ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

ভোটার কে তাড়াবে, বাইরে পুলিশ, তাড়ানো কি সম্ভব?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২০
ভোটার কে তাড়াবে, বাইরে পুলিশ, তাড়ানো কি সম্ভব?

ঢাকা: আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র থেকে ভোটার কে তাড়াবে, বাইরে পুলিশ থাকবে, তাড়ানো কি সম্ভব?

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন।

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙার প্রিন্ট সিকিউরিটি থাকলেও ব্যালট ইউনিটে নেই।

এতে একজন ভোটারের ব্যালট ওপেন করার পর তাকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে অন্যজনের ভোট দেওয়ার সুযোগ থেকে গেছে।

বিষয়টি ইসি সচিবের সামনে তুলে ধরা হলে বলেন, কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙার প্রিন্ট দেওয়ার পর ব্যালট ইউনিট ওপেন হওয়ার পর গোপন কক্ষে ভোটার নিজেই উপস্থিত থাকবেন। সেখানে তার সামনে অন্য কারও ভোট দেওয়ার সুযোগ নেই। ব্যালটের চেয়ে ইভিএম প্রটেক্টেড।

তিনি বলেন, ব্যালট পেপারের ভোটে ভয়ভীতি দেখালে, ভোটার কেউ গেলো না। ব্যালট নিয়ে একাই জমা দিয়ে আসলো। এখানে ইভিএমে সে সুযোগ নেই। কিন্তু ইভিএমে যদি বলা হয়, ভোটারকে তাড়িয়ে দিলো, কিন্তু কে তাড়াবে? বাইরে পুলিশ আছে, তাড়ানো কি সম্ভব?

মো. আলমগীর বলেন, ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয়, ইভিএমে করলে তার চেয়ে অনেক বেশি খরচ হয়। কারণ অনেক টেকনোলজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং এক্সপেনসিভ। সেখানে নানা রকম প্রশিক্ষণও দিতে হয়। ইভিএমে টেক্যনিক্যাল সমস্যা হলে প্রিজাইডিং অফিসার ঠিক করতে পারেন না। ফলে সেখানে টেকনিক্যাল এক্সপার্টও থাকতে হয়। সে হিসেবে যে বাজেট আছে, সেটা করা হয়। টেকনিক্যাল ট্রেনিং, ট্যাবের মাধ্যমে যারা তথ্য পাঠাবেন, তাদের আলাদা ট্রেনিং করাতে হয়। তবে এবার সরকারি নিয়ম অনুসরণ করে ট্রেনিংয়ের যে বাজেট বা রেট, সেটাই করার চেষ্টা করেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএমের কাস্টমাইজেশনে ঢাকার বাইরের ভোটারদের তথ্য মেশিনে ইনপুট দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরাও মেশিনটি দেখেছি, এখানে সব ডাটাবেজ করা। কেউ ব্যক্তিগতভাবে ইনসার্ট করতে পারবে না। ডাটাবেজে মেইন সার্ভার থাকে। সেখান থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া কেউ ডিলিটও করতে পারবেন না। ইনপুটও করতে পারবেন না। ঢাকা সিটির ওয়ার্ডগুলো আলাদা করে ভাগ করা অছে, কে কোন জায়গার ভোটার। সেখান থেকে কমান্ড দিয়ে সিটির বাইরের কাউকে নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রার্থীদের যে সিডি দেওয়া আছে, তা চেক করা হয়েছে। সেখানে এডিট করার সুযোগ নেই। আর ইভিএমে কোনো ত্রুটি নেই। প্রোগ্রামটা সেভাবেই করা আছে। ইভিএমের কাস্টমাইজেশন যদি কেউ দেখতে চায় আমরা তা দেখাবো। কমিশন বলেছে, কেউ সন্দেহ করলে যারা প্রোগ্রামিং বোঝে তাদের প্রতিনিধি দিলে আমরা তাদের তা দেখাবো।

ভোটকেন্দ্রে গণমাধ্যমের উপস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, মোবাইল ক্যামেরা যার কাছে আছে, সেই একজন সাংবাদিক। এবার বলা আছে, সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হবে। সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র ও গাড়ির স্টিকার দেওয়া হবে। সাংবাদিকরা আচরণবিধি অনুযায়ী সবকিছু করতে পারবেন। তারা গোপন কক্ষ ছাড়া কেন্দ্রে অবাধে প্রবেশ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া যাবে না। পোলিং অফিসার, প্রার্থীদের এজেন্টসহ সবার বক্তব্যও নিতে পারবেন। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরো ভোটই প্রচার করা যাবে। কেন্দ্রের সমানে বসে সরাসরি সম্প্রচার করা যাবে। ভোট গণনার সময় দেখানো যাবে। এবার তো ব্যালট নেই, ফলে সঙ্গে সঙ্গেই গণনা হয়ে যাবে।

প্রার্থীরা সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালাতে পারবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, আচরণবিধিতে যেগুলো আছে, সেগুলো করা যাবে না। কিন্তু যেগুলো বলা নেই, আমরা তো সেক্ষেত্রে বলতে পারব না, এগুলো করতে পারবেন না। যদি এমন কিছু হয়- যেগুলো আচরণবিধিতে নেই, তখন যদি কমিশন মনে করে যে এগুলো করা ঠিক হবে না, সেক্ষেত্রে কমিশন সার্কুলার জারি করে দিতে পারে। তবে এটা এই দুই সিটিতে করা যাবে কি-না, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটির সব কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২০
ইইউডি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।