ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নাসিক: প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২
নাসিক: প্রার্থীদের ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে

ঢাকা: আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিল পদে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হবে। অন্যথায়, সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, ব্যয়ের হিসাব সব প্রার্থীদের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হয়। যারা জয়ী হয়েছেন এবং জয়ী হতে পারেননি, সব প্রার্থীই নির্ধারিত বিধান মেনে এ কাজটি সম্পন্ন করবেন।  

সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুযায়ী, নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হিসাব জমা দিতে হয়। গত ২৫ জানুয়ারি ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হয়েছে। এক্ষেত্রে হিসাব জমা দেওয়ার শেষ দিন আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি।  

নাসিক নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ ২১ লাখ টাকা এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ সাড়ে ছয় লাখ টাকা ব্যয়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিল ইসি।

নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী সাতজন প্রার্থী ছিলেন- খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেওয়াল ঘড়ি), স্বতন্ত্র থেকে বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাও. মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখ), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া) এবং বাংলদেশ আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা)।

এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।  

নির্বাচন ব্যয় বলতে প্রচারপত্র বা প্রকাশনার মাধ্যমে অথবা অন্য কোনভাবে ভোটারদের কাছে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভিমত, লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য উপস্থাপনের জন্য ব্যয়িত অর্থসহ তার নির্বাচন পরিচালনার জন্য দান, ঋণ, অগ্রিম, জমা বা অন্য কোনোভাবে পরিশোধিত অর্থ ‘নির্বাচনী ব্যয়’ বলে গণ্য হবে। তবে মনোয়নপত্র দাখিলের সময় প্রদত্ত জামানত এর অন্তর্ভুক্ত হবে না।

একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার নির্বাচনী এজেন্ট ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যয় বাবদ কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারে না। তবে, ব্যক্তিগত খরচ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ করতে পারে।

মেয়রের প্রার্থীদের ব্যয়সীমা:

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার নির্বাচনের উদ্দেশে-ব্যক্তিগত খরচ বাবদ, পাঁচ লাখ এক থেকে ১০ লাখ ভোটার থাকলে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন।

এছাড়া নির্বাচনী ব্যয় বাবদ, একই পরিমাণ ভোটার থাকলে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা করতে পারেন। নাসিক নির্বাচনে ভোটার ছিল ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। তাই মেয়র প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ও ভোটের কাজে মোট ২১ লাখ টাকা ব্যয়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল।

কাউন্সিলর প্রার্থীর ব্যয়সীমা:

এই পদে প্রার্থীরা ব্যক্তিগত খরচ বাবদ, অনধিক ১৫ হাজার ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার এক থেকে ৩০ হাজার ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা, ৩০ হাজার এক থেকে ৫০ হাজার ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার এবং ৫০ হাজার এক ও তদূর্ধ্ব ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারেন।

এছাড়া নির্বাচনী ব্যয় বাবদ, অনধিক ১৫ হাজার ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা, ১৫ হাজার এক থেকে ৩০ হাজার ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা, ৩০ হাজার এক থেকে ৫০ হাজার ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা এবং ৫০ হাজার এক ও তদূর্ধ্ব ভোটার সম্বলিত ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন।  

২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি গঠিত। এতে সর্বনিম্ন সাড়ে ৫ হাজার ভোটারের ওয়ার্ড যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে ৭৬ হাজার ভোটারের ওয়ার্ডও। তাই ওয়ার্ড ভেদে কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য সর্বনিম্ন ১ লাখ ১০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ লাখ টাকা ব্যয়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

প্রার্থীদের প্রত্যেক নির্বাচনী এজেন্ট বা যেক্ষেত্রে প্রার্থী স্বয়ং তার নির্বাচনী এজেন্ট, সেক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ব্যক্তিগত খরচ ব্যতীত, সব নির্বাচনী ব্যয়ের অর্থ তফসিলি ব্যাংকের নির্ধারিত অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যয় করতে হয়। কোনো প্রার্থী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করলে কিংবা নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে বেশি ব্যয় করলে কিংবা কোনো ব্যত্যয় করলে ছয় মাস থেকে সাত বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে আইনে।

গত ১৬ জানুয়ারি নাসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে সেলিনা হায়াৎ আইভী তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত হন।

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০১১ সালে সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরুর পর এবার হলো তৃতীয় নির্বাচন। প্রথমবার ৯টি ওয়ার্ডে ইভিএমে, বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট হয়। ২০১৬ সালে সব কেন্দ্রে ভোট হয় ব্যালট পেপারে এবং এবার ভোট হলো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।

প্রথমবার নির্দলীয় প্রতীকে ভোট হয় এ সিটিতে। দলীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন চালুর পর এবার হলো দ্বিতীয় নির্বাচন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২২
ইইউডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।