়েছিল। যদিও বাংলাদেশে ইউটিউব বন্ধ আছে, তবে গানটির রেসপন্স পেয়ে দারুণ খুশি নাওমি।
নাওমি বাংলানিউজকে বললেন, ‘এ গানটি নির্মাণ করেছেন চন্দন রায় চৌধুরী। আমি এ গানটি করার পর থেকে আজ অবধি রেসপন্স পাচ্ছি। মিউজিক ভিডিওটি সবার কাছেই প্রশংসিত হয়েছে। ’
আর ২০১২ সালে বাজারে আসে তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম ‘নাওমি’। এ অ্যালবামেরও বেশ কিছু গান শ্রোতাপ্রিয়তা পায়।
এর বাইরে নাওমির সাফল্যের পাল্লায় আরও যোগ হয়েছে হাবিবের সংগীতে তাঁর কণ্ঠে এবিসি রেডিও ও ঢাকা এফএমের থিম সং দুটি।

গান শেখা নিয়ে নাওমি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আম্মুকে গান করতে দেখেছি। এরপর মার কাছেই হতেখড়ি আমার। পরে ওস্তাদ সুনীল কুমারের কাছে ক্ল্যাসিকাল গান শিখেছি। এখনও ওস্তাদজি আমাকে অনেক আদর করেন। ’
নাওমির বাবা-মা দুজনই ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করছেন। বাবা মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ডেপুটি রেজিষ্ট্রার এবং মা শাহানারা বেগম উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। দুই ভাইবোনের মধ্যে নাওমি ছোট ।
আড্ডার মাঝে নাওমির মা বললেন, ‘বয়স অনেক কম হলেও গান নিয়ে ওর আগ্রহ অনেক। আর সবসময় সিরিয়াস হয়ে গান করে। যেহেতু চাকুরির জন্য ময়মনসিংহ থাকতে হয়, তবে সময় পেলেই ওর কাছে এসে কয়েকটা দিন থেকে যাই। আমি নাওমির আরও সাফল্য কামনা করি। ’
এরই মধ্যে আমাদের আলোকচিত্রী নূর-এর ফটোসেশন এর কাজ শেষ করে ফেলেছেন। নওমি দৌড়ে এসে বললেন, ‘আজ ছবি উঠাতে গিয়ে আমার হাতে ব্যাথা পেয়েছি। ছবিগুলো আমার চাই চাই-অনেক ভালো এসেছে। ’
উত্তরে বললাম, তুমি তো ক্ষুদে গানরাজ বিজয়ী, তোমার ছবি না দিয়ে উপায় আছে। এই কথা শুনামাত্র নাওমি জবাবে বললেন, ‘আমি আর এখন ক্ষুদে নেই। আমি এখন এইচএসসিতে পড়ছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘন্টা, ১৮মে, ২০১৩
এমকে/একেএ