ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

একক অবদানে কোনো জুটি গড়ে ওঠে না : অপু বিশ্বাস

বিপুল হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১১ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১২
একক অবদানে কোনো জুটি গড়ে ওঠে না : অপু বিশ্বাস

ঢালিউডের এই সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অপু বিশ্বাস। মূল ধারারা বাণিজ্যিক ছবিতে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য ব্যবসা সফল ছবি।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে চলচ্চিত্রের ধারাবাহিক মন্দাভাবে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সবার মতোই তিনিও চিন্তিত। চলতি বছর অপু বিশ্বাস অভিনীত সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ‘একটাকার দেনমোহর’ ছবিটি প্রত্যাশিত ব্যবসায়িক সাফল্য পায়নি।

বগুড়ার মেয়ে অপু বিশ্বাস অবন্তি ২০০৪ সালে আমজাদ হোসেনের ‘কাল সকালে’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন। এরপর এফআই মানিক পরিচালিত ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিতে প্রধান নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন শাকিব খানের বিপরীতে। ছবিটি ব্যবসা সফল হওবার পর অপু বিশ্বাস রাতারাতি তারকায় রূপান্তরিত হন। শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে তার জুটি দর্শকদের গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যায়। ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবিটির এই জুটির ‘পিতার আসন’, ‘চাচ্চু’, ‘দাদি মা’, ‘মিয়া বাড়ির চাকর’, ‘জন্ম তোমার জন্য’, ‘মায়ের হাতে বেহেশতের চাবি’ প্রভৃতি ছবিও সুপারহিট ব্যবসা করে। ধুম পড়ে যায় শাকিব-অপু জুটিকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের। মজার ব্যাপার হলো অপু বিশ্বাস অভিনীত ৫০টি ছবির মধ্যে ৪০টিতেই তিনি অভিনয় করেছেন শাকিব খানের বিপরীতে।

সামনের ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ঢালিউডে। গত কয়েকবছরের মতো এ ঈদেও অপু বিশ্বাস অভিনীত একাধিক ছবি আছে মুক্তির মিছিলে। এ অবস্থায় অপু বিশ্বাসের সঙ্গে কথা হলো বাংলানিউজের।

বাংলানিউজ : কেমন আছেন ? এ মুহূর্তে কী কী কাজ করছেন?
অপু বিশ্বাস : আপনাদের ও দর্শকদের দোয়ায় ভালো আছি। কাজের মধ্যেই আছি। কাজ চলছে বদিউল আলম খোকনের ‘একবার বল ভালবাসি’, সোহানুর রহমান সোহানের ‘এক মন এক প্রাণ’, এসবি মানিকের ‘তোর কারণে বেঁচে আছি’, মালেক আফসারীর ‘মনের জ্বালা’ ইত্যাদি ছবির।

বাংলানিউজ : আপনাকে বলা হয় ‘শাকিব খান’ নির্ভর নায়িকা এ প্রসঙ্গে আপনার মন্তব্য।
অপু বিশ্বাস : কাউকে নির্ভর করে হয়তো কিছু দূর অগ্রসর হওয়া যায়। কিন্তু নিশ্চয়ই বহু দূর যাওয়া অসম্ভব। শাকিব খান আর আমার জুটিটা দর্শক পছন্দ করেছে। তাই আমরা সাফল্য পেয়েছে। কারো একক অবদানের উপর কোনো জুটি গড়ে উঠতে পারে না। শাকিব খানের পাশাপাশি এ জুটি জনপ্রিয় হয়ে উঠার পেছনে আমারও নিশ্চয়ই কিছু না কিছু অবদান আছে।

বাংলানিউজ : শাকিব খান ছাড়া আপনি সেভাবে সাফল্য পাননি,  এ অবস্থা নতুন কী ভাবছেন?
অপু বিশ্বাস : শাকিব খান ছাড়া  কোনো ছবিতে যে একেবারেই সাফল্য পাই নি, তা কিন্তু নয়। প্রয়াত নায়ক মান্নার সঙ্গে ‘পিতা মাতার আমানত’ ও ‘বাবা মায়ের সন্তান’, রিয়াজের সঙ্গে ‘বাজাও বিয়ের বাজনা’, রিয়াজ ও ফেরদৌসের সঙ্গে ‘শুভ বিবাহ’, আমিন খানের সঙ্গে ‘পৃথিবী টাকার গোলাম’, কাজী মারুফের সঙ্গে ‘বড় লোকের মেয়ে গরীবের ছেলে’ প্রভৃতি ছবিতে অভিনয় করেও আমি সাফল্য পেয়েছি। তবে তুলনামূলক বেশি সাফল্য এসেছে শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেধে অভিনয় করে। শুধু শাকিব খান নয়, আমি এই সময়ের সব নায়কের সঙ্গেই অভিনয় করতে চাই।

বাংলানিউজ : আপনি প্রায় সত্তরটির মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন? কিন্তু এখন পর্যন্ত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান নি। অথচ আপনার জুনিয়র অনেকেই এই পুরস্কার পেয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য?
অপু বিশ্বাস : এ বিষয়ে মন্তব্য করা আমার জন্য বেশ মুশকিল। এপর্যন্ত আমার অভিনীত বহু চলচ্চিত্র দর্শকপ্রিয়তা যেমন পেয়েছে, তেমনি ব্যবসাসফলও হয়েছে। হয়তো জুরিবোর্ডের সদস্যদের কাছে আমার অভিনয় আশানুরূপ হয়নি।   তাই তারা আমাকে পুরস্কার প্রদানের কথা ভাবেননি।   ব্যক্তিগতভাবে আমি প্রতিটি চলচ্চিত্রেই নিজের অভিনয়ের ক্ষেত্রটিকে ভাঙতে চেষ্টা করি, হয়তো ভবিষ্যতে এ ধরনের সাফল্য আসতে পারে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনেক বেশি সম্মানের এবং অভিনয় জীবনে এ ধরনের স্বীকৃতির প্রয়োজন অবশ্যই রয়েছে।

বাংলানিউজ : চলচ্চিত্রে বর্তমানে ব্যবসায়িক মন্দা চলছে , আপনার অভিমত কী?
অপু বিশ্বাস : চলচ্চিত্রের দর্শক কমে গেছে। দর্শক সিনেমা হলে কম আসছে। অনেক সিনেমা হলই ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সবমিলিয়ে সত্যিই ভালো নয় অবস্থা। আগে বছরে যেমন ১৬-১৭টি ছবিতে অভিনয় করতাম এখন সেখানে ৮-৯টি চলচ্চিত্রে কাজ করছি। শুধু অভিনেতা-অভিনেত্রী নয়, চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকলেরই ক্যারিয়ারে নেতিবাচক একটি সময় যাচ্ছে। আশা করি, আসছে ঈদে এই মন্দা বাতাস দূর হয়ে যাবে। সামনে বেশ কিছু ভালো ছবি আছে মুক্তির প্রতিক্ষায়। ছবিগুলো মুক্তি পেলে আশা করি ঘুরে যাবে চলচ্চিত্রের সামগ্রীক অবস্থা।

apuবাংলানিউজ : নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এ মুহূর্তে আপনি নাকি ভীষন দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন?
অপু বিশ্বাস : এরকম কোনো অবস্থা এখনো আসে নি।   ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা এখনো তৈরি হয়নি বলে মনে করি। আজকের অপু বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। তাই এই মাধ্যমেই জীবনের বাকি সময়টুকু থাকতে চাই। ছোটপর্দায় অনেকের মতো হরহামেশা আমি যেতে চাই না। এখনো হাতে প্রচুর কাজ আছে। মুক্তি প্রতীক্ষায় আছে বেশ ক’টি ছবি। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘জান তুমি প্রাণ তুমি’, ‘দেবদাস’, ‘তোমাকে ভুলব না’, ‘দুই পৃথিবী’ ‘দুটি মন-দুটি প্রাণ’,  ‘দুর্ধর্ষ প্রেমিক’, ‘যুগে যুগে আমি তোমারই’, ‘খোদার পরে মা’ ইত্যাদি।

বাংলানিউজ : আপনার আগামী দিনের পরিকল্পনা ?
অপু বিশ্বাস : ভালো ভালো চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মাঝে বেচে থাকতে চাই। যতোদিন পারি অভিনয় করে দর্শকদের আনন্দ দিতে চাই।

বাংলানিউজ : দেশ নিয়ে আপনার ভাবনা ?
অপু বিশ্বাস : প্রতিটি দিনই প্রত্যাশা করি, দেশের উন্নতি ও দেশের মানুষের কল্যাণ। আমাদের এই ছোট্ট অথচ সুন্দর দেশটি অনেক সম্ভাবনাময়। শত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমি চাই, দেশীয় সংস্কৃতির আরও বিকাশ হোক। বিশেষ করে চলচ্চিত্রে সুদিন ফিরে আসুক। মধ্যবিত্ত শিক্ষিত দশর্ক পুনরায় প্রেক্ষাগৃহমুখী হবে, সেই আশায় বুক বেঁধে আছি ।

বাংলাদেশ সময় ০১২৫, জুন ১৪, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।