ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

‘দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন কষ্টকর’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২২
‘দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন কষ্টকর’ সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল -ফাইল ছবি

ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা ও ঐকমত্য না থাকলে আমাদের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কষ্টকর হবে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) একার পক্ষে ভাল নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

রোববার (১২ জুন) নির্বাচন ভবনে সাবেক নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

সিইসি বলেন, অতিথিরা বলেছেন, বর্তমানে যে পদ্ধতি আছে, তাতে খুব বেশি ভাল করা সম্ভব নয়। এটা একটু কমবেশি কিছু হতে পারে। আমরা যদি দৃঢ় থাকি, আইন দৃঢ়ভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করি, তাহলে অনেকটা উন্নয়ন সম্ভব।

সাবেক সিইসি রউফ সাহেব বলেছেন, প্রার্থী অনুযায়ী নয়, দলভিত্তিক নির্বাচনের কথা বলেছেন। নির্বাচনে দেখা গেল যে অনেক আগে থেকে দলগুলো তাদের টোটাল প্রার্থীর নাম দিয়ে যাবে। সবাই তিনশ আসনে দিল। পার্টি ক, খ, গ, ঘ। যে যত ভোট পেয়েছে, সেভাবে আসন পাবে। এ ধরনের একটা সিস্টেম আছে। তবে এটা আমাদের বিষয় নয়, দলগুলোকেই দেখতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা যে শপথ নিয়েছি, বর্তমান যে আইনি ও সাংবাধিনাকি কাঠামো আছে এর মধ্যেই আমাদের নির্বাচন করতে হবে। কেউ কেউ বলেছেন একাধিক দিনে নির্বাচন করলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন সহজ হবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। কেউ কেউ বলেছেন এতে সমস্যাও হবে। এ নিয়ে কোনো ঐকমত্য হয়নি। কাজেই একাধিক দিনে নির্বাচন করলে আমাদের জন্য অসুবিধাও হতে পারে। সেই ধরনের প্রস্তুতি আমাদের নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা এ বিষয়ে কিছু মনে করছি না, আমরা শুনেছি।

দলগুলোকে পরামর্শ দিতে সমস্যা কোথায়- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনো দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করিনি। সবাই বলেছেন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হতে হবে। নির্বাচন যদি ইনক্লুসিভ না হয়, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা বাস্তব অর্থে থাকবে না। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনেকটা নষ্ট হেয়ে গেছে। এই সংস্কৃতির মধ্যে কিছু ইতিবাচক গুণ আনতে হবে। তাদের মধ্যে পরমত সহিষ্ণুতা, ঐকমত্য যদি না থাকে ইসির একার পক্ষে খুব ভাল নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, ঐকমত্য না থাকলে আমাদের পক্ষে নির্বাচন করা কষ্টকর হবে। এটা আমারা যেমন আগে বলেছি, ওনারাও বলেছেন।

তিনি জানান, শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করব। যখন মতবিনিমিয় করা হবে, তখন আমরা পরামর্শ চাইব। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আরও ভাল পদ্ধতিগত কী পরিবর্তন করা যেতে পারে সুন্দর-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, সেই পরামর্শ চাইব। ব্যক্তি নয়, পদ্ধতি যদি উন্নত করতে পারি, নির্বাচন অনেক বেশি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে।

কুমিল্লা-৬ আসনের এমপি আকম বাহাউদ্দিনকে কুসিক এলাকা ছাড়ার চিঠি দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি, এ বিষযে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের কিছু আইনগত দিক আছে। কিছু ক্ষমতা আংশিক, কিছু পরিপূর্ণ। কুমিল্লায় যা বলা হয়েছে- সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনী এলাকায় থাকতে পারবেন না। সংসদ সদস্য আকম বাহাউদ্দিন এই আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন বলে প্রতিয়মান হয়েছে, আমরা এলাকা ছাড়তে বলেছি। উনি এলাকা ছাড়েননি। উনি মামলা করেছেন, আমরা ফলাফল পাইনি।

তিনি বলেন, আমরা যখন কাউকে অনুরোধ করি, জোর করে একজন সংসদ সদস্যকে… ওনাকে বলাটাই যথেষ্ট। ওনাকে যদি আমরা বলে থাকি নির্বাচন আচরণ বিধিতে এটা আছে, আপনি যদি দয়া করে একটু সরে থাকেন, নির্বাচন ভাল হয়। সেই চিঠিটা আমরা প্রকাশ্যে দিয়েছি। এটাই একজন সংসদ সদস্যের জন্য যথেষ্ট, এটাকে সম্মান করা। যদি সেটাকে উনি সম্মান না করে থাকেন, আমাদের তেমন করার কিছু থাকে না।

সংলাপে সাবেক প্রধান সিইসি ড. এটিএম শামসুল হুদা, বিচারপতি আব্দুর রউফ ও কেএম নূরুল হুদা, সাবেক ইসি শাহ নেওয়াজ, আবু হাফিজ ও মাহবুব তালুকদার, সাবেক ইসি সচিব ড. সাদিক ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, অতিরিক্ত সচিব জেনমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমানসহ, বর্তমান ইসিরা এবং ইসি কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২২
ইইউডি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।