ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

চার কারণে ভোটের নিরাপত্তায় চিন্তার ভাঁজ

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
চার কারণে ভোটের নিরাপত্তায় চিন্তার ভাঁজ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠক। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: আসন্ন ঢাকা দুই সিটি নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চার বিষয় চিন্তার ভাঁজ ফেলছে। যার একটি হচ্ছে রাজধানীর আশপাশের বাসিন্দাদের অনুপ্রবেশ, অন্যটি মামলাগ্রস্ত প্রার্থী, অপরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার, আরেকটি হলো বিদ্রোহী প্রার্থী।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয় নির্ধারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠকে এসব বিষয় ওঠে আসে।

বৈঠক সূত্রগুলো জানিয়েছে, পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবেশ এখনো নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানানো হয়।

তবে রাজধানীর আশপাশের জেলার বাসিন্দাদের ভোটের দিন অনুপ্রবেশ করে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িত হয়ে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এটা রুখতে তারা রাজধানীর প্রবেশপথগুলোতে নিরাপত্তা চৌকি বসাতে চায়।

দু'টি সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়, দুই সিটিতে ৫০ জনের অধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে এক ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। এমন ব্যক্তিদের নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে ভোট থেকে দূরে রাখার জন্য আইন সংশোধনের সুপারিশ করেন তারা।

এছাড়াও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়েও সহিংস পরিবেশ তৈরি করার অপচেষ্টা চলতে পারে বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শঙ্কা প্রকাশ করে।

অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ হয় বৈঠকে। আইন-শঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের বিষয়ে সজাগ থাকার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে নির্বাচন ভবনের মিলনায়তের বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইসির সিনিয়র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, মহা পুলিশ পরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, র‍্যাব, আনসার ও ভিডিপি, ডিজিএফআই ও এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও ঢাকার পুলিশ সুপারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে গ্রেফতারের নামে কাউকে হয়রানি না করা, গায়েবি মামলার ফাঁদে না ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব শঙ্কাকে কাটিয়ে উঠে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য কার্যকরী ভূমিকা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

দলগুলোর এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন সিইসি কেএম নূরুল হুদা। জ্যেষ্ঠ কমিশনার মাহবুব তালুকদার পুলিশকে জনগণের হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন। তাদের দুর্নাম হলে কমিশনের দুর্নাম হয় বলেও মন্তব্য করেন।

বৈঠকের শুরুতেই সিইসি সবার উদ্দেশে বলেন, কোনো বিচ্যুতি হলে কাউকে ছাড়া হবে না। ছোট ছোট সমস্যাগুলো স্ব স্ব বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাই সমাধান করবেন। আমি চাইনা কোনো বিচ্যুতির অভিযোগ আমাদের পর্যন্ত আসুক।

বৈঠক শেষে মহা পুলিশ পরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনে পুলিশের বাড়তি কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছি। এখন পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। ভোটারদের আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জন করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। আমি মনে করছি, শেষ পর্যন্ত এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।  

ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, গোয়েন্দাদের রিপোর্টে বলা হয়েছে মোট ১৮টি কেন্দ্র শুধু ঝুঁকিপূর্ণ। সব সময়ই তারা সতর্ক আছেন। কোনো সমস্যা থাকলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। ভোটের মাঠে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৪০ হাজার সদস্যকে নিয়োজিত রাখা হবে।

আগামি ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
ইইউডি/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।