ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনী জাদুঘর: পাঁচ বছরেও অগ্রগতি নেই ইসির

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
নির্বাচনী জাদুঘর: পাঁচ বছরেও অগ্রগতি নেই ইসির নির্বাচন ভবন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে সম্পন্ন নির্বাচনে ব্যবহৃত উপকরণ ও যন্ত্রপাতি নিয়ে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমন একটি সিদ্ধান্ত ২০১৪ সালে নিয়েছিল কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। কিন্তু পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও সে সিদ্ধান্তের কোনো অগ্রগতি নেই।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচনসহ যেসব নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, তা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতেই একটি নির্বাচনী জাদুঘর প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সে সময়কার কমিশন। এতে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহৃত ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, নিরাপত্তা সিল, বস্তাসহ সব উপকরণ সংরক্ষণ করার কথা।

এছাড়া নির্বাচনে ব্যবহৃত টাইপ মেশিন, ভোট দেওয়ার সিল, ব্যালট পেপার ছাপানোর যন্ত্র ইত্যাদি প্রদর্শনীর জন্য রাখা হবে।  

এদিকে বিভিন্ন নির্বাচনে ইসির চ্যালেঞ্জ ও সাফল্য গাঁথাও থাকবে জাদুঘরে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে রাজধানীর আগারগাঁয়ের শের-ই-বাংলা নগরে নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। সে থেকে এ পর্যন্ত বর্তমান কমিশনসহ মোট ১২ টি কমিশনের অধীনে ১১টি সাধারণ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া ১১টি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, তিনটি গণভোট ও উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনেও ভোটগ্রহণ করেছে ইসি। আর এসব নির্বাচনের যাবতীয় উপকরণ ও যন্ত্রপাতি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে এ জাদুঘরে। এমনটিই ছিল পরিকল্পনা।

এজন্য তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয় সে সময়। কিন্তু সেই কমিটির কাজ আর এগোয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বাংলানিউজকে বলেন, পাশ্ববর্তী দেশ ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকাসহ পৃথিবীর অনেক দেশেই নির্বাচনী জাদুঘর রয়েছে। সেখানে নির্বাচনের যাবতীয় উপকরণ সাধারণ মানুষের জন্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদেশে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহৃত উপকরণগুলো কীভাবে কালক্রমে আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় নির্বাচন ব্যবস্থা কীভাবে বর্তমানের ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) যুগে প্রবেশ করেছে, সে ধারাবাহিকতার একটি স্থায়ী স্বাক্ষর জাদুঘরের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ জানতে পারবে। একই সঙ্গে সঠিক পরিচর্যা ও যত্নের অভাবে উপকরণগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাত থেকেও রক্ষা পাবে। কিন্তু কাজের কোনো অগ্রগতিই তো নেই।

এ বিষয়ে জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় গঠিত কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, এটি প্রথমে রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশন প্রাঙ্গণে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনেই সীমিত পরিসরে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শুরু করার পরিকল্পনা ছিল। পরবর্তীতে আগারগাঁওয়ে নিজস্ব নির্বাচন ভবনে পরিকল্পনা ছিল বড় করে গড়ার। রকিব কমিশন নির্বাচন ভবনের দু’তলায় জায়গাও নির্দিষ্ট করে দেন। কিন্তু সেখানে লাইব্রেরি আর ডে কেয়ার সেন্টার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম-সচিব এসএম আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনী জাদুঘর স্থাপনের পরিকল্পনা অনেক আগেই করা হয়েছিল। এজন্য নির্বাচন ভবনের দু’তলায় জায়গাও নির্দিষ্ট করা ছিল। কিন্তু নানা কারণে এখনো কাজ শুরু হয়নি। তবে এটি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
ইইউডি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।